আজকাল ওয়েবডেস্ক: হায়দরাবাদে এক হাড়হিম ঘটনা। ঘটনায় গোটা শহর হতবাক। স্কুলে মেয়েকে নামিয়ে বাড়ি ফিরছিলেন এক বাবা। রোজকার মত সেদিনও সকালবেলা ব্যক্তি তাঁর কাজ সেরে বাড়ি ফেরার পথে খুন হন। জানা গিয়েছে, গত সোমবার, ৫৪ বছর বয়সী ওই রিয়াল এস্টেট ব্যবসায়ী জি ভেঙ্কটা রত্নমকে প্রকাশ্য রাস্তায় সবার চোখের সামনে খুন করা হয়।

প্রথম দিকে পুলিশ ভেবেছিল, জমিজমা নিয়ে ঝামেলার জেরেই এই খুন। কিন্তু তদন্ত যত এগোয়, ততই সামনে আসে এক চাঞ্চল্যকর তথ্য। তদন্তে জানা গিয়েছে, ২৬ বছর ধরে পুষে রাখা এক পুরনো প্রতিশোধের কাহিনি।

এই খুনের মূল অভিযুক্ত চন্দন সিং। ১৯৯৯ সালে একটি পুলিশ এনকাউন্টারে তার বাবা সুদেশ সিং মারা যান। চন্দনের সন্দেহ ছিল, নিহত রত্নমই পুলিশকে খবর দিয়েছিলেন। আর সেই খবরের জেরেই তার বাবার মৃত্যু হয়। রত্নম সুদেশ সিংয়ের গাড়িচালক ছিলেন। 

পুলিশ সূত্রে খবর, এই সন্দেহের আগুন চন্দন বহু বছর ধরে নিজের মধ্যে পুষে রেখেছিল। বাবার মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতে সে দীর্ঘকাল রত্নমকে খুঁজে বেড়িয়েছে। অন্যদিকে রত্নম ততদিনে পরিবার নিয়ে হায়দরাবাদের জওহর নগর এলাকায় নতুন জীবন শুরু করেন।

সম্প্রতি চন্দন রত্নমের খোঁজ পায়। প্রায় এক মাস ধরে সে রত্নমের গতিবিধির ওপর নজর রাখে। ঠান্ডা মাথায় খুনের ছক কষে। ঘটনার দিন, অর্থাৎ সোমবার সকালে চন্দনের পরিকল্পনা অনুযায়ী কাজ শুরু হয়। সামাজিক মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া একটি সিসিটিভি ফুটেজে দেখা গিয়েছে, রত্নম স্কুটারে যাচ্ছিলেন। তখনই কয়েকজন দুষ্কৃতি মোটরসাইকেলে চড়ে এসে তাঁকে ঘিরে ফেলে।

তদন্তকারীরা জানিয়েছেন, রত্নমের রাস্তা আটকে দেয় অভিযুক্তরা। এরপর রত্নমকে ছুরি দিয়ে এলোপাতাড়ি কোপাতে থাকে তারা। তাঁর পেট, পিঠ ও ঘাড়ে একাধিক আঘাত করা হয়। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, হামলাকারীরা পালানোর আগে নাকি দু’টি গুলির শব্দও শোনা গিয়েছিল ঘটনাস্থলে।

খুনের ঘটনার কয়েক ঘণ্টার মধ্যেই চন্দন সিং সহ মোট ৬ জন শাহনজগঞ্জ থানায় গিয়ে আত্মসমর্পণ করেন। ঘটনার গুরুত্ব বুঝে মলকাজগিরি-এর ডিসিপি চি. শ্রীধর ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান। এই খুনের পিছনে আর কী কী কারণ আছে, কী অস্ত্র ব্যবহার করা হয়েছে এবং কীভাবে পরিকল্পনা করা হয়েছে, তা জানতে বিস্তারিত তদন্ত শুরু হয়েছে।