আজকাল ওয়েবডেস্ক: মর্মান্তিক! পরীক্ষায় খারাপ ফল এবং কম নম্বর পাওয়ার গ্লানি সহ্য করতে পারল না ছাত্রী। ১৯ তলা থেকে ঝাঁপ দিয়ে আত্মঘাতী হয়েছে ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রী। মহারাষ্ট্রের থানে জেলায় এই ঘটনায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। পুলিশ সূত্রে খবর, মৃত ছাত্রীর বয়স ১৪ বছর। কিশোরীর এই ভয়াবহ পরিণতিতে চমকে উঠেছে গোটা দেশ। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, বৃহস্পতিবার ঘটনাটি ঘটে থানের কল্যাণ পশ্চিম এলাকায়। পুলিশ জানিয়েছে, ওই ছাত্রী তার মা, দিদিমা এবং বোনের সঙ্গে থাকত। প্রাথমিক পুলিশি রিপোর্ট অনুযায়ী, নিয়মিত পড়াশোনা করেও ফল ভালো না হওয়ায় সে বিগত কিছুদিন ধরেই প্রবল মানসিক চাপের মধ্যে ছিল। তার পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে কথা বলার পর পুলিশ জানতে পেরেছে, সম্প্রতি প্রাক্‌-দীপাবলির পরীক্ষায় সে কম নম্বর পায়। এরপর থেকে শিক্ষকদের ক্রমাগত উন্নতির পরামর্শ, সব মিলিয়ে তার উদ্বেগ চরমে পৌঁছেছিল।

জানা গিয়েছে, নিজের ফ্ল্যাটের জানালা দিয়ে ঝাঁপ দেয় ওই কিশোরী। নিচে রাস্তার ধারে রাখা একটি দু'চাকার গাড়ির ওপর আছড়ে পড়ে সে। গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। খাড়কপাড়া থানার পুলিশ এই ঘটনায় অস্বাভাবিক মৃত্যুর একটি মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করেছে বলে ওই আধিকারিক জানিয়েছেন।

অন্যদিকে, চলতি মাসেই মর্মান্তিক ঘটনা রাজস্থানে। জয়পুরে স্কুলের চারতলা থেকে পড়ে ছাত্রীর মৃত্যু। খবর অনুযায়ী  রাজস্থানের জয়পুরে এক নামকরা বেসরকারি স্কুলের চারতলা থেকে পড়ে মৃত্যু হলো ষষ্ঠ শ্রেণির এক ছাত্রীর। শনিবার পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিক তদন্তে অনুমান করা হচ্ছে, ওই ছাত্রীটি মানসিক চাপে আত্মহত্যা করেছে। যদিও ঘটনার সঠিক কারণ তদন্তাধীন। এই ঘটনা ঘিরে সম্প্রতি রাজ্যজুড়ে চরম শোরগোল। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গিয়েছে, ঘটনাস্থলে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা চলেছে। পুলিশ আসার আগেই সব ধুয়ে মুছে সাফ। ঘটনার সঠিক কারণ জানতে এবং মৃত্যুর কারণ নির্ধারণে কর্মকর্তারা বর্তমানে স্কুলের বিভিন্ন সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখছেন। মানসরোবর থানার এসএইচও লক্ষ্মণ খাটানা সাংবাদিকদের জানান, মৃত ওই কিশোরী তার বাবা-মায়ের একমাত্র সন্তান ছিল। নীরজা মোদি স্কুলের চারতলা থেকে সে পড়ে যাওয়ার পর গুরুতর আহত অবস্থায় তাকে দ্রুত নিকটবর্তী হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে চিকিৎসকেরা তাকে মৃত বলে ঘোষণা করেন।

জয়েন্ট পেরেন্টস অ্যাসোসিয়েশনের মুখপাত্র অভিষেক জৈন অবশ্য দাবি করেছেন যে, এটি আত্মহত্যারই ঘটনা। পাশাপাশি তাঁর অভিযোগ, শিক্ষিকার আচরণে মেয়েটি ক্ষুব্ধ ছিল। এ প্রসঙ্গে জৈন বলেন, "আমরা অনেক ছাত্রীর সঙ্গে কথা বলেছি। জানা গিয়েছে যে এক শিক্ষিকার আচরণে হতাশ হয়ে সে চারতলা থেকে ঝাঁপ দেয়। যদিও স্কুল কর্তৃপক্ষ ঘটনার স্থান পরিষ্কার করে প্রমাণ লোপাটের চেষ্টা করেছে।"

তিনি আরও বলেন, "সরকার বা স্কুল কেউই নিরাপত্তার বিষয়টিকে গুরুত্ব দিয়ে দেখছে না। কোনও ঘটনা ঘটলেই তারা কেবল নড়েচড়ে বসে।" অ্যাসোসিয়েশনের দাবি, স্কুলের বিভিন্ন কমিটিতে অভিভাবকদের অন্তর্ভুক্ত করা হোক, যাতে তাঁরা তাদের পরামর্শ দিতে পারেন। এসএইচও জানিয়েছেন, তদন্ত শেষ হওয়ার পরেই কিশোরীর মৃত্যুর সঠিক কারণ জানা যাবে।

ওই অফিসার আরও জানান, "ঘটনাস্থল থেকে নমুনা সংগ্রহ করতে ফরেনসিক বিশেষজ্ঞদের ডাকা হয়েছিল। বিষয়টি পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করা হবে। জয়পুরিয়া হাসপাতালে মৃতদেহের ময়নাতদন্ত চলছে। সেখানে মেয়েটির বাবা-মা এবং পরিবারের অন্যান্য সদস্যরা উপস্থিত আছেন।"

এই ঘটনায় গভীর শোক প্রকাশ করেন স্কুল শিক্ষামন্ত্রী মদন দিলাওয়ার।  তিনি বলেন, "মনে হচ্ছে, স্কুলে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা ছিল না। এটা বড়সড় গাফিলতি। কর্তৃপক্ষের এ বিষয়ে গুরুত্ব সহকারে দেখা উচিত ছিল। আমি জেলা শিক্ষা অফিসারকে বিষয়টি তদন্ত করে রিপোর্ট জমা দিতে বলেছি।"