আজকাল ওয়েবডেস্ক: সুপ্রিম কোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে শপথ নিলেন সূর্যকান্ত। বিভিন্ন ঐতিহাসিক ও নজিরবিহীন রায়ের সঙ্গে যুক্ত ছিলেন বিচারপতি সুর্যকান্ত।
এতদিন ধরে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি থাকা বি.আর. গাভাইয়ের জায়গায় প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব নিলেন তিনি। আগামী প্রায় ১৫ মাস তিনি দেশের প্রধান বিচারপতির দায়িত্ব পালন করবেন।
অবসর নেবেন ২০২৭ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি। ১৯৬২ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি হরিয়ানার হিসারে এক মধ্যবিত্ত পরিবারে জন্ম সূর্যকান্তর। ১৯৮১ সালে হিসারের গভর্নমেন্ট পোস্ট গ্রাজুয়েট কলেজ থেকে স্নাতক এবং ১৯৮৪ সালে মহর্ষি দয়ানন্দ বিশ্ববিদ্যালয়, রোহতক থেকে আইন নিয়ে স্নাতক ডিগ্রি অর্জন করেন।
সেই বছরই হিসারের জেলা আদালতে আইনজীবী হিসেবে কর্মজীবন শুরু করেছিলেন তিনি। পরের বছর চণ্ডীগড়ে চলে আসেন এবং পাঞ্জাব-হরিয়ানা হাই কোর্টে প্র্যাকটিস শুরু করেন।
২০০০ সালে তিনি হরিয়ানার ইতিহাসে অন্যতম কনিষ্ঠ অ্যাডভোকেট জেনারেল হিসেবে নিয়োগ পান। পরবর্তীতে ২০১১ সালে কুরুক্ষেত্র বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিতে ‘ফার্স্ট ক্লাস ফার্স্ট’ হয়ে বিশেষ কৃতিত্ব অর্জন করেন।
২০১৮ সালে বিচারপতি সুর্যকান্তকে হিমাচল প্রদেশ হাইকোর্টের প্রধান বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০১৯ সালে তিনি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি পদে উন্নীত হন।
সুপ্রিম কোর্টে কর্মজীবনে তিনি একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রায়ের সঙ্গে যুক্ত। এর মধ্যে রয়েছে গভর্নর ও রাষ্ট্রপতির রাজ্য বিধানসভায় পাস হওয়া বিল নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ সংক্রান্ত প্রেসিডেনশিয়াল রেফারেন্স মামলা, এবং ঔপনিবেশিক যুগের রাষ্ট্রদ্রোহ আইন স্থগিত রাখার ঐতিহাসিক নির্দেশ দিয়েছিলেন তিনি।
সেখানে সরকার পুনর্বিবেচনা না করা পর্যন্ত নতুন মামলা দায়ের না করার নির্দেশ দেয় তাঁর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চ। বিচারপতি সুর্যকান্ত সম্প্রতি বিহারে ভোটার তালিকা সংশোধন সংক্রান্ত মামলায় নির্বাচন কমিশনকে ৬৫ লক্ষ বাদ পড়া ভোটারের তথ্য প্রকাশ করার নির্দেশ দেন।
একইসঙ্গে তিনি এমন এক মামলায় বেঞ্চের নেতৃত্ব দেন যেখানে বেআইনিভাবে অপসারিত এক মহিলা প্রধানকে পুনর্বহাল করা হয় এবং বিচারব্যবস্থায় লিঙ্গ বৈষম্যকে স্পষ্টভাবে চিহ্নিত করা হয়।
তিনি বার অ্যাসোসিয়েশনগুলিতে, এমনকি সুপ্রিম কোর্ট বার অ্যাসোসিয়েশনেও, সদস্যপদের এক-তৃতীয়াংশ মহিলাদের জন্য সংরক্ষণের নির্দেশ দেন। এছাড়াও, সূর্যকান্ত ওয়ান র্যা৬ঙ্ক-ওয়ান পেনশন (OROP) পরিকল্পনাকে সংবিধানসম্মত বলে স্বীকৃতি দিয়েছিলেন।
সশস্ত্র বাহিনীতে মহিলা অফিসারদের স্থায়ী কমিশনের দাবি সংক্রান্ত মামলার সঙ্গেও যুক্ত ছিলেন তিনি। এছাড়াও তিনি সাত বিচারপতির বৃহত্তর বেঞ্চের সদস্য ছিলেন।
যারা ১৯৬৭ সালের আলিগড় মুসলিম বিশ্ববিদ্যালয়ের সংখ্যালঘু মর্যাদা সংক্রান্ত পুরোনো রায় বাতিল করে বিষয়টি পুনর্বিবেচনার পথ প্রশস্ত করেন। পেগাসাস স্পাইওয়্যার মামলায়ও তাঁর নেতৃত্বাধীন বেঞ্চই সাইবার বিশেষজ্ঞদের তদন্ত কমিটি গঠন করেছিল।
