আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভোপাল থেকে ইউনিয়ন কার্বাইডের বিষাক্ত বর্জ্যের ১২টি কন্টেনার পৌঁছতেই রণক্ষেত্র পিথমপুর। সকাল থেকে বিক্ষোভে নেমেছেন এলাকার বাসিন্দারা। দুই বিক্ষোভকারী গায়ে আগুন লাগিয়ে নিজেদের শেষ করে দেওয়ার চেষ্টা করেন। তাঁদের ইনদওর হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে সেখানেই তাঁদের চিকিৎসা চলছে।

বৃহস্পতিবার ভোপাল থেকে সরানো হয়েছে ইউনিয়ন কার্বাইড কারখানার বিষাক্ত বর্জ্য। ৪০ বছর পর বিষমুক্ত হয়েছে ভোপাল। আগুন ধরবে না এবং কোনও অবস্থাতেই বাইরে বেরিয়ে আসবে না, এমন ১২টি কন্টেনারে ওই বিপুল পরিমাণ বর্জ্য সরানো হয়। পিথমপুরের বর্জ্য নিষ্কাশন প্ল্যান্টে নিয়ে আসা হয়েছে বর্জ্যগুলিকে। এর পরেই বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন স্থানীয়রা। পিথমপুর বাঁচাও সমিতি নামক একটি সংগঠনের দাবি, সরকার যতই পরিকল্পিতভাবে বর্জ্যগুলি নষ্ট করার চেষ্টা করুক না কেন এর ফলে এলাকার ক্ষতি হবে। স্থানীয় মানুষ এবং পরিবেশের ক্ষতি হবে। প্রতিবাদে শুক্রবার বনধেরও ডাক দিয়েছিল ওই সংগঠন। প্রতিবাদীদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিচার্জও করতে হয় পুলিশকে। 

এই বিষয়ে মধ্যপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী মোহন যাদব বলেন, "সরকার চায় না যে কোনও নাগরিকের ক্ষতি হোক ৷ সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট এই জায়গাটিতে (পিথমপুর) বর্জ্য ধ্বংস করার বিষয়ে সম্মতি জানিয়েছে ৷ মানুষের কাছে আবেদন, বিভ্রান্তিকর তথ্যে কান দেবেন না৷ বিজ্ঞানীদের তত্ত্বাবধানে সব বর্জ্য ধ্বংস করা হবে৷"

১৯৮৪ সালের ২ ডিসেম্বর গভীর রাতে ভোপালের ইউনিয়ন কার্বাইডের কারখানা থেকে মিথাইল আইসোসায়ানেট গ্যাস লিক করে পার্শ্ববর্তী এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে। ঘুমের মধ্যেই মৃত্যু হয় অনেকের। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও অনেকে মারা যান। সব মিলিয়ে সরকারি হিসাবে মৃতের সংখ্যা ছিল ৩৭৮৭। কিন্তু বেসরকারি মতে মৃতের সংখ্যা ১০ হাজারেরও বেশি। এর প্রভাবে নানা শারীরিক ক্ষতি হয় প্রায় পাঁচ লক্ষেরও বেশি মানুষের। কয়েক প্রজন্ম ধরে ওই অঞ্চলের মানুষ বয়ে বেড়াচ্ছেন এই দুর্ঘটনার প্রভাব। এর আগে একাধিক বার কারখানা চত্বর থেকে বিষাক্ত বর্জ্য সরানোর নির্দেশ দিয়েছে মধ্যপ্রদেশ হাই কোর্ট। ডিসেম্বরের শুরুতেই এ জন্য সরকারকে ভর্ৎসনাও করে আদালত। বর্জ্য সাফাইয়ের জন্য চার সপ্তাহ সময় দেওয়া হয়। তারপরেই সরানো হয় বর্জ্য। প্রশাসন সূত্রে খবর, এই বিপুল পরিমান বর্জ্য নষ্ট করতে প্রায় নয় মাস সময় লাগবে।