আজকাল ওয়েবডেস্ক: ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে প্রেমিকার বিয়ের চেষ্টা করছে পরিবার।‌ খবর পৌঁছেছিল যুবকের কাছে। সেই বিয়ে আটকাতে গিয়েই মর্মান্তিক পরিণতি হল তাঁর। যুবককে পিটিয়ে খুন করল প্রেমিকার পরিবার। যুবকের মৃত্যুর খবর পেয়েই আত্মহত্যার চেষ্টা তরুণীর। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, উত্তরপ্রদেশে এক যুবককে পিটিয়ে খুনের অভিযোগ উঠেছে। তাঁর প্রেমিকাকে ইচ্ছের বিরুদ্ধে জোর করে বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে পরিবার। খবর পেয়েই ছুটে গিয়েছিলেন ওই যুবক। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, হামিরপুরে ৩৫ বছর বয়সি রবি নামের যুবক ১৮ বছরের মণীশার সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন। রবি জানতে পেরেছিলেন, মণীশার পরিবার তাঁর অন্যত্র বিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করছে। কিন্তু গ্রামে দেখা করতে গিয়েই ধরা পড়ে যান রবি। তাঁকে খুঁটিতে বেঁধে মারধর শুরু করে মণীশার পরিবার। 

 

জানা গেছে, রবিকে খুঁটিতে বেঁধে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করে তাঁর প্রেমিকার পরিবার। সেখানে জড়িত ছিলেন কয়েকজন গ্রামবাসীও। গুরুতর আহত অবস্থায় জল খেতে চেয়েছিলেন রবি। অভিযুক্তরা তাঁকে জলও খেতে দেননি। মারধরের জেরে যুবক কিছুক্ষণেই মৃত্যুর কোলে ঢোলে পড়েন। তখনই ভয় পেয়ে যান মণীশার পরিবারের সদস্যরা। 

 

পুলিশের ভয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন মণীশার কাকা। খুনের অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার জন্য ৩৫ বছরের পিন্টু নিজেকে কুপিয়ে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি পৌঁছয় পুলিশ। দু'জনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে রবিকে মৃত ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। অন্যদিকে পিন্টুকে জেলা হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়েছে। 

 

রবির মৃত্যুর খবর পেয়েই মানসিকভাবে ভেঙে পড়েন মণীশা। গলা কেটে আত্মহত্যার চেষ্টা করেন তিনিও। বর্তমানে পিন্টু ও মণীশা আশঙ্কাজনক অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তবে পরিবারের দাবি, রবিই পিন্টুর ওপর হামলা করেছিলেন প্রথমে। 

 

আরও পড়ুন: বিয়েতে আর গা ভরা সোনার গয়না নয়, মাত্র তিনটি গয়না পরার অনুমতি পাত্রীদের! এই রাজ্যের পঞ্চায়েতে বিরাট নিয়ম জারি

 

মনীশার এক আত্মীয় জানিয়েছেন, সেদিন অন্য এক গ্রামে গিয়েছিলেন তরুণী। বাড়ি ফিরেই দেখেন রবি দেখা করতে এসেছেন‌। বচসা শুরু হতেই পিন্টুকে কোপাতে শুরু করেন রবি। অন্যদিকে পিন্টুর স্ত্রী জানিয়েছেন, রবির সঙ্গে মণীশা অতীতেও একবার পালিয়ে গিয়েছিলেন। রবি সঙ্গে ধারালো ছুরি নিয়ে এসেছিলেন। ঘটনাটি ঘিরে চরম উত্তেজনা ছড়িয়েছে গোটা গ্রামে। জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ। 

 

প্রসঙ্গত, গত আগস্ট মাসেই এমন আরেকটি ঘটনা ঘটেছিল। বান্ধবীর বাড়ির উঠোনেই অত্যাচার শিকার হয় ওই যুবক। তাঁকে একটি খুঁটিতে বেঁধে কয়েক ঘণ্টা ধরে বেধড়ক মারতে থাকে পরিবার। যে ঘটনার ভিডিওটি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে পড়তেই শোরগোল। পুলিশ ইতিমধ্যেই ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মধ্যপ্রদেশের মৌগঞ্জে। সেখানকারই পিপরাহি গ্রামে শনিবার নির্যাতনের শিকার হন যুবক। আদতে রেওয়া জেলার বাসিন্দা তিনি। ১০০ কিলোমিটার পথ অতিক্রম করে পিপরাহি গ্রামে এক বান্ধবীর সঙ্গে দেখা করতে গিয়েছিলেন তিনি। 

 

জানা গেছে, রেওয়া থেকে মৌগঞ্জের ওই গ্রামের দূরত্ব ১০০ কিলোমিটার। সেখানে পৌঁছতেই যুবককে হাতেনাতে ধরে তাঁর বান্ধবীর পরিবার। এরপর বেধড়ক মারধর শুরু করে। শনিবার রাত ৯টা থেকে রবিবার সকাল ১০টা পর্যন্ত যুবককে ব্যাপক মারধর করেন তাঁরা। টানা ১৩ ঘণ্টা ধরে এই খুঁটিতে যুবককে বেঁধে উত্তম মধ্যম পেটায় তারা। 

 

তদন্তে নেমে পুলিশ জানতে পেরেছে, যুবকের থেকে তাঁর বান্ধবী বয়সে অনেক ছোট। আদতে সে এখন নাবালিকা। ওই নাবালিকার সঙ্গে যুবকের ফেসবুকে আলাপ হয়েছিল। কিছুদিনের মধ্যেই বন্ধুত্বের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। শেষমেশ নাবালিকার প্রেমে হাবুডুবু খেতে শুরু করেন যুবক। বান্ধবীকে সামনাসামনি দেখতেই ওই গ্রামে পৌঁছেছিলেন। ঘটনাটি ঘিরে শোরগোল পড়লেও, থানায় এখনও পর্যন্ত কোনও অভিযোগ দায়ের করা হয়নি। অভিযোগ পেলে পুলিশ বিষয়টি আরও পুঙ্খানুপুঙ্খভাবে তদন্ত করে দেখা শুরু করবে বলে জানিয়েছে।