আজকাল ওয়েবডেস্ক: শীত পড়তেই উপত্যকায় বড় বিপদের আশঙ্কা। গোয়েন্দাদের কাছে খবর, জম্মু-কাশ্মীরের উঁচু জায়গায় ৩০ জনেরও বেশি পাকিস্তানি জঙ্গি রয়েছে। ফলে সন্ত্রাসবিরোধী অভিযান জোরদার করেছে ভারতীয় সেনাবাহিনী। প্রচণ্ড ঠান্ডায় প্রতিকূল আবহাওয়ায় ৪০ দিন তল্লাশি অভিযান সাধারণত বন্ধ রাখে সেনা। যা 'চিল্লাই কালান' নামে পরিচিত। কিন্তু, এবার তা বাতিল করে তড়িঘড়ি জোরদার জঙ্গি বিরোধী অভিযান চালু করেছে সেনা।

প্রতিরক্ষা ও গোয়েন্দা সূত্র জানিয়েছে, ধারাবাহিক অভিযানের চাপে থাকা সন্ত্রাসবাদীরা উপত্যকার কিশতওয়ার ও ডোডার উঁচু ও মাঝারি পাহাড়ি এলাকায় রয়েছে। এই দুই এলাকায় সাধারণ মানুষের উপস্থিতি খুবই কম। জঙ্গিদের এই পদক্ষেপকে শীতের তীব্র ঠান্ডার সময় গোয়েন্দা নজরদারি এড়িয়ে পুনরায় সংগঠিত হওয়ার একটি প্রচেষ্টা হিসেবে দেখা হচ্ছে। 

প্রচণ্ড ঠান্ডায় ২১শে ডিসেম্বর থেকে সেনাবাহিনীর 'চিল্লাই কালান' শুরু হওয়ার পর থেকে বরফাবৃত এবং উচ্চ-উচ্চতার অঞ্চলগুলোতে জঙ্গিরা তাদের অভিযানের পরিধি বাড়িয়েছে। তাপমাত্রা হিমাঙ্কের নিচে নেমে গেলেও সন্ত্রাসবাদীদের আস্তানার উপর অবিরাম চাপ বজায় রাখার জন্য অগ্রবর্তী শীতকালীন ঘাঁটি এবং অস্থায়ী নজরদারি পোস্ট স্থাপন করা হয়েছে।

সেনাবাহিনী সন্ত্রাসবাদীদের ধরতে পাহাড়ের চূড়া, বন এবং প্রত্যন্ত উপত্যকা জুড়ে নিয়মিত তল্লাশি চালাচ্ছে। সেনা কর্মকর্তারা বলছেন, এই কৌশলের লক্ষ্য হল জঙ্গি গোষ্ঠীগুলোকে দুর্গম ভূখণ্ডে সীমাবদ্ধ রাখা, তাদের সরবরাহ ব্যবস্থা ব্যাহত করা এবং জনবসতিপূর্ণ এলাকার দিকে তাদের চলাচল প্রতিরোধ করা।

জম্মু ও কাশ্মীর পুলিশ, সিআরপিএফ, স্পেশাল অপারেশনস গ্রুপ, বনরক্ষী এবং গ্রাম প্রতিরক্ষা রক্ষীদের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ সমন্বয়ের মাধ্যমে অভিযান চালানো হচ্ছে। সন্ত্রাসবাদীদের গতিবিধি চিহ্নিত করতে এবং ন্যূনতম বিলম্ব ছাড়াই লক্ষ্যভিত্তিক অভিযানের পরিকল্পনা করতে গোয়েন্দা তথ্যগুলো যৌথভাবে বিশ্লেষণ করা হচ্ছে।

নিরাপত্তা সংস্থাগুলো বিশ্বাস করে যে, নিম্ন এলাকাগুলোতে স্থানীয় সমর্থন হ্রাস এবং বর্ধিত সতর্কতার কারণে জঙ্গি গোষ্ঠীগুলো বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এই উপাদানগুলো খাদ্য ও আশ্রয়ের জন্য গ্রামবাসীদের উপর চাপ দেওয়ার চেষ্টা করছে, যদিও এই ধরনের প্রচেষ্টা খুবই কম সাফল্য পেয়েছে।

বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত শীতকালীন যুদ্ধ ইউনিটগুলোকে সংবেদনশীল এলাকাগুলোতে মোতায়েন করা হয়েছে। বরফাবৃত ভূখণ্ডে গতিবিধি ট্র্যাক করার জন্য ড্রোন, থার্মাল ইমেজার এবং গ্রাউন্ড সেন্সর দ্বারা তাদের সহায়তা করা হচ্ছে। নজরদারি এবং তল্লাশি অভিযানগুলো অব্যাহত রয়েছে।

কর্মকর্তারা বলছেন, এই শীতে মূল লক্ষ্য হল অবশিষ্ট জঙ্গি আস্তানাগুলো নির্মূল করা এবং যেকোনও পুনর্গঠন প্রতিরোধ করা। এর মাধ্যমে একটি স্পষ্ট বার্তা দেওয়া হচ্ছে যে, প্রতিকূল আবহাওয়ায়ও জম্মু ও কাশ্মীরে সক্রিয় পাকিস্তান-মজতপুষ্ট সন্ত্রাসবাদীদের রেয়াত করা হবে না।