আজকাল ওয়েবডেস্ক: যুক্তরাজ্যে স্ত্রীকে খুন করে ভারতে পালিয়ে আসে এক যুবক। দেশে পালিয়ে আসা অভিযুক্ত পঙ্কজ লাম্বাকে খুঁজছে ব্রিটিশ পুলিশ। জানা গিয়েছে, গত বছর লন্ডনে স্ত্রীকে খুন করার পর লাম্বা ভারতে চলে আসেন। চলতি বছরের শুরুতে তাঁকে দিল্লির একটি দোকানে দেখা গিয়েছিল বলেও খবর মিলেছে। সেই সূত্র ধরেই এই মুহূর্তে ব্রিটিশ পুলিশ দল ভারতে এসে তদন্ত করছে।

সংবাদমাধ্যম সূত্র অনুযায়ী, গত বছর ১৪ নভেম্বর পূর্ব লন্ডনের ইলফোর্ডে একটি গাড়ির ভেতর থেকে ২৪ বছর বয়সি হর্ষিতা ব্রেলার দেহ উদ্ধার হয়। পুলিশ মনে করছে, এর কয়েক দিন আগে, ১০ নভেম্বর, নর্থহ্যাম্পটনশায়ারে তাঁকে শ্বাসরোধ করে খুন করা হয়। খুনের পর পরই লাম্বা ভারতে পালিয়ে আসেন এবং এখনও তিনি নিখোঁজ।

জানা গিয়েছে, দিল্লির এই দম্পতি ঘটনার বছরখানেক আগেই যুক্তরাজ্যে গিয়েছিলেন। পুলিশ সূত্রের খবর, এ বছরের মার্চ মাসে নর্থহ্যাম্পটনশায়ার পুলিশ পঙ্কজ লাম্বার বিরুদ্ধে খুন, ধর্ষণ ও শারীরিক নির্যাতনের অভিযোগ আনে। পরে জুলাই মাসে ব্রিটিশ গোয়েন্দারা হর্ষিতা ব্রেলার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে এবং তাঁর কিছু জিনিসপত্র ফেরত দিতে একবার ভারতে এসেছিলেন।

সম্প্রতি দিল্লির কাছে লাম্বার গ্রামের বাড়ির অদূরেই একটি  দোকানে তাঁকে দেখা গিয়েছিল। তিনি নাকি সবসময় মুখ ঢেকে রাখতেন। তাঁর সঙ্গে একজন মহিলা ও একটি ছোট শিশুকেও দেখা যেত। লাম্বার প্রাক্তন শিক্ষক সুনীল সাইনি জানান, এপ্রিল মাসে শেষবার তাঁর সঙ্গে লাম্বার দেখা হয়।

সাইনি আরও বলেন, "ফেব্রুয়ারি বা মার্চ মাসে ও আবার আমার সঙ্গে যোগাযোগ করেছিল। শহর ছাড়ার আগে দেখা করতে এসে জানায়, ওর কাছে একটি রেস্তোরাঁর কিছু জিনিসপত্র আছে। ও বলেছিল, 'যদি আপনার রেস্তোরাঁ খোলার ইচ্ছে থাকে, তবে আপনি এগুলি ব্যবহার করতে পারেন।"

স্থানীয় বাসিন্দারা বলছেন, পুলিশ খোঁজ শুরু করেছে জানতে পেরেই সম্ভবত লাম্বা এলাকা ছেড়ে পালিয়েছেন।
হর্ষিতা ব্রেলার মা সুদেশ কুমারী প্রশ্ন তুলেছেন, “কেন এখনও আমার মেয়ের খুনি ধরা পড়েনি? ব্রিটিশ সরকার হোক বা ভারত সরকার- কেউই কিছু করছে না। আমি শুধু আমার মেয়ের বিচার চাই। তাহলেই আমার শান্তি হবে।” হর্ষিতার বোন সোনিয়া দাবাস অভিযোগ করেছেন, দুই দেশের সরকারই তাঁদের পরিবারকে গুরুত্ব দিচ্ছে না।

তিনি বলেন, "ব্রিটিশ পুলিশের ভূমিকায় আমরা খুবই হতাশ। হয়তো আমরা যুক্তরাজ্যের নাগরিক নই, তাই এই মামলার গুরুত্ব নেই।" খুনের কয়েক সপ্তাহ আগে হর্ষিতা তাঁর স্বামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ জানিয়েছিলেন। তখন লাম্বাকে গ্রেপ্তার করা হলেও তাঁকে জামিন দিয়ে দেওয়া হয়। মৃত্যুর এক মাস আগেই তাঁর উপর থাকা সব বিধিনিষেধ উঠে যায়। হর্ষিতার বোনের কথায়, “তখনই পঙ্কজ বুঝে গিয়েছিল যে ব্রিটিশ পুলিশ এই কেসটা নিয়ে খুব একটা সিরিয়াস নয়, তাই খুন করলেও সে পার পেয়ে যেতে পারবে।”