আজকাল ওয়েবডেস্ক: উত্তরপ্রদেশের মরাদাবাদ শহরে পুলিশের অভিযানে এক চাঞ্চল্যকর ঘটনার উদ্ঘাটন হয়েছে। মজহোলার কাশীরাম নগর এলাকায় গৌশালার ছদ্মবেশে দীর্ঘদিন ধরে চলছিল এক ভয়ঙ্কর পতিতাবৃত্তির আসর। স্থানীয় এক মহিলা, পিঙ্কি নামের অভিযুক্ত, এই পুরো চক্র পরিচালনা করছিল। বৃহস্পতিবার পুলিশ অভিযানে তিন কিশোরীকে উদ্ধার করেছে, যাদের জোর করে পতিতাবৃত্তিতে নামানো হয়েছিল।

 

কীভাবে চলত চক্র?

 

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পিঙ্কি তার সহযোগী সচিনের মাধ্যমে মূলত রেলস্টেশনে ঘোরাঘুরি করা অসহায় বা পালিয়ে আসা মেয়েদের টার্গেট করত। প্রথমে কাজের নাম করে তাদের গৌশালায় নিয়ে যাওয়া হতো। দিনে গরুর দেখাশোনা বা গৃহকর্মে ব্যস্ত রাখা হতো। কিন্তু রাত নামলেই শুরু হতো অমানবিক নির্যাতন—একাধিক গ্রাহক এসে তাদের জোর কিরে যৌন কাজে বাধ্য করত।

 

উদ্ধার হওয়া মেয়েদের মধ্যে একজন, জয়া (আমরোহা জেলার বাসিন্দা), জানিয়েছেন যে তাকে এক বছরেরও বেশি সময় ধরে ঘরে আটকে রাখা হয়েছিল। বিহারের এক কিশোরী দুই মাস ধরে বন্দি অবস্থায় ছিল, আরেকজনকে তিন মাসের জন্য আটকে রাখা হয়।

 

তাদের জানানো হতো, পালানোর চেষ্টা করলে বা বাইরে খবর দিলে ভয়ানক নির্যাতন চালানো হবে। ভুক্তভোগীদের আর্তনাদ ঢাকতে পিঙ্কি উচ্চস্বরে গান চালাত। একে অপরের সঙ্গে কথা বলারও অনুমতি ছিল না।

 

একজন ভুক্তভোগী জানিয়েছেন, রান্নার সময় রুটি পুড়ে যাওয়ায় ক্ষিপ্ত হয়ে পিঙ্কি ও তার সঙ্গী বিজয় ঠাকুর তার হাতে তেল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেয়। এরপর তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়। সেই রাতেই সচিন, বিজয় ও আরও এক ব্যক্তি অভনীশ তাকে ধর্ষণ করে। অভনীশ প্রথমে তাকে জোর করে মদ খাইয়ে, তারপর যৌন নির্যাতন চালায়।

 

দিনে তাকে গৃহস্থালির কাজ করতে বাধ্য করা হতো, আর রাতে চলত ধারাবাহিক যৌন শোষণ।

 

এখন পর্যন্ত পিঙ্কি, সচিন, বিজয় এবং অভনীশ-সহ একাধিক অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। উদ্ধার হওয়া মেয়েদের বয়ান নথিভুক্ত করা হয়েছে। পুরো ঘটনার তদন্ত চলছে। পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ভুক্তভোগীদের চিকিৎসা ও পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা হবে।

 

এই ঘটনাটি গোটা এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি করেছে। স্থানীয়রা দাবি তুলেছেন, এমন অমানবিক অপরাধের সঙ্গে যুক্ত সকলকে কঠোর শাস্তি দেওয়া হোক।