গান্ধীদের সঙ্গে বসে কর্ণাটক-কুরসির সিদ্ধান্ত নেবেন খাড়গে, তার মাঝেই শিবকুমারকে মেসেজ রাহুলের!

ছবি: সংগৃহীত।

আজকাল ওয়েবডেস্ক: কুরসি ছাড়ছেন সিদ্দারামাইয়া? তুমুল জল্পনার মাঝে মঙ্গলবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন, "হাইকমান্ডের সতর্কতার পরও বিধায়করা দিল্লি গিয়েছেন, এটা ওনাদের স্বাধীনতা। দেখা যাক তাঁদের কী মতামত। শেষ পর্যন্ত, সিদ্ধান্ত নেবে হাইকমান্ড।" মন্ত্রিসভায় রদবদলের বিষয়ে, সিদ্দারামাইা বলেন যে, দলীয় নেতৃত্ব সংকেত দিলেই সরকার "এগিয়ে যাবে।" সিদ্দারামাইয়া সাফ জানিয়েছেন যে, রাহুল গান্ধীর সঙ্গে দেখা করার কোনও পরিকল্পনা তাঁর নেই।


এসবের মাঝেই, বুধবার সামনে এসেছে মল্লিকার্জুন খাড়গের মন্তব্য। কংগ্রেস সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে বুধবার বলেছেন, সোনিয়া গান্ধী এবং রাহুল গান্ধীর সঙ্গে শীর্ষ পর্যায়ে আলোচনার পরে এই সমস্যাটির সমাধান করা হবে। খাড়গে এদিন বলেন, 'কেবল সেখানকার লোকেরাই বলতে পারবেন যে সেখানে সরকার কী করছে। তবে আমি বলতে চাই যে আমরা এই ধরনের সমস্যাগুলি সমাধান করব। হাইকমান্ডের লোকেরা- রাহুল গান্ধী, সোনিয়া গান্ধী এবং আমি, একসঙ্গে বসে এই বিষয়ে আলোচনা করব। আমরা প্রয়োজনীয় মধ্যস্থতা করব।'

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমে খাড়গের এই মন্তব্যের মাঝেই সামনে এসেছে আরও এক তথ্য। সূত্রের খবর, কংগ্রেস হাইকমান্ড ১ ডিসেম্বর সংসদ অধিবেশনের আগে মুখ্যমন্ত্রী পরিবর্তনের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবে বলে জানা গিয়েছে। অন্যদিকে, এক সপ্তাহ ধরে যোগাযোগের চেষ্টা করার পর উপ-মুখ্যমন্ত্রী ডি কে শিবকুমারকে মেসেজে উত্তর দিয়েছেন রাহুল গান্ধী। 

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে তথ্য, দলীয় সূত্রের খবর, শিবকুমার অভ্যন্তরীণ ঘটনাবলী নিয়ে রাহুল গান্ধীর সঙ্গে কথা বলার চেষ্টা করছিলেন। রাহুল গান্ধী একটি ছোট হোয়াটসঅ্যাপ বার্তার মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছেন। সূত্রের খবর, রাহুল, শিবকুমারকে জানিয়েছেন,  "দয়া করে অপেক্ষা করুন, আমি আপনাকে ফোন করব।"

 

শিবকুমার শিবিরের সূত্র অনুসারে, মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া এবং উপমুখ্যমন্ত্রী শিবকুমার- কংগ্রেস প্রধান মল্লিকার্জুন খাড়গে, কেসি বেণুগোপাল, রণদীপ সুরজেওয়ালা এবং শিবকুমারের ভাই সাংসদ ডি কে সুরেশের সঙ্গে দীর্ঘ আলোচনার পর ২০২৩ সালের ১৮ মে ক্ষমতা ভাগাভাগির ফর্মুলা চূড়ান্ত করেছিলেন। 

 

আলোচনার শুরুতে শিবকুমার প্রথম আড়াই বছর মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে বসার জন্য অনুরোধ করেছিলেন। কিন্তু বয়েসর কারণ দেখিয়ে সিদ্দারামাইয়া সেই আবেদন প্রত্যাখ্যান করেন। এরপরই রফাসূত্র তৈরি হয়। ঠিক হয়, সিদ্দারামাইয়া প্রথম আড়াই বছর জন্য কর্নাচকের মুখ্যমন্ত্রীর কুরসিতে বসবেন। বাকি অংশের জন্য দায়িত্ব নেবেন শিবকুমার।

বৈঠকে শিবকুমারের ভাই সুরেশ দাবি করেছিলেন যে, এই রফাসূত্র জনসমক্ষে প্রকাশ করা হোক। কিন্তু কংগ্রেস হাইকমান্ড তা হতে দেয়নি। হাইকমান্ডের যুক্তি ছিল, রফাসূত্র প্রকাশ করা হলে তা সরকারকে অস্থির করে তুলতে পারে। সেই সময়, সিদ্দারামাইয়া- সুরেশের দিকে ফিরে বলেছিলেন, "সুরেশ, আমি সিদ্দারামাইয়া। আমি আমার প্রতিশ্রুতিতে অটল থাকব। আড়াই বছর পূর্ণ করার এক সপ্তাহ আগে, আমি পদত্যাগ করব।"

 

শিবকুমার শিবিরের প্রতি সহানুভূতিশীল দলীয় নেতারা যুক্তি দেন যে, নৈতিকতার বিচারে কংগ্রেস তাঁকে বছরের পর বছর ধরে যেসব পদ দিয়েছে তাতে সন্তুষ্ট থাকা উচিত তাঁর। সিদ্দারামাইয়া প্রায় পাঁচ বছর ধরে বিরোধী দলের নেতা, সাত বছরেরও বেশি সময় ধরে মুখ্যমন্ত্রী এবং পরে দেড় বছর ধরে সমন্বয় কমিটির সভাপতি দায়িত্ব পালন করেছেন।

তাঁরা জোর দিয়ে বলেন যে, শিবকুমার যদি শেষ পর্যন্ত দায়িত্ব গ্রহণ করেন, তাহলে সিদ্দারামাইয়াকে অবশ্যই দলকে "প্রতিদান" দিতে হবে।