আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেঙ্গালুরুতে পদপিষ্টের ঘটনায় একের পর এক বড় সিদ্ধান্ত নিচ্ছে কর্ণাটক সরকার। বৃহস্পতিবার বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার সহ একাধিক উচ্চপদস্থ পুলিশ আধিকারিককে সাসপেন্ড করার পর, শুক্রবার কর্ণাটকের মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়ার রাজনৈতিক সচিব কে-গোবিন্দরাজকে বরখাস্ত করা হয়েছে। একইসঙ্গে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে রাজ্য গোয়েন্দা বিভাগের প্রধান হেমন্ত নিম্বলকারকেও। সূত্রের খবর, বুধবার সকালে মুখ্যমন্ত্রীর বাসভবনে এক উচ্চপর্যায়ের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন গোবিন্দরাজ। সেই বৈঠকের সময় বেঙ্গালুরুতে আরসিবির জয় উদযাপন নিয়ে আলোচনা হয়।
পুলিশ কমিশনার তখন অনুষ্ঠানের অনুমোদন দিতে অস্বীকার করেন এবং জানান বিজয় মিছিলের অনুমতি দেওয়া সম্ভব নয়। কিন্তু অভিযোগ উঠছে, সেই পরিস্থিতিতেও গোবিন্দরাজ জোর দিয়ে রাজ্য বিধানসভার সামনে এবং চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামে দুটি অনুষ্ঠান আয়োজনের অনুমতি দেওয়ার জন্য পুলিশ কমিশনারকে চাপ দেন। শেষপর্যন্ত তাঁর চাপে পড়ে পুলিশ কমিশনার ওই দুটি অনুষ্ঠানের ছাড়পত্র দেন। আর সেই অনুষ্ঠানেই ঘটে যায় মর্মান্তিক পদপিষ্টের ঘটনা। উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী সিদ্দারামাইয়া ঘোষণা করেন, বেঙ্গালুরু পুলিশ কমিশনার বি দয়ানন্দ, সহকারী পুলিশ কমিশনার সি বলকৃষ্ণ, ডেপুটি কমিশনার অফ পুলিশ (সেন্ট্রাল ডিভিশন) শেখর এইচ তেক্কান্নাভার, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার বিকাশ কুমার বিকাশ এবং কাব্বন পার্ক থানার সার্কেল ইনস্পেক্টর এ কে গিরীশ— সকলকেই সাসপেন্ড করা হয়েছে।
পদপিষ্টের ঘটনায় ইতিমধ্যেই মৃত্যু হয়েছে ১১ জনের। আহতও হয়েছেন বহু মানুষ। আরসিবি কর্তৃপক্ষের তরফে ইতিমধ্যেই ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা করা হয়েছে। তবে তার মধ্যেও সাধারণ মানুষের ক্ষোভও চরমে। প্রশাসনিক গাফিলতির অভিযোগে মুখ্যমন্ত্রীর অফিস এবং পুলিশ বিভাগের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। ঘটনার পূর্ণাঙ্গ তদন্ত শুরু হয়েছে বলে জানানো হয়েছে রাজ্য সরকারের তরফে। চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের বাইরে পদপিষ্ট হয়ে ১১ জনের মৃত্যুর ঘটনায় এবার আরসিবির মার্কেটিং বিভাগের প্রধান নিখিল সোসালেকে গ্রেপ্তার করল পুলিশ।
এমনকি চিন্নাস্বামী স্টেডিয়ামের অনুষ্ঠানের দায়িত্বে থাকা ‘ইভেন্ট ফার্মের’ আধিকারিকদেরও গ্রেপ্তার করা হয়েছে। বেঙ্গালুরু থেকে মুম্বই যাওয়ার পথে গ্রেপ্তার হন নিখিল। বেঙ্গালুরু বিমানবন্দর থেকে শুক্রবার সকালে তাঁকে পাকড়াও করে পুলিশ। এছাড়া, গত ৪ জুন আরসিবির বিজয়োৎসব আয়োজনের দায়িত্বে থাকা ‘ডিএনএ এন্টারটেনমেন্ট নেটওয়ার্কস প্রাইভেট লিমিটেডের’ তিন জন আধিকারিককেও গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে খবর। চিন্নাস্বামীতে পদপিষ্টের ঘটনায় ইতিমধ্যেই এফআইআর দায়ের করে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ। আরসিবি ছাড়াও কর্নাটকের স্টেট ক্রিকেট অ্যাসোসিয়েশনের (কেএসসিএ) বিরুদ্ধেও মামলা দায়ের করা হয়েছে।
