আজকাল ওয়েবডেস্ক: গত এক দশকে নিঃশব্দেই অনেকটা এগিয়েছে ভারতের কর্পোরেট বন্ড বাজার। ২০১৫ অর্থবছরে যেখানে মোট ইস্যু ছিল ৪.৪ ট্রিলিয়ন, ২০২৫ অর্থবছরে তা বেড়ে দাঁড়াবে ১১.২ ট্রিলিয়নে। কিন্তু এই চিত্তাকর্ষক বৃদ্ধির আড়ালে রয়েছে গুরুতর কিছু কাঠামোগত সমস্যা—অতিরিক্ত নির্ভরতা রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থার ওপর, প্রকৃত ঝুঁকি নির্ধারণে ব্যর্থতা, এবং অপ্রকাশিত রাজকোষীয় দায়।

বর্তমানে বন্ডের মাধ্যমে আসা ঋণ ভারতের মোট বাণিজ্যিক ঋণের প্রায় এক-চতুর্থাংশ। অথচ বাজারের ৮০% বন্ড ইস্যু হয় শুধু ‘AA’ বা তার ওপরে রেটিংপ্রাপ্ত সংস্থাদের দ্বারা। এর মধ্যে সবচেয়ে বড় অংশীদার হল কেন্দ্রীয় সরকার নিয়ন্ত্রিত CPSU (Central Public Sector Undertakings)-রা, যারা গত পাঁচ বছরে প্রতি বছর মোট কর্পোরেট বন্ড ইস্যুর এক-চতুর্থাংশ থেকে এক-তৃতীয়াংশ পর্যন্ত জোগান দিয়েছে।

এই CPSU-র বন্ডগুলি সাধারণত দীর্ঘমেয়াদি হলেও, তারা তুলনামূলকভাবে কম সুদে টাকা তুলে নিচ্ছে। এর প্রধান কারণ—সরকারি মালিকানার আড়ালে বাজার ধরে নিচ্ছে, ভবিষ্যতে সমস্যা হলেও সরকারই দায় নেবে। অথচ এই বন্ডে কোনও সরাসরি সরকারি গ্যারান্টি নেই। বিশেষজ্ঞদের মতে, এর ফলে বেসরকারি সংস্থাগুলি প্রতিযোগিতায় পিছিয়ে পড়ছে, বাজারে ঝুঁকির দাম ঠিকভাবে নির্ধারিত হচ্ছে না এবং একটি ভারসাম্যহীন বাজার তৈরি হচ্ছে।

সমাধানে সরকার ও নিয়ন্ত্রক সংস্থাগুলির সামনে রয়েছে কিছু গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ: রেটিং এজেন্সিগুলিকে পৃথকভাবে ‘স্ট্যান্ডঅ্যালোন’ ও ‘সরকারি সহায়তা নির্ভর’ রেটিং প্রকাশ করতে বাধ্য করা, CPSU-দের প্রতি সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করা, এবং বেসরকারি সংস্থার জন্য ঝুঁকি ভাগ করে নেওয়ার মত নীতি প্রণয়ন। ভারতের আর্থিক ভবিষ্যতের জন্য একটি বিস্তৃত, সুষম ও স্বচ্ছ বন্ড বাজার তৈরি করা এখন সময়ের দাবি।