আবু হায়াত বিশ্বাস, দিল্লি: পহেলগাঁও হামলার পর গত কয়েকদিনে লাগাতার বৈঠক করেছিলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। মঙ্গলবারও ম্যারথন বৈঠক করেন তিনি। সন্ধেয় দিল্লির ভারত মন্ডপমে এবিপি নেটওয়ার্কের ‘ইন্ডিয়া @২০৪৭ সামিট’ অনুষ্ঠানে অংশ নেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। তিনি ওই অনুষ্ঠানে বলেন, ২০৪৭ সালের মধ্যে বিকশিত ভারতের স্বপ্ন পূরণ মূল লক্ষ্য। স্বামী বিবেকানন্দের উদ্ধৃতি তুলে ধরেন,‘ওঠো, জাগো। যতদিন না লক্ষ্য পূরণ হচ্ছে, ততদিন লক্ষ্যে অবিচল থাকতে হবে।’ মোদি বলেছেন, এখন আমাদের নীতি ‘নেশন ফার্স্ট’। নিজের সরকারের উন্নয়ন ও গুরত্বপূর্ণ সংস্কারের কথা তুলে ধরেন। দাবি করেন, দেশে বড় পরিবর্তন এসেছে গত এক দশকে। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে এদিন প্রধানমন্ত্রী মোদি বলেছেন, ‘আগে ভারতের হকের জল বাইরে যেত। এখন ভারতের হকের জল ভারতেই থাকবে। ওই জলে দেশের কাজ হবে। ভারতের জল ভারতের কথাতেই বইবে। ভারতের কথাতেই থামবে।’ উল্লেখ্য, পহেলগাঁও হামলার পরবর্তী সময়ে পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছে একাধিক ক্ষেত্রে। ইতিমধ্যেই সিন্ধু জল চুক্তি স্থগিত করেছে ভারত।
প্রধানমন্ত্রী বলেছেন, ভারতের জন্য ঐতিহাসিক দিন আজ। ব্রিটেনের প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে কথা হয়েছে কিছুক্ষণ আগে। ইন্ডিয়া-ইউকে মুক্ত বাণিজ্য চুক্তি হয়েছে। এই সমঝোতার ফলে দুই দেশের উন্নয়নে নতুন অধ্যায়ের সূচনা করবে বলে দাবি করেন তিনি। ভারতের অর্থনীতিতে গতি আসবে বলে দাবি করেন প্রধানমন্ত্রী। মোদি দাবি করেন, কোনও পদক্ষেপ নেওয়ার আগে ভাবা হত দুনিয়া কি ভাববে, ভোট মিলবে কিনা দেখা হত আগে। ফলে দেশের সংস্কার ঝুলে থাকত। একটাই লক্ষ্য হওয়া উচিত দেশ সবার আগে। প্রধানমন্ত্রী দাবি করেন, গত ১০-১১ সাল ধরে আমাদের সরকার এমন কিছু সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা অনেক দিন ধরে পড়েছিল। রাজনৈতিক ইচ্ছা শক্তির অভাব ছিল। আজ ব্যাঙ্কিং সেক্টর বিশ্বের অন্যতম মজবুত ব্যবস্থার অঙ্গ। আগে ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থা ভেঙে পড়েছিল। আমাদের সরকার ব্যাঙ্কিং ব্যবস্থার সংস্কার করেছে। উদাহরণ দিয়ে এয়ার ইন্ডিয়ার কথা তোলেন মোদি। বলেছেন, এয়ার ইন্ডিয়া একটা সময়ে ডুবছিল। আগের সরকার সিদ্ধান্ত নিতে ভয় পাচ্ছিল। আমরা সিদ্ধান্ত নিয়েছি। আমাদের জন্য দেশ সবার আগে।
এদিনের অনুষ্ঠানে ওয়াকফ সংশোধনী আইন, তিন তালাক বিল প্রসঙ্গ তোলেন প্রধানমন্ত্রী। জানান, ওয়াকফ আইনের সংশোধনের প্রয়োজন ছিল। তিন তালাকের ফলে বহু মহিলার জীবন শেষ হয়ে যেত। ভোট ব্যাঙ্কের কারণে কেউ কিছু করত না। জানান, গত এক দশকে দেশে ২৫ কোটি মানুষ দারিদ্রসীমার বাইরে বেরিয়ে এসেছে। ক্ষুদ্র শিল্পোদোগীরা ঋণ পেয়েছেন। ১০ বছর আগে ডিজিটাল ইন্ডিয়ার কথা বলতাম, তখন অনেকে কটাক্ষ করতেন। এখন ডিজিটাল ইন্ডিয়া বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনেছে দেশে। ভারত প্রতিরক্ষা উৎপাদক দেশ। আইএনএস বিক্রান্ত ক্ষমতা দেখিয়েছে।
