আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভারতীয় সেনাবাহিনী ফের একবার সাফল্যের নতুন নজির গড়ল। অরুণাচল প্রদেশের বরফে ঢাকা দুর্গম এলাকায় লজিস্টিকস ব্যবস্থাপনায় এল বড় অগ্রগতি।
পূর্বাঞ্চলীয় সীমান্তে কর্মরত ‘গজরাজ কর্পস’ সফলভাবে মোতায়েন করেছে সম্পূর্ণ দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি হাই অল্টিটিউড মনোরেল পরিষেবা। সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে প্রায় ১৬,০০০ ফুট উচ্চতায় এই সিস্টেম বসানো হয়েছে, যা পাহাড়ি এলাকায় রসদ পৌঁছে দেওয়ার ক্ষেত্রে এক যুগান্তকারী পরিবর্তন আনবে বলে মনে করছে সেনাবাহিনী।
চরম ঠাণ্ডা, পাথুরে পাহাড়, গভীর উপত্যকা—এসব কারণে অরুণাচলের বহু সেনা পোস্ট বছরের অধিকাংশ সময়ই যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন থাকে। সেই কঠিন বাস্তবতার কথা মাথায় রেখে তৈরি করা হয়েছে আধুনিক এই মনোরেল ব্যবস্থা।
সেনা সূত্র জানায়, নতুন মনোরেল সিস্টেমটি একটি ট্রিপে ৩০০ কেজিরও বেশি খাদ্যসামগ্রী, জ্বালানি, গোলাবারুদ ও অন্যান্য প্রয়োজনীয় রসদ বহন করতে সক্ষম। ফলে দূরবর্তী পোস্টগুলোতে রসদ পাঠানো হবে আরও দ্রুত, দক্ষ ও নিরাপদ।
সেনা কর্মকর্তাদের মতে, এই মনোরেল ভবিষ্যতে জরুরি পরিস্থিতিতে আহত সেনাদের দ্রুত সরিয়ে আনা (ক্যাজুয়ালিটি ইভাকুয়েশন) এবং দুর্গম অঞ্চলে জরুরি সরঞ্জাম পাঠানোর ক্ষেত্রেও বড় ভূমিকা রাখতে পারে।
পাহাড়ি আবহাওয়ার কারণে প্রায়ই হেলিকপ্টার ওড়ানো সম্ভব হয় না—এসব পরিস্থিতিতে মনোরেল হবে আরও নির্ভরযোগ্য ও ঝুঁকিমুক্ত বিকল্প।
এক সেনা আধিকারিক বলেন, ‘স্থানীয় ভূপ্রকৃতি ও আবহাওয়া বিবেচনায় রেখে দেশীয় প্রযুক্তিতে তৈরি এই মনোরেল ব্যবস্থা আমাদের লজিস্টিক সক্ষমতাকে নতুন উচ্চতায় নিয়ে গেল। এটি শুধু প্রযুক্তিগত উদ্ভাবনের উদাহরণ নয়, ভারতীয় সেনার মিশন-চিন্তার প্রতিফলনও।’
দেশীয় উদ্ভাবন, পরিকল্পনা ও সাহসী বাস্তবায়নের দৃষ্টান্ত হয়ে উঠেছে এই প্রকল্প। সেনাবাহিনী আশা করছে, অরুণাচলের দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চলে কর্মরত জওয়ানদের জীবনযাত্রা এবং দায়িত্বপালন—উভয়ই আরও সহজ ও সুরক্ষিত হবে এই নতুন মনোরেল ব্যবস্থার ফলে।
