আজকাল ওয়েবডেস্ক: পহেলগাঁও হামলার জেরে ভারতের কঠোর পদক্ষেপের পর পাকিস্তানিদের ভিসা বাতিলের নানা ঘটনা সামনে আসছে। যেমন, যমজ শহর ইসলামাবাদ-রাওয়ালপিন্ডির একজন ভারতে ১৭ বছর ধরে ছিলেন। তিনি ভোটও দিয়েছেন। এবার জম্মুর এক সিআরপিএফ জওয়ানের স্ত্রীর খোঁজ মিলল, যিনি আসলে পাকিস্তানি!

বহু বছর ধরে জম্মু-কাশ্মীর উত্তেজনাপ্রবণ। ফলে নিরাপত্তায় সেখানে মোতায়েন রয়েছে আধা সামরিক বাহিনী। যার মধ্যে অন্যতম সিআরপিএফ। এহেন  গুরুত্বপূর্ণ উপত্যকায় মোতায়েন জওয়ানের অনলাইনে পাকিস্তানি মহিলার সঙ্গে বিয়ের ঘটনা শোরগোল ফেলেছে। 

পাক পাঞ্জাবের বাসিন্দা মিনাল খানের সঙ্গে ভারতের সিআরপিএফ জওয়ান মুনির খানের পরিচয় অনলাইনে। তারপর থেকে ক্রমশ তাঁদের প্রেম। ২০২৪ সালের মে মাসে মিনাল ও মুনির অনলাইনেই বিয়ে করেন। ভিসার জন্য ৯ বছর প্রতীক্ষার পর ২০২৫ সালের মার্চ মাসে মিনাল ভারতে আসেন। তাঁর ভিসার মেয়াদ শেষ হয়ে যায় গত ২২ মার্চ। তারপরেও তিনি এ দেশে থেকে গিয়েছিলেন। এমনটা কীভাবে সম্ভব হল? তা জানা যায়নি।

তবে, গত ২২ এপ্রিল পহেলগাঁওতে ভয়াবহ জঙ্গি হামলা এবং তাতে ২৬ জনের প্রাণহানির পর ওই সিআরপিএফ জওয়ানের স্ত্রী মিনালকে ভারতীয় প্রশাসনের তরফে এ দেশে ছাড়ার নোটিশ দেওয়া হয়।

ভারত সরকার নির্দেশিকায় জানিয়েছিল যে, ভিসা নিয়ে আসা সব পাকিস্তানিকে ২৯ এপ্রিলের মধ্যে ভারত ছাড়তে হবে। স্বামী ও নিকট আত্মীয়দের বিদায় জানিয়ে সীমান্তে আটারিগামী বাসে চড়ে বসেন। 

?ref_src=twsrc%5Etfw">April 29, 2025

এরপরই ঘটনায় নয়া মোড়। শেষ মুহূর্তে মিনালের আইনজীবী অঙ্কুর শর্মার তৎপরতায় আদালতের নির্দেশে এযাত্রা আর পাকিস্তান ফিরতে হয়নি মিনালকে। গ্রেটার কাশ্মীর নামে ইংরেজি সংবাদ মাধ্যমের খবর, মিনালের আইনজীবী অঙ্কুশ শর্মা স্থানীয় বিজেপির মুখপাত্র। মিনালের পাকিস্তানে ফেরা ঠেকাতে আইনজীবী অঙ্কুশ শর্মা আদালত থেকে স্থগিতাদেশ বের করেন।

আসলে মিনাল এর আগে, ভারত সরকারের কাছে পরিবারের সঙ্গে থাকতে চেয়ে অনুমতির আবেদন করেছিলেন। মিনাল বলেছেন, "পরিবারের সঙ্গে থাকার জন্য আমাকে অনুমতি দেওয়া উচিত। হামলায় নিরীহদের বর্বর হত্যাকাণ্ডের নিন্দা জানাই। অপরাধীদের কঠোর শাস্তি দেওয়া উচিত।"

গ্রেটার কাশ্মীরকে মিনাল বলেছেন, "আমরা সমস্ত নিয়ম মেনে চলেছি। মার্চ মাসে আমার স্বল্পমেয়াদী ভিসার মেয়াদ শেষ হওয়ার পর আমি দীর্ঘমেয়াদী ভিসার জন্য আবেদন করেছিলাম। আমাদের বলা হয়েছিল যে এটি পরিষ্কার হয়ে যাবে। কিন্তু হামলার পর, আমাকে আমার স্বামী থেকে আলাদা করা হচ্ছে। আমার মতো, বেশ কয়েকজন সন্তানকে তাদের মা বা বাবার থেকে আলাদা করা হচ্ছে। এটি অমানবিক। আমরা প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির কাছে আমাদের ন্যায়বিচারেরক প্রার্থনা করছি।" 

পহেলগাঁও হামলার পর ভারতে বসবাসকারী পাক নাগরিকদের ৩০ এপ্রিলের মধ্যে পাকিস্তান চলে যেতে বলা হয়েছিল। মানবিকতার খাতিরে সেই ডেডলাইন বাড়ানো হল। শিথিল করা হল নির্দেশিকা। নয়া নির্দেশিকা না আসা পর্যন্ত আটারি সীমান্ত দিয়ে পাকিস্তানে যাওয়ার অনুমতি মিলবে সে দেশের নাগরিকদের। 

তবে মিনাল খানের সিআরপিএফ-কে বিয়ে নিয়ে নেটমাদ্যমে উত্তাপ ছড়িয়েছে। মানুষ প্রশ্ন তোলেন, কীভাবে একজন সিআরপিএফ জওয়ানকে একজন পাকিস্তানি মহিলার সঙ্গে বিয়ে করার অনুমতি দেওয়া হল? কেউ কেউ অভিযোগ করেন যে এটি "বিবাহ-ফাঁদ"।