আজকাল ওয়েবডেস্ক: ছেলের শুক্রাণুর সংখ্যা কম। পরীক্ষার রিপোর্ট সামনে আসতেই মুষড়ে পড়েছিল পরিবার। কিন্তু সকলের চাই উত্তরাধিকারী। আর এর জন্য অন্য উপায় বলেছিলেন ছেলেই। তাঁর অনুমতি নিয়ে পুত্রবধূকে লাগাতার ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছে শ্বশুরের বিরুদ্ধে। এমনকী বিবাহিত দেওরের যৌন লালসার শিকার হয়েছেন বলেও অভিযোগ উঠেছে। স্বামীর অনুমতি নিয়ে শ্বশুর ও দেওর দিনের পর দিন বধূকে ধর্ষণ করেছে বলে পুলিশের কাছে অভিযোগ দায়ের করা হয়েছে।
এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ঘটনাটি ঘটেছে গুজরাটের ভদোদরায়। মঙ্গলবার পুলিশ সূত্রে খবর, নভোপুরা থানায় শ্বশুর ও দেওরের বিরুদ্ধে লাগাতার ধর্ষণের অভিযোগ জানিয়েছেন তরুণী। এমনকী তাঁদের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছেন তিনি। পাশাপাশি অভিযোগ জানিয়েছেন নিজের স্বামীর বিরুদ্ধেও। তরুণীর অভিযোগ, শ্বশুর ও দেওরের কেচ্ছা যাতে ফাঁস না করা হয়, তার জন্য রোজ ব্ল্যাকমেল করতেন স্বামী। এমনকী তাঁর অশালীন ছবি সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দিয়েছিলেন।
তরুণী পুলিশকে জানিয়েছেন, ২০২৪ সালে ফেব্রুয়ারি মাসে তিনি বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন। শ্বশুরবাড়িতে পা রাখার পর থেকে অশান্তি শুরু হয়। শ্বশুরবাড়ির সদস্যরা দ্রুত তাঁকে সন্তানধারণের জন্য চাপ সৃষ্টি করতে শুরু করেন। শ্বশুরবাড়ির সকলের বক্তব্য ছিল, তাঁর বয়স বেড়েছে। তাই সন্তানধারণের জন্য হয়তো অক্ষম। তাই আইভিএফ পদ্ধতিতে সন্তানধারণের প্রস্তাব দেন। কিন্তু এরপরেই দম্পতির মেডিক্যাল টেস্ট হয়। পরীক্ষায় জানা যায়, স্বামীর শুক্রাণুর সংখ্যা অত্যন্ত কম। তাই সাধারণভাবে সঙ্গমের মাধ্যমে সন্তানধারণ সম্ভব নয়। আইভিএফ পদ্ধতিতেও সন্তানধারণ করা সম্ভব নয়।
এরপরই তরুণী প্রস্তাব দেন, তিনি সন্তান দত্তক নিতে চান। কিন্তু তাতে আপত্তি ছিল শ্বশুরবাড়ির সকল সদস্যের। নির্যাতিতার অভিযোগ, ২০২৪ সালে জুলাই মাসে তিনি ঘরেই ঘুমিয়ে ছিলেন। আচমকা ঘরে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দেন শ্বশুর। সেদিনই প্রথম শ্বশুর ধর্ষণ করেন পুত্রবধূকে। চিৎকার করলেও কেউ ছুটে এসে রক্ষা করেননি। বরং বারবার চড়, থাপ্পড় মারতে থাকেন বধূকে।
তরুণী আরও জানিয়েছেন, ঘটনাটি স্বামীকে জানিয়েও লাভ হয়নি। উল্টে তাঁকে মুখে কুলুপ এঁটে থাকার হুমকি দিয়েছিলেন স্বামী। এও জানিয়েছিলেন, এই ঘটনাটির বিষয়ে বাইরে জানালে তাঁর নগ্ন ছবি সমাজমাধ্যমে ফাঁস করে দেবেন। এরপরেও শ্বশুর তাঁকে একাধিকবার ধর্ষণ করেন। কিন্তু তারপরেও তরুণী গর্ভবতী হননি।
যৌন নির্যাতন আরও বেড়ে যায় গত বছরের ডিসেম্বর মাস নাগাদ। শ্বশুরের মতোই বিবাহিত দেওর চুপিসারে ঘরে ঢুকে ধর্ষণ করেন বউদিকে। এরপর একাধিকবার দেওর তাঁকে ধর্ষণ করেন বলে অভিযোগ করেছেন তরুণী। শেষমেশ চলতি বছরে জুন মাসে তরুণী গর্ভবতী হন। কিন্তু আগস্ট মাসে গর্ভপাত হয়। এরপরই আরও নির্যাতন শুরু হয়।
গত জুলাই মাসেই পুলিশকে ধর্ষণের বিষয়টি জানিয়েছিলেন তরুণী। শ্বশুর, দেওর ও স্বামীর কেচ্ছা তখনই ফাঁস করেছিলেন তিনি। প্রাথমিক তদন্তে নেমে রবিবার অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে এফ আই আর দায়ের করেছে পুলিশ। ঘটনার তদন্ত জারি রয়েছে। ঘটনাটি ঘিরে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
