আজকাল ওয়েবডেস্ক: রাজস্থানের নীল ড্রাম রহস্যের কিনারা পুলিশের। ওই নীল ড্রাম থেকে ৩৫ বছর বয়সি যে যুবকের পচাগলা দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ, তাঁকে খুন করার অভিযোগ উঠল স্ত্রীর বিরুদ্ধে। প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, যুবককে খুন করেছে তাঁর স্ত্রী সুনীতা। এই খুনের তাকে সাহায্য করেছিল তার প্রেমিক। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, যুবককে খুনের পর সুনীতা ও তার প্রেমিক মিলে দেহটি নীল ড্রামের মধ্যে লুকিয়ে রেখে, তাতে লবণ ভরে দিয়েছিল। এই ঘটনায় সুনীতা ও তার প্রেমিক জিতেন্দ্রকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। জানা গেছে, জিতেন্দ্র ওই বাড়ির মালিকের ছেলে। বর্তমানে দুজনেই পুলিশি হেফাজতে রয়েছে। 

পুলিশ আরও জানতে পেরেছে, সুনীতা ও জিতেন্দ্র কয়েক মাস আগেই বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। এরপরই হংসরাজকে খুনের পরিকল্পনা করে। এক সপ্তাহ আগে নীল ড্রামটি কিনে ছাদে রেখে দিয়েছিল সুনীতা। এও জানা গেছে, মাত্র দেড় মাস আগে তিন সন্তান, স্বামীর সঙ্গে ওই বাড়িতে এসে বসবাস শুরু করেছিল সুনীতা। অন্যদিকে জিতেন্দ্রর স্ত্রী ১২ বছর আগে মারা গিয়েছিলেন। সুনীতার সঙ্গে অল্প কয়েকদিনে কথোপকথনের পরেই প্রেমে পড়ে যায়। 

জন্মাষ্টমীর দিনেই হংসরাজকে খুন করে তারা। সেদিন পুজো উপলক্ষে একটি মন্দিরে গিয়েছিলেন জিতেন্দ্রর মা। বাড়ি ফিরে দেখেন, কেউ নেই। প্রথমে তাঁর ধারণা ছিল, সম্ভবত সকলে মিলে জন্মাষ্টমীতে কোথাও ঘুরতে গেছেন। কিন্তু রাতেও কেউ বাড়ি ফেরেননি। পরদিন সকালে ছাদে উঠতেই পচা দুর্গন্ধ নাকে আসে তাঁর। 

আরও পড়ুন: সাগরে গভীর নিম্নচাপ, ফুঁসছে সমুদ্র, আজ ১৯ জেলায় প্রবল বৃষ্টির তাণ্ডব, টানা ভারী বৃষ্টি কোন কোন জেলায়?

প্রসঙ্গত, রবিবার রাজস্থানে নীল ড্রামের মধ্যে থেকে উদ্ধার হয়েছিল এক যুবকের পচাগলা দেহ। খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না তাঁর স্ত্রীর। ছাদে কাপড় শুকাতে গিয়েছিলেন ওই বাড়ির মালিক। পচা দুর্গন্ধ পেয়েই পুলিশকে ডাকেন তিনি। সেই নীল ড্রামের ঢাকনা খুলতেই সকলে শিউরে উঠলেন। কবে যুবককে খুন করা হয়েছে, খুনের নেপথ্যে কী কারণ, তা ঘিরে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।‌ 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে রাজস্থানের আলওয়ারে। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, তিজারা জেলায় আদর্শ কলোনিতে। ওই এলাকার একটি বাড়ির ছাদে নীল ড্রামের মধ্যে থেকে এক ব্যক্তির পচাগলা দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। ওই বাড়ির মালিক, এক বৃদ্ধ মহিলা ছাদে কাজ করতে উঠেছিলেন। কিন্তু পচা দুর্গন্ধ পেয়েই তড়িঘড়ি করে নীচে নেমে আসেন। এরপরই তিনি পুলিশে খবর দেন। 

পুলিশ জানিয়েছে, মৃত যুবকের নাম, হংসরাজ। তিনি আদতে উত্তরপ্রদেশের বাসিন্দা ছিলেন। ঘটনার দিন থেকে তাঁর স্ত্রী ও সন্তানরা নিখোঁজ রয়েছেন। ওই বাড়ির ছাদে একটি নীল ড্রামের মধ্যে ছিল যুবকের পচাগলা দেহ। নীল ড্রামের উপরে ছোট ছোট পাথর রাখা ছিল। সম্ভবত, যাতে দুর্গন্ধ বাইরে না বেরোতে পারে। 

পুলিশ আধিকারিক জানিয়েছেন, ওই এলাকায় গত দেড় মাস ধরে বসবাস করছিলেন হংসরাজ। ওই বাড়িতে ভাড়াটিয়া হিসেবে থাকতেন। ঘটনার পর থেকে স্ত্রী ও সন্তানদের খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। ইতিমধ্যেই দেহটি উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। ফরেন্সিক টিম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়েছে। কবে থেকে নীল ড্রামের মধ্যে দেহটি ছিল, তা পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে।