আজকাল ওয়েবডেস্ক: বিয়েবাড়ির অনুষ্ঠান। হইচই, আয়োজন, অনুষ্ঠান। কিন্তু পরিস্থিতি এমন ভয়ঙ্কর হয়ে উঠবে মুহূর্তে, ভাবতে পারেননি কেউ। গোটা ঘটনা জানলে মনে পড়ে যেতেই পারে জার্মান রূপকথার স্নো হোয়াইটের ইভিল কুইনের কথা। হরিয়ানার পানিপথের একটি গ্রামে বিয়ের অনুষ্ঠান আসর বসেছিল। কিন্তু তার মাঝেই নিখোঁজ হয়ে যায় ছ' বছরের একটি মেয়ে। আর ওই ঘটনার তদন্তে নেমেই, বিরাট তথ্য উদ্ধার পুলিশের।

সোমবার সোনিপথে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে পুরো পরিবার যখন জড়ো হয়েছিল, তখন অভিযুক্ত পুনম তাঁর ছ'বছর বয়সী ভাইঝিকে জলের টাবে চুবিয়ে হত্যা করেন, অভিযোগ তেমনটাই। 
পুলিশের মতে, পুনম এর আগে ২০২৩ সালে তাঁর ছেলে-সহ তিন শিশুকে খুন করেছে। এবং প্রতিবারই কারণ মূলত এক।

 সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, বুধবার পুলিশ জানিয়েছে, পানিপথে ভাইঝিকে খুনের অভিযোগে এক মহিলাকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। কারণ হিসেবে জানা  গিয়েছে, ওই মহিলা চাননি, তাঁর থেকে বেশি সুন্দর দেখতে হোক কেউ। আর সেই হিংসে থেকেই, তিনি এই ভয়াবহ কাজ করেছেন।

ভাইঝিকে কীভাবে খুনের পরিকল্পনা?

জানা গিয়েছে, ছ'বছরের শিশু, বিধী, সোনিপথে থাকত এবং পরিবারের বাকি সদস্যদের সঙ্গে পানিপথে গিয়েছিল আত্মীয়ের বিয়ের অনুষ্ঠানে। সঙ্গে ছিলেন ঠাকুরদা পাল সিং, ঠাকুমা ওমওয়াতি, বাবা সন্দীপ, মা এবং ১০ মাসের ছোট ভাই।  সোমবার দুপুর ১.৩০ টার দিকে বিয়ের শোভাযাত্রা নৌলথায় পৌঁছানর কিছুক্ষণ পর থেকেই আর খোঁজ মেলেনি তার। কিছুক্ষণেই বিধীর বাবা একটি ফোন কল পান, যেখানে তাঁকে জানানো হয় যে, সে নিখোঁজ, এবং পরিবার তাকে খুঁজতে শুরু করে। প্রায় এক ঘন্টা পরে, তার ঠাকুমা ওমওয়াতি আত্মীয়ের বাড়ির একতলায় একটি স্টোররুমে যান। স্টোররুমের দরজা বাইরে থেকে বন্ধ ছিল। যখন তিনি দরজাটি খুললেন, তখন তিনি বিধীর মাথা একটি জলের টবে ডুবে থাকা অবস্থায় এবং পা মাটিতে পড়ে থাকতে দেখেন। তাকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করে নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। 

পুলিশের সূত্রে খবর, অভিযুক্ত পুনম, এই ধরনের ঘটনা এই প্রথম ঘটাননি। ঈর্ষা এবং বিরক্তির বশে শিশুদের ডুবিয়ে মারার ঘটনা আগেও ঘটিয়েছেন তিনি। কারণ, তিনি চাইতেন না, কেউ তাঁর চেয়ে সুন্দর দেখতে হোক। পুলিশ জানিয়েছে, পুনম বিশেষভাবে অল্পবয়সী, সুন্দরী মেয়েদের টার্গেট করত। মোট, পুনম চারটি শিশুকে, যার মধ্যে তিনটি মেয়ে এবং তাঁর নিজের ছেলেকে একই ভাবে ডুবিয়ে খুন করেছে বলে স্বীকার করে নিয়েছেন জেরায়। 

২০২৩ সালে, পুনম তাঁর ননদের মেয়েকে খুন করেছিলেন। একই বছর, সন্দেহ এড়াতে তাঁর ছেলেকে ডুবিয়ে হত্যা করেন। এই বছরের আগস্টে, পুনম সিওয়াহ গ্রামে আরেকটি মেয়েকে হত্যা করেছিলেন, কারণ ওই শিশুটিও তাঁর চেয়ে 'সুন্দর' দেখতে বলে তাঁর ধারণা ছিল। বিধী হত্যা মামলায় পুনম জিজ্ঞাসাবাদের সময় সব সত্যি স্বীকার না করা পর্যন্ত এই শিশুদের মৃত্যুকে দুর্ঘটনা বলে ধরে নেওয়া হয়েছিল।