আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি, ৩১ জুলাই: ভারত জোড়ো যাত্রা করেছেন। হেঁটেছেন কাশ্মীর থেকে কন্যাকুমারী। মণিপুর থেকে মহারাষ্ট্র। সে যাত্রা ছিল ঘৃণার বিরুদ্ধে ভালবাসার। কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীর যাত্রা প্রভাব পড়েছিল দেশে। এবার বিহারে ভোটার তালিকায় বিশেষ নিবিড় সমীক্ষা নিয়ে পথে নামছেন তিনি। আগস্টেই শুরু হচ্ছে তাঁর যাত্রা। চলবে ১৫ দিন ধরে। সব ঠিক থাকলে আগস্টের মাঝামাঝিতে শুরু হবে রাহুলের যাত্রা। এমনিতেই এসআইআর নিয়ে সংসদে ও সংসদের বাইরে প্রতিদিনই বিক্ষোভ দেখাচ্ছে সমস্ত বিরোধী শিবির।

আসন্ন বিধানসভা নির্বাচনের আগে বিহারে এসআইআর ইস্যুটি বড় আকার নিতে চলেছে। যোগ্য ভোটারদের নাম বাদ পড়ার আশঙ্কা করছে বিরোধী শিবির। বিষয়টি নিয়ে রাহুলের সঙ্গে পথে নামবেন আরজেডি প্রধান তেজস্বী যাদবও। নামবেন বিহারের মহাগঠবন্ধনের শরিক নেতা, কর্মী সমর্থকেরা। সূত্রের খবর, পনের দিনের যাত্রা কিছুটা পদযাত্রা, কিছুটা গাড়িতে হবে। 

আরও পড়ুন: টিসিএস-মাইক্রোসফট-ইন্টেল, জুলাই মাস জুড়েই এই সংস্থাগুলি কর্মী ছাঁটাই করেছে হাজার হাজার, কারণ জেনে ভয়ে কাঁপছেন বাকিরা...


 জানা গিয়েছে, বিহারে ১৫ দিন যাত্রা করবেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। হাত শিবিরের কর্মসূচি হলেও বিহারের সমস্ত বিজেপি বিরোধী দলগুলি এই যাত্রায় অংশ নেবে বলে খবর। একদিকে এসআইআর প্রতিবাদ অন্যদিকে জনসংযোগ— আগস্টেই কার্যত বিহার দখলে প্রচারাভিযান শুরু করে দেবেন রাহুল-‌তেজস্বী জুটি। বিহারের সাসারাম, নওয়াদা,গয়া হয়ে পাটনা পর্যন্ত হবে এসআইআর বিরোধী যাত্রা। যাত্রা শেষে পাটনায় বড় জনসভা করা হবে বলে কংগ্রেস সূত্রের খবর। এনডিএ সরকারকে বার্তা দেওয়া হবে ওই সভা থেকে। বিহারে অক্টোবর-‌নভেম্বরে বিহার বিধানসভা ভোট।

 তার আগে এসআইআর ইস্যু নিয়ে পথে নেমে প্রতিবাদ জানাবে কংগ্রেস সহ বিরোধী জোট। সব ঠিক থাকলে আগস্টের মাঝামাঝি এই যাত্রা শুরু হবে। বিহারে এসআইআর প্রক্রিয়া শেষ হয়েছে গত ২৪ জুলাই। শুক্রবার, ১ আগস্ট নির্বাচন কমিশন খসড়া ভোটার তালিকা প্রকাশিত করবে। জানা গিয়েছে, প্রায় ৬৫ লাখ ভোটারের নাম বাদ পড়তে চলেছে এই তালিকায়।

 

 

ভোটার তালিকা থেকে বিপুল সংখ্যক মানুষের নাম বাদ পড়ার বিষয়টি বিহার ভোটে বড় ইস্যু হতে চলেছে। নির্বাচন কমিশন একাধিকবার বিবৃতি দিয়ে দাবি করেছে, বিহারে কোনও যোগ্য ভোটারের নাম বাদ যাবেনা। কেবল মৃত, স্থানান্তরিত এবং অযোগ্যদের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ পড়বে। ইতিমধ্যেই এসআইআর নিয়ে সুপ্রিম কোর্টে মামলা দায়ের হয়েছে। আদালত কমিশনকে আধার, ভোটার কার্ডকে প্রামাণ্য নথি হিসেবে বিবেচনা করার পরামর্শ দিয়েছে। যদিও কমিশনের দাবি, আধার আদতে একটি পরিচয়পত্র মাত্র, নাগরিকত্বের প্রমাণ নয়। এমনকি, এসআইআর-পর্বে নতুন করে ভোটার তালিকায় নাম তোলার ক্ষেত্রে ভোটার আইডি চূড়ান্ত পরিচয়পত্র হতে পারে না।‌‌

 

উল্লেখ্য, বহুদিন থেকেই তৈরি হয়েছিল জল্পনা। সেইমতো শুরু হয়েছিল নানা রাজনৈতিক তরজাও। তবে এবার সেই সময়ের অবসান হল। দেশজু়ডে সমস্ত রাজ্যেই হবে এসআইআর। প্রতিটি রাজ্যকে এবিষয়ে স্পষ্ট নির্দেশ দিয়ে দিল জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কমিশন সূত্রের খবর, ২০০২ সালের এই তালিকাকে ভিত্তি করেই রাজ্যে নতুন করে ভোটার যাচাই প্রক্রিয়া চালানো হবে। বিহারে ২০০৩ সালে যে ভাবে এসআইআর হয়েছিল এবং বর্তমানে যেভাবে ওই রাজ্যে পুনরায় ভোটার যাচাই হচ্ছে, প্রায় সেই একই মডেলে পশ্চিমবঙ্গেও কাজ শুরু হচ্ছে বলে মনে করছে নির্বাচন কমিশনের অন্দরের একাংশ।