আজকাল ওয়েবডেস্ক: বেশ কয়েকবছরের সংসার। অশান্তি নিত্য সঙ্গী। মেয়ে মাঝে মাঝেই অভিযোগ করেছেন, জামাই মদ্যপ অবস্থায় বাড়ি ফেরেন। মারধোর করেন। মেয়ে স্বামীর সঙ্গে অশান্তি করে বাবার কাছে চলে এসেছিলেন। তারপরেই স্ত্রীর সঙ্গে জরুরি কথা বলতে আসেন যুবক। শ্বশুরমশাই রাজি না হওয়াতে, গায়ে পেট্রোল ঢেলে জ্বালিয়ে দেন বলে অভিযোগ। মেয়ে চাইছেন, বাবাকে হত্যা করেছেন যিনি, মৃত্যদণ্ড হোক তাঁরও।

 

ঘটনাস্থল গাজিপুর। জানা গিয়েছে, মৃত ব্যক্তির নাম রনবীর সিং। পেশায় তিনি অটো চালক। ১৬ আগস্ট সকালে, জামাই তাঁর বাড়িতে হাজির হয়ে মেয়ের সঙ্গে কথা বলতে চাইলে তিনি রাজি হননি। কিছুক্ষণের বাক-বিতণ্ডার পর তাঁর গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেওয়া হয় বলে অভিযোগ। রনবীরকে প্রথমে লাল বাহাদুর শাস্ত্রী হাসপাতালে এবং পরে সফদরজং হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। তবে শেষরক্ষা হয়নি। মৃত্যু হয়েছে তাঁর। 

 

আরও পড়ুন: পন চেয়ে নির্মম অত্যাচার! গায়ে পেট্রোল ঢেলে নিজের সঙ্গে মেয়কেও পুড়িয়ে মারলেন স্কুল শিক্ষিকা, চিঠিতে যা লিখে

 

সন্দীপ নামের ওই যুবকের সঙ্গে রনবীরের মেয়ের বিয়ে হয়েছিল বছর আট আগে। মেয়ের অভিযোগ, বিয়ের পর থেকেই নিত্যদিন সন্দীপ মদ্যপান করে বাড়িতে ফিরতেন। ১৫ আগস্ট স্বামীর সঙ্গে বিবাদের পর, যুবতী বাবার কাছে ফিরে যান।  নিশা নামের ওই যুবতী জানিয়েছেন, ১৬ আগস্ট সকালে সন্দীপ এসেছিলেন তাঁর বাবার বাড়িতে। তিনি কথা বলতে চাননি। তাঁর বাবাও নিষেধ করেন। নিশার অভিযোগ, তারপরেই সন্দীপ রনবীরের গায়ে আগুন জ্বালিয়ে সেখান থেকে পালিয়ে যান।  

 

সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, নিশার অভিযোগ, সন্দীও তাঁকেও একবার খুনের চেষ্টা করেছিলেন। তিনি বলেন, 'ও আমার বাবাকে জীবন্ত পুড়িয়ে মেরেছে। ওকে ফাঁসি দেওয়া উচিত।'


 

এর আগে রাজস্থান এবং নয়ডায় গায়ে আগুন এবং মৃত্যুর ঘটনা সামনে এসেছে। গ্রেটার নয়ডায় যুবতীকে গায়ে আগুন দিয়ে পুড়িয়ে মারার অভিযোগ উঠে এসেছে। অন্যদিকে রাজস্থানে এক যুবতী গায়ে আগুন দিয়ে আত্মহত্যা করেছেন। পুড়িয়ে মেরেছেন নিজের তিন বছরের মেয়েকে। ওই শিক্ষিকা, একটি চিঠিতে লিখে গিয়েছেন, স্বামী, শ্বশুরবাড়ির অত্যাচারের কারণেই তিনি এই আত্মহত্যার পথ বেছে নিয়েছেন। 

জানা গিয়েছে, তখন ওই শিক্ষিকার শ্বশুরবাড়ির কেউ ছিলেন না ঘরে। জানা গিয়েছে, তিন বছরের শিশু কন্যায় মৃত্যু হয় ঘটনাস্থলেই। হাসপাতালে চিকিৎসারত অবস্থায় মৃত্যু হয় শিক্ষিকার। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ওই স্কুল শিক্ষিকা একটি চিঠিতে তাঁর মৃত্যুর জন্য স্বামী এবং শ্বশুরবাড়ির লোকজনের বিরুদ্ধে পনের এবং অত্যাচারের অভিযোগ তুলেছেন। 

পুলিশ জানিয়েছে, শুক্রবার বিকেলে স্কুল থেকে ফিরে, ঘরে চেয়ারে বসে নিজের গায়ে পেট্রোল ঢালেন যুবতী। গায়ে পেট্রোল ঢালেন তিন বছরের শিশু কন্যারও। সেই সময় বাড়িতে স্বামী, শ্বশুরবাড়ির কেউই ছিলেন না। পুলিশ জানিয়েছে, স্থানীয়রা ওই বাড়িতে ধোঁয়া দেখেই ওই শিক্ষিকার পরিবারের সদস্যদের জানান। খবর পেয়েই তাঁরা যখন বাড়িতে পৌঁছন, অনেক দেরি হয়ে গিয়েছে ততক্ষণে।  

 

গ্রেটার নয়ডার ঘটনা। তরুণীর নাম, নিক্কি। তাঁর দিদিও ওই বাড়ির এক সদস্যের সঙ্গে বিয়ে করেন। তিনি জানিয়েছেন, ২০১৬ সালে নিক্কির বিয়ে হয় সিরসা গ্রামে। বিয়ের ছয় মাস পর থেকেই শুরু হয় শারীরিক নির্যাতন। নিক্কি ও দিদির উপর চরম শারীরিক নির্যাতন করতেন শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। পণ হিসেবে দুজনের থেকে ৩৬ লক্ষ টাকা দাবি করেছিলেন তাঁরা। 

 

নিক্কির দিদি জানিয়েছেন, বৃহস্পতিবার রাতে তাঁকে বেধড়ক মারধর করেন স্বামী ও শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা। মারতে মারতে সন্তানের চোখের সামনেই নিক্কির গায়ে আগুন জ্বালিয়ে দেন।‌ বাঁচার জন্য গায়ে আগুন নিয়েই সিঁড়ি দিয়ে দৌড়ে পালিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু শেষরক্ষা হয়নি। অগ্নিদগ্ধ অবস্থায় নিক্কির মৃত্যু হয়েছে।