আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রেমের সম্পর্কে বয়স যেন সংখ্যা মাত্র। বয়সে ঢের বড় হলেও, দিদিমণির প্রেমে হাবুডুবু খেত পড়ুয়া। তার সত্ত্বেও পুরনো ক্ষোভ পুষে রেখেছিল। আর ঠিক দুই বছর পর রাগের বশে চরম প্রতিশোধ নিল ওই পড়ুয়া। কিশোরের কীর্তি দেখে হকচকিয়ে গেছে পুলিশ। সহপাঠীদের চক্ষু চড়কগাছ।
জানা গেছে, দিদিমণির বাড়িতে আচমকা ঢুকে পড়ে ওই কিশোর। এরপর কোনও সাড়া শব্দ না করেই, হঠাৎ শিক্ষিকার মুখে পেট্রোল ছুড়ে মারে। সঙ্গে সঙ্গে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। এরপরই পালিয়ে যায় সে। কিন্তু গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় ওই শিক্ষিকাকে। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের নরসিংহপুর জেলায়। পুলিশ আধিকারিক মনোজ গুপ্ত জানিয়েছেন, ১৮ বছর বয়সি কিশোরের নাম সূর্যাংশু কোচার। সে উৎকৃষ্ট বিদ্যালয়ের ছাত্র। গত সোমবার ২৬ বছর বয়সি এক শিক্ষিকার উপর হামলা করে সে। শিক্ষিকার গায়ে পেট্রোল ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেয়। দগ্ধ অবস্থায় শিক্ষিকাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। এই ঘটনার পরেই ওই পড়ুয়া পালিয়ে যায়।
আরও পড়ুন: 'ওয়েব সিরিজ দেখে শিখেছি', স্বামীকে খুনের পর সহজ সরল ভঙ্গিতে বলল যুবতী, কারণ শুনে মাথায় হাত পুলিশের
তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, ২৬ বছর বয়সি তরুণী ওই পড়ুয়ার আগের স্কুলের শিক্ষিকা। ব্যক্তিগত ক্ষোভ উগড়ে দিতেই শিক্ষিকার উপরে হামলা করে। গত দুই বছর আগে শিক্ষিকার সঙ্গে পরিচয় হয় কিশোরের। সেই সময় যে স্কুলের সে ছাত্র ছিল, সেই স্কুলেই গেস্ট টিচার হিসেবে কাজ করেন তরুণী। অল্প কয়েকদিনের মধ্যেই শিক্ষিকার প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করে কিশোরী।
শিক্ষিকাকে সে ভালবাসত। কিন্তু দুই বছর আগে শিক্ষিকাকে নিয়েই অশ্লীল মন্তব্য করেছিল। জানা গেছে, স্কুলে স্বাধীনতা দিবস উপলক্ষে অনুষ্ঠান চলছিল। সেই অনুষ্ঠানেই শাড়ি পরে এসেছিলেন ওই তরুণী। শিক্ষিকাকে মনে মনে ভালবাসলেও, বন্ধুদের সামনেই আপত্তিকর মন্তব্য করে। সেটি জানতে পারেন তরুণী।
এরপরই ছাত্রের বিরুদ্ধে অভিযোগ দায়ের করেন শিক্ষিকা। সেই কুমন্তব্যের জেরে স্কুল থেকে বহিষ্কার করা হয় পড়ুয়াকে। দুই বছর আগের ওই ঘটনার রেশ তবুও থেকে যায়। যা ভোলেনি ওই ছাত্র। বহিষ্কৃত হয়ে অন্য স্কুলে ভর্তি হলেও, শিক্ষিকার প্রতি টান থেকেই গিয়েছিল।পাশাপাশি জমেছিল রাগ। সেই রাগেই চরম প্রতিশোধ নিল সে।
গত সোমবার সন্ধ্যায় আচমকা শিক্ষিকার বাড়িতে ঢুকে পড়ে ওই পড়ুয়া। কথা বলার আগেই শিক্ষিকার মুখে পেট্রোল ছুড়ে মারে। এরপর আগুন জ্বালিয়ে দেয়। শিক্ষিকার চিৎকার শুনে বাড়ির সদস্যরা ছুটে আসেন। তড়িঘড়ি তাঁকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, শিক্ষিকা গুরুতর আহত। কিন্তু প্রাণহানির আশঙ্কা নেই। বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ঘটনার অভিযোগ পেয়েই ১৮ বছরের কিশোরকে কল্যাণপুর গ্রাম থেকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। তার বিরুদ্ধে ভারতীয় ন্যায় সংহিতার একাধিক ধারায় মামলা রুজু করা হয়েছে। পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ধৃত পড়ুয়া স্বীকার করেছে, সে শিক্ষিকাকে ভালবাসত। কিন্তু কখনও তা নিয়ে শিক্ষিকাকে উত্যক্ত করেনি। স্কুল থেকে বহিষ্কারের রাগে, এমন প্রতিশোধ সে নিয়েছে।
