আজকাল ওয়েবডেস্ক: নয়ডায় এক সাধারণ উবার যাত্রাই পাঁচজন মহিলার জীবনে ভয়ঙ্কর অভিজ্ঞতায় পরিণত হল। অভিযোগ, যাত্রাপথে রাস্তা বদল করতে বলায় তাঁদের উপর চড়াও হন চালক। শুধু অশ্রাব্য গালিগালাজই নয়, গাড়ি থেকে পাইপ বের করে মারতেও উদ্যত হন তিনি। ঘটনা জানাজানি হতে শোরগোল চারদিকে। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাটি ঘটে নয়ডার বোটানিক্যাল গার্ডেন মেট্রো স্টেশনে। অভিযোগকারিণী জানান, অফিস যাওয়ার জন্য তিনি ও তাঁর চার বান্ধবী একটি উবার বুক করেন। যানজট এড়াতে চালককে অন্য একটি রাস্তা দিয়ে যেতে অনুরোধ করেন এক যুবতী। আর তাতেই পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। চালক ব্রজেশ কুমার তাঁদের কথা শুনতে অস্বীকার করেন। শুধু তাই নয়, অপমানজনক মন্তব্য করতে শুরু করেন।

পরে ইনস্টাগ্রামে ঘটনার সবিস্তার বিবরণ দেন ওই যুবতী। গাড়ির নম্বর উল্লেখ করে তিনি লেখেন, "চালকের নাম ব্রজেশ। যানজট থাকায় আমরা চালককে ইউ-টার্নের বদলে আন্ডারপাস দিয়ে যেতে বলি। কিন্তু তিনি আমাদের কথা না শুনে ইউ-টার্ন নেন।” যুবতীর অভিযোগ, যানজটে আটকে পড়ার কথা বলতেই চালক আচমকা বিনা প্ররোচনায় চিৎকার করতে শুরু করেন। চালকের উদ্ধত জবাব, “চুপচাপ বসে থাকুন। ম্যাপে যা দেখাচ্ছে, আমি সে ভাবেই যাব।” এরপরই সে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ শুরু করে বলে অভিযোগ। যুবতীর কথায়, চালক বলতে থাকে, “আমাকে বলার আপনি কে? আপনার মতো ১০টা মেয়ে আমার কাছে কাজ করে। আমার ১২-১৩টা গাড়ি চলে।”

তাঁরা পুলিশে অভিযোগ জানানোর কথা বললে চালক আরও আগ্রাসী হয়ে ওঠে। সে বলে, “যা করার করে নিন, আমাকে শাস্তি দিন দেখি।” যুবতীর অভিযোগ, চালক তাঁর গায়ে হাত তুলতেও উদ্যত হয়। গাড়ি থেকে নামতে চাইলে চালক বলে, "আসুন, মজা দেখাচ্ছি।” টাকা দিতে অস্বীকার করলে সে গাড়ি থামিয়ে ডিকি থেকে একটি সাদা রঙের রড বের করে মারতে আসে। চালক চিৎকার করে বলে, “আজ মেরেই জেলে যাব।”

আরও পড়ুনঃ  সরকারের বিরোধিতা মানেই দেশবিরোধী? এবার কেন্দ্রের নিশানায় সোনম ওয়াংচুক! লাদাখ আন্দোলনে পুরোনো ছকেই বিজেপি?

যুবতীরা ঘটনার ভিডিও করতে শুরু করলে চালক আরও ক্ষেপে গিয়ে ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। অভিযোগ, এহেন অবস্থায় পুলিশ বা মহিলা হেল্পলাইনে ফোন করেও কোনও সাহায্য পাননি তাঁরা।

এই ভিডিও ইনস্টাগ্রামে ছড়িয়ে পড়তেই নেটপাড়ায় তীব্র চাঞ্চল্য ছড়ায়। ব্যবহারকারীরা চালকের বিরুদ্ধে কঠোর পদক্ষেপের দাবি জানিয়েছেন। বিষয়টি নজরে আসে উবার কর্তৃপক্ষেরও। সংস্থার তরফে পোস্টে মন্তব্য করা হয়, “এই ঘটনা অত্যন্ত উদ্বেগজনক। এমন আচরণ একেবারেই গ্রহণযোগ্য নয়। আমরা আপনাদের সুরক্ষাকে সর্বাধিক গুরুত্ব দি। অনুগ্রহ করে সরাসরি মেসেজে আপনার রেজিস্টার্ড অ্যাকাউন্টের বিবরণ পাঠান। আমাদের সুরক্ষা দল শীঘ্রই আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।”

ঘটনার পর সেক্টর ৩৯ থানায় অভিযোগ দায়ের হলে পুলিশ ব্রজেশ কুমার নামে ওই চালককে গ্রেপ্তার করা হয়। তার মারুতি এর্টিগা গাড়িটিও বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে। পুলিশ জানিয়েছে, ভারতীয় ন্যায় সংবিধানের ১৭০, ১৩৫ এবং ১২৬ ধারায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে।

যদিও জেরায় চালক ব্রজেশ কুমারের পাল্টা দাবি, যুবতীরাই তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন এবং এক জন তার চুলও টেনে ধরেন। তদন্তের পর অভিযুক্তকে বিচারবিভাগীয় হেফাজতে পাঠানো হয়েছে।