আজকাল ওয়েবডেস্ক: শনিবার সপ্তাহান্তের শুরুতেই প্রবল বর্ষণে জেরবার উঠল দিল্লি-এনসিআর এলাকা। একটানা বৃষ্টিতে কার্যত অচল হয়ে পড়ল রাজধানীর একাধিক এলাকা, জলমগ্ন হয়ে পড়েছে বহু জায়গা। ফলে রাখিবন্ধনের মতো বিশেষ দিনে কার্যত কাবু হয়ে পড়েছে শহরের জনজীবন। এই আবহাওয়ার প্রভাব পড়েছে বিমান চলাচলেও। ফ্লাইটরাডারের তথ্য অনুযায়ী, ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দর থেকে উড়তে হচ্ছে শতাধিক বিমানের। অন্তত ৪টি বিমান বাতিলও করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে। ভারতীয় মৌসম ভবন (IMD) গোটা দিল্লির জন্য বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করেছে। পূর্ব ও মধ্য দিল্লিতে দিনের বিভিন্ন সময়ে মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণ এবং বজ্রবিদ্যুৎ সহ ঝড়ের পূর্বাভাস দেওয়া হয়েছে, সঙ্গে রয়েছে তীব্র বৃষ্টির সম্ভাবনাও। ইন্দিরা গান্ধী বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ যাত্রীদের নিজ নিজ এয়ারলাইন্সের সঙ্গে যোগাযোগ করে ফ্লাইটের আপডেট নেওয়ার পরামর্শ দিয়েছে।

বিমানবন্দরের এক বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, ‘আবহাওয়া প্রতিকূল হলেও বর্তমানে অপারেশন স্বাভাবিক রয়েছে’। ইন্ডিগো ও স্পাইসজেট নিজেদের এক্স হ্যান্ডেলে এক পোস্ট করে যাত্রীদের শহরের যানজট পরিস্থিতি সম্পর্কে সতর্ক করেছে। ময়ূর বিহারের বাসিন্দা এক যাত্রী জানান, ‘আমার ফ্লাইট তিরুবনন্তপুরম থেকে রাত ১১টা ৪৫ মিনিটে দিল্লি পৌঁছায়, কিন্তু বাড়ি পৌঁছাতে ৩ ঘণ্টারও বেশি সময় লেগেছে। সারাই কালে খান মোড়ে এক ঘণ্টার যানজট ছিল, আর অন্তত চারটি জায়গায় জল জমে ছিল’। তবে এই প্রবল বৃষ্টি রাজধানীর বাসিন্দাদের গরম ও আর্দ্রতা থেকে খানিকটা স্বস্তি এনে দিয়েছে। শুক্রবার রাত থেকেই শুরু হওয়া বৃষ্টি শনিবার সকাল পর্যন্ত অব্যাহত রয়েছে। বহু আন্ডারপাসে জল জমে গিয়েছে, একাধিক গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাঘাট জলমগ্ন।

আরও পড়ুন: স্ক্রিপ্টেড না সত্য ঘটনা? প্রশ্ন উঠছে বারবার, স্টেশনে প্রকাশ্যে যুবক যুবতীর যা কাণ্ড, জানলে চোক্ষু চড়কগাছ 

এদিন রাখি বন্ধনের পাশাপাশি সারাদিন বৃষ্টির পূর্বাভাস থাকায়, যানজটের আশঙ্কা রয়েছে রাজধানীর গুরুত্বপূর্ণ রাস্তাগুলোতে। এই ব্যাপক যানজটের আভাস মিলেছে শুক্রবারই। ৪৪ নম্বর জাতীয় সড়ক এবং হরিয়ানা সীমান্তের কাছে দীর্ঘ যানজট তৈরি হয়। এদিকে, পার্শ্ববর্তী হিমাচল প্রদেশেও শনিবার বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস দিয়েছে আইএমডি। রাজ্যের তিনটি জেলায় মাঝারি থেকে ভারী বর্ষণের জন্য কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। ২০ জুন থেকে এখনও পর্যন্ত হিমাচলে প্রবল বৃষ্টির কারণে দুর্ঘটনায় দুশোরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। এর পাশাপাশি পশ্চিমবঙ্গেও আপাতত দুর্যোগ কমার কোনও সম্ভাবনা নেই। হাওয়া অফিসের পূর্বাভাস, শনিবার থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত কলকাতা–সহ দক্ষিণবঙ্গের সব জেলায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে।

 বৃষ্টির সঙ্গে কোনও কোনও জেলায় ঘণ্টায় ৩০–৪০ কিমি বেগে ঝোড়ো হাওয়া বইতে পারে। কলকাতা সহ দক্ষিণে ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা নেই। উত্তরবঙ্গের বেশ কিছু জেলায় ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। শনিবার থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত। হাওয়া অফিস জানিয়েছে, শনিবার থেকে ১৪ আগস্ট পর্যন্ত জলপাইগুড়ি, আলিপুরদুয়ারের কোথাও কোথাও ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে। আর শনিবার থেকে ১২ আগস্ট পর্যন্ত দার্জিলিং, কালিম্পং, কোচবিহারের কোথাও কোথাও ভারী বৃষ্টি হত পারে। শনিবার শহরের সর্বোচ্চ তাপমাত্রা থাকতে পারে ৩১ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে। সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ২৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের কাছে থাকতে পারে। শহরের বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতার পরিমাণ সর্বাধিক ৯৫ শতাংশ এবং ন্যূনতম ৮৫ শতাংশ। তবে বৃষ্টি হলেও উত্তর বা দক্ষিণে দিনের তাপমাত্রার কোনও হেরফের হবে না।