আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিহারের যাদব পরিবারের কলহ এখন চর্চায়। রাজনীতি-পরিবার ত্যাগ, বাড়ি ছেড়েছেন লালু-কন্যা রোহিণী আচার্য। অন্যান্য তিন মেয়েও বাড়িতে নেই। রোহিণীর নিশানায় তেজস্বী। অভিযোগের তির তেজস্বীর দুই ঘনিষ্ঠ আরজেডি সাসংদ সঞ্জয় যাদব ও নিজাম। দলের শোচনীয় অবস্থায় যাদব পরিবারের এই পরিস্থিতি আস্বস্তি ফেলেছে আরজেডি নেতৃত্বকে। তিতিবিরক্ত তাঁরা। এবার লালু ঘনিষ্ঠ আরজেডি সহ-সভাপতিই দলের প্রধানের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন।  

লালুর পরিবারের ঘটনা প্রবাহ দেখে আরজেডির সহ-সভাপতি এবং প্রাক্তন সাংসদ শিবানন্দ তিওয়ারি ক্ষুব্ধ। তিনি প্রশ্ন তোলেন যে, লালু যাদব কেন তাঁর মেয়ের সমর্থনে হস্তক্ষেপ করেননি? শিবানন্দ বলেন, "তিনি (লালু প্রসাদ যাদব) কি কিছু দেখতে পাচ্ছেন না? তাঁর মেয়ে বাপের বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছে, তিনি বলেছেন যে তাঁর দিকে একটি জুতা ছোঁড়া হয়েছিল, তারপর তিনি কাঁদতে কাঁদতে বাড়ি ছেড়ে চলে গিয়েছেন। একটি মেয়ে কাঁদতে কাঁদতে তাঁর বাবার বাড়ি ছেড়ে চলে গেল, এরপরও লালু যাদব এবং রাবড়ি দেবী সেখানে বসে বসে সব দেখছেন, সহ্য করছেন।"

আরজেডি-কে ব্যক্তিকেন্দ্রীয় দল বলেও সমালোচনা করেন শিবানন্দ তিওয়ারি। তাঁর সাফ কথা, "আমি এই দলের সহ-সভাপতি হয়েছি কারণ  তিনি (লালু প্রসাদ যাদব) আমাকে তা হতে বলেছিলেন। আমি কোনও পদ নিতে প্রস্তুত ছিলাম না। এ ধরণের ব্যক্তিকেন্দ্রীয় দলে সহ-সভাপতির ভূমিকা কী?" 

উল্লেখ্য, যাদব পরিবারের কহলেমুখ খুলেছেন লালু প্রসাদের বহিষ্কৃত বড়ছেলে তেজপ্রতাপ। তাঁর বোনের প্রতি ছোট ভাই তেজস্বীর 'অন্যায়' আচরণের পরিণতি অত্যন্ত ভয়াবহ হবে বলে সাবধান করে দিয়েছেন তেজ প্রতাপ।

শুক্রবার বিবারের ভোটে আরজেডির ভরাডুবি হয়েছে। শোচনীয় পরাজয়ের কারণ নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন লালু-কন্যা রোহিণী আচার্য। তাঁর অভিযোগ, সেই সময়ে তাঁকে গালিগালাজ, অপমান, এমনকি আক্রমণ পর্যন্ত করেছেন ভাই তেজস্বী যাদব ও তাঁর ঘনিষ্ঠ, আরজেডি সাংসদ সঞ্জয় যাদব। রোহিণীর দাবি, তাঁর দিকে "চটি তুলেও মারা হয়"!

নিজের অভিমান-ক্ষোভে উগরে সোশ্যাল মিডিয়া পোস্টে লালু-কন্যা লেখেন, "গতকাল এক মেয়ে, বোন, স্ত্রী আর মা-কে অপমান করা হয়েছে। ঘৃণ্য ভাষায় গালাগালি দেওয়া হয়েছে। আমার দিকে জুতো দিয়ে মারার ভঙ্গি করা হয়। আত্মসম্মান বা সত্যের সঙ্গে আপোস করিনি, তার দাম দিলাম। আমাকে হেয় করা হল।"

রোহিণী আচার্য আরও লেখেন, "কাঁদতে থাকা বাবা-মাকে রেখে যেতে হয়েছে। আমার ঘর, অধিকার, সম্মান সব কেড়ে অনাথ বানিয়ে দেওয়া হয়েছে।" নিজের পোস্টের শেষে রোহিণীর আক্ষেপ, "কোনও বাড়িতে যেন রোহিণীর মতো মেয়ে বা বোন না থাকে।"

এসবের আগে শনিবারই রাজনীতি ছেড়েছেন বলে ঘোষণা করেছিলেন রোহিণী। পরিবারের সঙ্গেও বিচ্ছিন্নতার কথা জানিয়েছিলেন। কড়া পদক্ষেপের জন্য দায়ী করেছিলেন ভাই তেজস্বী ও আরজেডি সাংসদ সঞ্জয় যাদবকে। নিশানা করেন তেজস্বী ঘনিষ্ঠ আরজেডি নেতা রামিজকেও।

বর্তমানে সিঙ্গাপুরে রয়েছে রোহিণী আচার্য। উল্লেখ্য, বাবা লালু প্রসাদকে মেয়ে রোহিণীই তাঁর একটি কিডনি দান করেছেন।