আজকাল ওয়েবডেস্ক: নোট বলতে ১০, ২০, ৫০, ১০০, ২০০ আর ৫০০ টাকাই বোঝেন। এই তো কদিন আগের কথা হাজার টাকার নোট বাতিল করা হল। বদলে আনা হল দু'হাজার টাকার নোট। সেই নোটও আর চলল না বেশিদিন। কিন্তু জানেন ভারতীয় বাজারে সবচেয়ে বেশি কত টাকার নোট চালু ছিল? দশ হাজার টাকার নোট। একটা সময় এই নোট বাজারে ছিল। শুনতে অবাক লাগলেও এটাই সত্যি। তাও আবার কোন সময় বলুন তো? যখন বাজারে ২৫ পয়সা চালু ছিল।
সে বহুযুগ আগের কথা। তখন ৪০ -এর দশক। বাজারে মুদ্রা বলতে ছিল এক আনা, দু'আনা, পাঁচ সিকে প্রভৃতি। সেই সময়ই আনা হল দশ হাজার টাকার নোট। ১৯৩৮ সালে রিজার্ভ ব্যাংক অব ইন্ডিয়া এই বড় মূল্যের নোট বাজারে আনে। শুধু তাই নয় সে সময় চালু করা হয় পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের নোটও। কিন্তু কেন চালু করা হয়েছিল এই বড় অঙ্কের নোট? জানা গিয়েছে, ব্যবসা বাণিজ্য করার জন্য এই নোট আনা হয় বাজারে। ব্যবসায়ীদের লেনদেনের ক্ষেত্রে সুবিধে হয়েছিল এতে। সাধারণ মধ্যবিত্তদের যা ছুঁয়েও দেখার ক্ষমতা ছিল না। এর চাইতে বড় অঙ্কের নোট কখনই ভারতের বাজারে আসেনি। তবে দীর্ঘদিন দশ হাজার টাকার নোট বাজারে চালানো সম্ভব হয়নি। ১৯৪৬ সালের জানুয়ারি মাসে, ব্রিটিশ সরকার এই নোট বাতিল করার সিদ্ধান্ত নেয়। তখন দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ চলছে। সেসময় জিনিসপত্র মজুত করা এবং কালোবাজারি শুরু হয়ে গিয়েছিল মারাত্মকভাবে। সেটা আটকাতেই তৎকালীন ইংরেজ সরকার বাজার থেকে এই বড় মূল্যের নোট তুলে নেয়।
 
 পরবর্তীতে দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৫৪ সালে আবার ফিরে আসে দশ হাজার টাকা মূল্যের নোট এবং পাঁচ হাজার টাকা মূল্যের নোট। কিন্তু তখনও সেই নোট ব্যবসায়ীরাই কেবল ব্যবহার করতেন। তাই বিপুল অর্থের অবৈধ ব্যবহার রুখতেই এই নোট আবার বাতিলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ১৯৭৮ সালে মোরারজি দেশাই ছিলেন ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী। তিনি এই নোট বন্দির সিদ্ধান্ত নেন। সে বছরের ৩১ মার্চ থেকে উঠে গেল এই মোটা অঙ্কের টাকা। সে সময় বাজারে মোট চলা অঙ্কের মধ্যে মাত্র দুই শতাংশেরও কম ছিল এই বড় মূল্যের নোট। তাই বাজার থেকে তুলে নিলেও কোনও সমস্যা দেখা দেয়নি দেশের অর্থনীতিতে।
