আজকাল ওয়েবডেস্ক: বাড়িতে ছিলেন না কেউ। মা বাইরে ব্যস্ত ছিলেন কাজে। সেই নির্জনতার সুযোগেই চরম পরিণতি হল এক বিশেষভাবে সক্ষম কিশোরীর। সে অন্ধ। মানসিক ভারসাম্যহীনও। আগে থেকেই জানত অভিযুক্তরা। ফাঁকা বাড়িতে ঢুকেই তাকে ধর্ষণ করে পালিয়ে যায়।
জানা গেছে, কিশোরী ছোট থেকেই মানসিক ভারসাম্যহীন। বিশেষভাবে সক্ষম বলে বাড়িতেই ঘরবন্দি থাকত। কিন্তু নির্যাতনের শিকার হয়েও পরিবারে কাউকে জানাতে পারেননি। কয়েক মাস পর, তার মা বিষয়টি টের পান। জানতে পারেন, অন্ধ, মানসিক ভারসাম্যহীন মেয়ে অন্তঃসত্ত্বা। লোকলজ্জার ভয়ে বিষয়টি তিনি লুকিয়ে রেখেছিলেন।
অবশেষে ফাঁস হল পাশবিক যৌন নির্যাতনের ঘটনাটি। বিশেষভাবে সক্ষম কিশোরী বর্তমানে ছ'মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এর পাশাপাশি জানা গেছে, সে গণধর্ষণের শিকার। বিষয়টি ঘিরে উচ্চ পর্যায়ের তদন্ত শুরু হয়েছে। অভিযুক্তদের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে হরিয়ানায়। বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, কার্নাল জেলায় গণধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে কয়েক মাস আগে। তবে তাদের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। দিন কয়েক আগে জেলার চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন উমেশ কুমার জানতে পারেন। তিনিই থানায় অভিযোগ দায়ের করেছেন। সেই অভিযোগের ভিত্তিতে চলছে তদন্ত।
চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন উমেশ কুমার জানিয়েছেন, গত রবিবার তিনি বিষয়টি জানতে পারেন। সেদিন নিজের গাড়ি চালিয়ে বাজারে যাচ্ছিলেন। হঠাৎ মাঝ রাস্তায় এক মানসিক ভারসাম্যহীন কিশোরীকে মাটি খেতে দেখেন। তার বয়স আনুমানিক ১৬ থেকে ১৭ বছরের মধ্যে। কিশোরীকে দেখেই অনুমান করতে পারেন, সে বিশেষভাবে সক্ষম। কিন্তু সে যে অন্ধ, তা বুঝতে পারেননি।

গাড়ি থেকে নেমেই কিশোরীকে উদ্ধার করতে ছুটে যান তিনি। কাছে পৌঁছে দেখেন, কিশোরী অন্তঃসত্ত্বা। সঙ্গে সঙ্গে তাকে পরিবারের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। তখনই নির্যাতিতা কিশোরীর মা জানান, কয়েক মাস আগে তাঁর মেয়ে গণধর্ষণের শিকার হয়। তিন থেকে চারজন যুবক মেয়েকে গণধর্ষণ করে। সেদিন বাড়িতে কেউ ছিল না। কাজে তিনিও বাইরে ছিলেন। ঘটনার কয়েক সপ্তাহ পর টের পান মেয়ে গণধর্ষণের শিকার।
বিষয়টি ঘিরে থানায় অভিযোগ করতে ভয় পাচ্ছিলেন তিনি। অত্যন্ত দরিদ্র বলে, আশঙ্কা নির্যাতনের আশঙ্কা করছিলেন। মেয়ের আরও সর্বনাশ হোক, তা চাননি। পাশাপাশি এলাকায় বিষয়টি নিয়ে চর্চা হোক, তাও চাননি নির্যাতিতার মা। তাই পুলিশে অভিযোগ জানাতে ভয় পাচ্ছিলেন।
এদিকে কিশোরীকে নিয়ে হাসপাতালে মেডিক্যাল টেস্ট করাতে নিয়ে যান চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটির চেয়ারপার্সন। পরীক্ষায় জানা যায়, কিশোরী ছ'মাসের অন্তঃসত্ত্বা। এক কাউন্সিলরের অধীনে কিশোরীকে বর্তমানে রাখ হয়েছে। হাসপাতালে চলছে তার চিকিৎসা। পরীক্ষার রিপোর্ট সহ থানায় অভিযোগ দায়ের করেন উমেশ কুমার। অভিযোগের ভিত্তিতে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। সন্দেহভাজন এক যুবককে তারা আটক করেছে। তাকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আর কে কে এই ঘটনায় জড়িত, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। ঘটনায় ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে জোরকদমে চলছে তল্লাশি অভিযান।
