আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছুটির ঘণ্টা বেজে যাওয়ার পরেই সহপাঠীরা সকলেই বেরিয়ে গিয়েছিল। ক্লাসরুমে একাই বসেছিল দ্বিতীয় শ্রেণির এক ছাত্রী। অপেক্ষা করছিল পরিবারের কেউ নিতে আসবেন বলে। এদিকে বিকেল গড়াতেই স্কুলের দরজা বন্ধ করে চলে যান এক কর্মী। তিনি খেয়াল করেননি, একটি ক্লাসরুমে একাই বসে আছে এক খুদে পড়ুয়া। তার জেরেই ঘটে বিপত্তি।
খানিকক্ষণ পর ছাত্রী টের পায়, স্কুলের বাইরে যাওয়ার সব পথ বন্ধ। কোনও ভাবেই সে বাইরে বেরোতে পারবে না। গোটা স্কুলে একা সে। আতঙ্কে চিৎকার শুরু করে। কিন্তু সেই ছুটে আসেননি তাকে উদ্ধার করতে। অবশেষে ক্লাসরুমের জানলা দিয়ে ছোট্ট শরীরটা বের করতে চেয়েছিল। তখনই জানলার গরাদের আটকে যায় তার মাথা।
কিন্তু ভাগ্য তখনও সঙ্গ দিল না। গরাদে মাথা আটকে ওভাবেই সারারাত কাটাতে হল খুদে ছাত্রীকে। সকালে তাকে উদ্ধার করা হলেও, ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা ছিল গুরুতর।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে ওড়িশার কেওনঝড়ে। জানা গেছে, গত বৃহস্পতিবার স্কুলের মধ্যে ভুলবশত আটকে পড়ে ওই খুদে পড়ুয়া। পরিবারের তরফে জানা গেছে, বৃহস্পতিবার সকালে স্কুলে গিয়েছিল দ্বিতীয় শ্রেণির ওই ছাত্রী। কিন্তু বিকেল চারটে বেজে যাওয়ার পরেও সে আর বাড়ি ফেরেনি।
সরকারি স্কুলের এক কর্মী স্কুল, ক্লাসরুমের দরজা বন্ধ করে চলে যান। কিন্তু তিনি দেখেননি আট বছর বয়সি ছাত্রী তখনও একটি ক্লাসরুমে বসে আছে। তিনি না দেখেই ঘর বন্ধ করে চলে যান। বিকেলের পর থেকে পরিবারের সদস্যরা খুদে ছাত্রীর খোঁজ শুরু করেন। রাতভর তার খোঁজ করেন এলাকায়।
এদিকে কিছুক্ষণ পর ওই ছাত্রী খেয়াল করে, স্কুলের দরজা বন্ধ। বেরোনোর আর উপায় নেই। ভয়ে, আতঙ্কে ক্লাসরুমেই চিৎকার শুরু করেন। তবে কেউ তার চিৎকার শুনতে পাননি। বাড়ি যাওয়ার জন্য ছটফট করতে থাকে সে। এরপর ক্লাসরুমের জানলা দিয়েই বেরোনোর চেষ্টা করে। তখনই ক্লাসরুমের জানলার গরাদ দিয়ে কোনও মতে বেরিয়ে যাওয়ার প্রাণপণে চেষ্টা চালায়। তখনই ঘটে বিপত্তি। ওই জানলার গরাদে আটকে যায় ছাত্রীর মাথা।
জানা গেছে, ছাত্রীর নাম জোৎস্না দেহুরি। বৃহস্পতিবার রাত থেকে শুক্রবার সকাল পর্যন্ত ওই জানলার গরাদে আটকে ছিল খুদে ছাত্রীর মাথা। জানা গেছে, কেওনঝড় জেলার বনস্পাল ব্লকের সরকারি উচ্চ প্রাথমিক বিদ্যালয়ে ঘটনাটি ঘটেছে। শুক্রবার সকালে স্কুলের রাঁধুনি দরজা খুলে ভিতরে ঢোকেন। তিনিই প্রথম খুদে ছাত্রীকে ওই অবস্থায় দেখতে পান।
তড়িঘড়ি খবর দেওয়া হয় গ্রামবাসীদের ও ছাত্রীর পরিবারকে। দ্রুত তাঁরা স্কুলে পৌঁছন। গরাদটি আরও খানিকটা ফাঁকা করে ছাত্রীকে উদ্ধার করা হয়। দ্রুত ছাত্রীকে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। পরিবারের তরফে জানা গেছে, ছাত্রীর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল। তবে এখনও সে আতঙ্কিত। অন্যদিকে এই ঘটনাটি ঘিরে জেলায় ব্যাপক শোরগোল পড়ে। জেলা শিক্ষা আধিকারিক বিষয়টি খতিয়ে দেখেন। এরপর ওই স্কুলের প্রধান শিক্ষক গৌরহরি মাহান্তকে সাসপেন্ড করা হয়েছে।
