আজকাল ওয়েবডেস্ক: রবিবার সকালবেলা মধ্যপ্রদেশে ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনা ঘটেছে। ঘটনাটি ঘটে দেওয়াস জেলার বাগলি তহসিলের মোখাপিপল্যা গ্রামের কাছে। ইন্দোর-বেতুল জাতীয় সড়কের এই সড়ক দুর্ঘটনায় ২ জন নিহত হন। খবর অনুযায়ী একটি প্রাইভেট গাড়ি কালিসিন্ধ নদীর উপর নির্মিত একটি কালভার্ট পার হওয়ার সময় নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে নীচে পড়ে গেলে এই দুর্ঘটনা ঘটে। ঘটনায় আরও ২ জন যাত্রী গুরুতর আহত হয়েছেন। বর্তমানে ইন্দোরে চিকিৎসা চলছে তাঁদের। খবর পেয়ে দ্রুত পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছয়৷
কমলাপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা উপেন্দ্র নাহার জানিয়েছেন, দুর্ঘটনাটি ঘটে গাড়ি যখন কালভার্ট পার হচ্ছিল তখন। আচমকা বিপরীত দিক থেকে একটি ভারী ট্রাক আসতে দেখে চালক হঠাৎ ব্রেক দিতে যান। মুহুর্তের মধ্যে চালক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। এরপর গাড়িটি সরাসরি নদীতে গিয়ে পড়ে যায়।
স্থানীয় এবং পুলিশ সূত্রে জানা গিয়েছে, নদীতে পড়ার পর গাড়ির দরজাগুলি ভিতর থেকে লক হয়ে যায়। জলের চাপে সেগুলি আপনা থেকেই আটকে যায়। ফলে তাৎক্ষণিকভাবে যাত্রীদের বের করে আনা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় বাসিন্দারা প্রথমে গাড়ির জানালা ভেঙে ভিতরে আটকে পড়া ৪ জনকে বের করে আনেন। পরে তাঁরা পুলিশকে খবর দেন৷ পুলিশ এসে উদ্ধার কাজ শুরু করে।
নদীতে ডুবে থাকা গাড়িটি দড়ি দিয়ে টেনে তোলার সময় পুরো ঘটনার একটি ভিডিও তোলা হয়৷ এই ভিডিও সম্প্রতি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। সেখানে দেখা যাচ্ছে, কীভাবে সাধারণ মানুষ ঝুঁকি নিয়ে জীবন বাঁচাতে তৎপর হয়ে উঠেছেন।
খবর অনুযায়ী, উদ্ধার করা ৪ জনকেই আশঙ্কাজনক অবস্থায় বাগলি সরকারি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানান, তাঁদের মধ্যে ২ জন আগেই প্রাণ হারিয়েছেন। আহত অপর দুই যাত্রীর অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তৎক্ষণাৎ ইন্দোরের একটি বড় হাসপাতালে রেফার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, মৃত ও আহত ব্যক্তিদের পরিচয় এখনও শনাক্ত করা যায়নি। বর্তমানে তা নিয়ে পর্যবেক্ষণ করছে পুলিশ। তবে সকলেই মধ্যপ্রদেশেরই বাসিন্দা বলে প্রাথমিকভাবে অনুমান করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার সময় গাড়িটি কোথা থেকে কোথায় যাচ্ছিল এবং চালক ছিলেন কিনা তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, ইন্দোর-বেতুল হাইওয়ের এই অংশে বহুদিন ধরে নিরাপত্তা ব্যবস্থা অত্যন্ত দুর্বল। কালভার্টটি সংকীর্ণ এবং তার পাশে কোনো গার্ড রেল বা সুরক্ষা দেয়াল নেই। এর ফলে প্রায়ই এখানে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটে থাকে। একাধিকবার ব্যবস্থার দাবি করা হলেও যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি বলে স্থানীয় বাসিন্দারা অভিযোগ করেছেন৷
কমলাপুর থানার পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনা সম্পর্কিত একটি এফআইআর নথিভুক্ত হয়েছে। ট্রাকচালকসহ সংশ্লিষ্ট প্রত্যক্ষদর্শীদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। এছাড়াও ঘটনার প্রকৃত কারণ জানতে গাড়ির মেকানিক্যাল কন্ডিশন এবং রাস্তার সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হবে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ দুর্ঘটনাটি স্থানীয়ভাবে গভীর শোকের পরিবেশ তৈরি করেছে। ঘটনার জেরে সমস্ত দিক পর্যালোচনা করা হবে আশ্বাস দিয়েছে পুলিশ৷
