আজকাল ওয়েবডেস্ক: মধ্যপ্রদেশের শমগড় শহরে চরম চাঞ্চল্য। এক ১৬ বছরের স্কুলছাত্রীকে ব্ল্যাকমেল করে তার অশ্লীল ভিডিও ছড়িয়ে দেওয়ার অভিযোগ। এই ঘটনা সামনে আসতেই গোটা এলাকায় ক্ষোভের আগুন জ্বলছে। শুধু তাই নয় ঘটনার জেরে পরিস্থিতি এতটাই অগ্নিগর্ভ হয়ে ওঠে যে শমগড়ে কার্যত সম্পূর্ণ শাটডাউন জারি করতে বাধ্য হয় প্রশাসন। যে কোনও ধরনের অশান্তি রুখতে শহরের মোড়ে মোড়ে নামানো হয়েছে বিশাল পুলিশ বাহিনী। এমনকী পাশের এলাকা থেকেও পুলিশকর্মীদের আনা হয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্ত দুই যুবক রিহান এবং বাবু ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছে।
অভিযোগ, অভিযুক্ত রিহান ও বাবু গত ৬ নভেম্বর কিশোরীর বাড়িতে ঢুকেছিল। তখন তার পরিবারের সদস্যরা কেউ সেখানে ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, রিহান ছুরি দেখিয়ে ওই কিশোরীকে ভয় দেখায়। এরপর তার মায়ের ফোন ব্যবহার করে জোর করে অশ্লীল ভিডিও রেকর্ড করে নিজের ডিভাইসে নিয়ে নেয়।
এরপর শুরু হয় টাকা আদায়ের চেষ্টা। রিহান মেয়েটির পরিবারের কাছে ৫ লক্ষ টাকা দাবি করে, টাকা না দিলে ভিডিওটি অনলাইনে ফাঁস করে দেওয়ার হুমকি দেয়। ভয়ে পরিবার ২ লক্ষ টাকা দিলেও বাকি টাকা দিতে পারেনি। এরপরই অভিযুক্ত রিহান নাকি বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় ভিডিওটি ভাইরাল করে দেয়।
ভিডিওটি সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়তেই চরম উত্তেজনা ছড়ায়। বৃহস্পতিবার রাতেই শত শত মানুষ শমগড় থানায় জড়ো হন। অভিযুক্তদের অবিলম্বে গ্রেপ্তারের দাবি জানান। শুক্রবার ক্ষোভ আরও বাড়ে। বিভিন্ন হিন্দু সংগঠন এই বিক্ষোভে যোগ দিলে শমগড়ে দোকানপাট, যান চলাচল ও জনজীবন সম্পূর্ণ স্তব্ধ হয়ে যায়।
জনগণের এই তীব্র ক্ষোভ দেখে প্রশাসনও দ্রুত নড়েচড়ে বসে। পুরসভা অভিযুক্ত রিহান এবং বাবুর বাড়ির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া শুরু করে দেয়। প্রথমে তাদের জলের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এমনকী বাড়ি ভাঙার প্রক্রিয়াও শুরু হয়েছে। স্থানীয়রা অভিযুক্তদের বাড়ির দেওয়াল ভেঙে দেওয়া এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছেন।
পুলিশ জানিয়েছে, এই ঘটনায় ব্ল্যাকমেল, ভয় দেখানো-সহ ভারতীয় ন্যায় সংবিধানের (বি এন এস) একাধিক ধারা, পকসো আইন এবং আইটি অ্যাক্টে মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশের এক কর্তা বলেন, "মেয়েটির অশ্লীল ভিডিও তৈরি করে টাকা চাওয়া হয়েছিল। টাকা না দেওয়ায় তা ভাইরাল করা হয়। আমরা সঙ্গে সঙ্গেই গুরুতর মামলা রুজু করে একাধিক দল তৈরি করি। মাত্র ১২ ঘণ্টার মধ্যেই দুই অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। মুক্তিপণের বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে।"
গ্রেপ্তার হওয়া সত্ত্বেও শমগড়ে এখনও থমথমে পরিবেশ। বাসিন্দারা অভিযুক্তদের কঠোরতম এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান। বর্তমানে বহু এলাকায় দোকানপাট বন্ধ রয়েছে। শান্তি বজায় রাখতে পুলিশের নজরদারি বহুগুণ বাড়ানো হয়েছে।
