আজকাল ওয়েবডেস্ক: ঘুম ভেঙেছে ইথিওপিয়ার হায়লি গুব্বি আগ্নেয়গিরির। বদলে গিয়েছে আবহাওয়া। প্রায় চার হাজার কিলোমিটার দূরে অগ্ন্যুৎপাতের ফলে প্রভাব পড়ল ভারতের আকাশেও। হাওয়া বদলাচ্ছে রাজধানী দিল্লির। ঘন্টায় ১৩০-১৪০ কিলোমিটার গতিবেগে ভারতের উত্তর-পশ্চিম অর্থাৎ দিল্লি, হরিয়ানায় ঢুকে পড়েছে ছাই ও সালফার ডাই অক্সাইডের মতো 'বিষাক্ত মেঘ'। ফলে আতঙ্ক ছড়িয়েছে 'বিষবায়ু' জর্জরিত দিল্লিবাসীর। ইথিওপিয়ার হায়লি গুব্বি আগ্নেয়গিরির বিষাক্ত ছাই আরও কত দূষণ ছড়াবে?  গত কয়েকঘণ্টায় তা নিয়ে প্রবল আলোচনা। অনেকেই উদ্বেগ, আশঙ্কার কথাও বলেছিলেন।

মঙ্গলবার বিকেলে, ভারতের বেসামরিক বিমান পরিবহন মন্ত্রণালয় জানায়, পরিস্থিতির দিকে নজর রাখা হচ্ছে। মঙ্গলবার বিকেলে তারা জানায়, বিমান পরিবহন নিয়ন্ত্রণ, ভারত আবহাওয়া বিভাগ, বেশ কয়েকটি বিমান সংস্থা এবং আন্তর্জাতিক বিমান সংস্থাগুলির সঙ্গে এই পরিস্থিতি প্রসঙ্গে নিরবচ্ছিন্ন সমন্বয় নিশ্চিত করছে। জানানো হয়, 'এএআই প্রয়োজনীয় নোটাম জারি করেছে এবং সমস্ত প্রভাবিত ফ্লাইটকে অবহিত রাখা হয়েছে। ভারত জুড়ে কার্যক্রম সুষ্ঠুভাবে চলছে, সতর্কতা হিসাবে মাত্র কয়েকটি ফ্লাইটের রুট পরিবর্তন করা হয়েছে বা নামানো হয়েছে। এই মুহূর্তে উদ্বেগের কোনও কারণ নেই।'


সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ভারত আবহাওয়া অধিদপ্তর (আইএমডি) জানিয়েছে, ইথিওপিয়ার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাতের ফলে সৃষ্ট ছাইয়ের মেঘ মঙ্গলবার সন্ধ্যা ৭:৩০ নাগাদ ভারতের আকাশ থেকে বিদায় নেবে। অর্থাৎ বিষাক্ত মেঘ মুক্ত হবে দেশের আকাশ।

 

এর আগেই, আইএমডি বিজ্ঞানী রাধেশ্যাম শর্মা সংবাদ সংস্থা এএনআই-এর সাথে কথা বলে জানিয়েছেন যে, ইথিওপিয়ার আগ্নেয়গিরির অগ্ন্যুৎপাত থেকে সৃষ্ট ছাইয়ের মেঘ রাজস্থানে বিশেষ কোনও প্রভাব ফেলবে না। তিনি জানান, 'উপগ্রহ পর্যবেক্ষণের ভিত্তিতে মধ্য এবং উচ্চতর ট্রপোস্ফিয়ারিক স্তরে ছাইয়ের মেঘ শনাক্ত করা হয়েছে। আমরা যদি বিমান চলাচলের পূর্বাভাস দেখি, তাহলে একটি বিশেষ সেগমেন্ট সতর্কতা জারি করা হয়েছে, এবং গত ১০ থেকে ১৫ ঘন্টায় এই নির্দিষ্ট অঞ্চলে এর প্রভাব দেখা গেছে। আইএমডি ইতিমধ্যেই সেই অঞ্চলগুলির জন্য একটি উল্লেখযোগ্য সেগমেন্ট সতর্কতা জারি করেছে যেখানে এই এস মেঘগুলি অতিক্রম করেছে। যদি আমরা বিশেষভাবে রাজস্থানের কথা বলি, তাহলে ২৪শে নভেম্বর এই ছাই মেঘগুলি রাজস্থানের উপরের বায়ুমণ্ডল অতিক্রম করেছে। বর্তমানে, এই ছাই মেঘগুলি পূর্ব ভারতের অঞ্চলগুলির উপর দিয়ে অতিক্রম করছে। যেহেতু এই ছাই মেঘগুলির উচ্চতা ৮ থেকে ১৫ কিলোমিটার, তাই ভূপৃষ্ঠে এর কোনও উল্লেখযোগ্য প্রভাব দেখা যায়নি।' 

এর আগে ইন্ডিয়ান মেটিওরোলজিক্যাল ডিপার্টমেন্টের ডিরেক্টর জেনারেল এম মহাপাত্র বলেছিলেন, 'শহরাঞ্চলে এর প্রভাব বলতে মূলত তাপমাত্রার সামান্য বৃদ্ধি ঘটবে। যেমন সাধারণত মেঘ করলে হয়, সর্বনিম্ন তাপমাত্রা বাড়বে। অর্থাৎ রাতের উষ্ণতা বাড়তে পারে। তবে সরাসরি বায়ুর গুণমান বা একিউআই-এর উপরে এই কালো মেঘের বড় প্রভাব পড়ার সম্ভাবনা কম। কারণ ছাইয়ের মেঘটি বাতাসের অনেক উচ্চ স্তরে রয়েছে।'

বিষ-মেঘটির অধিকাংশটাই আগ্নেয়গিরির ছাই এবং সালফার ডাই অক্সাইড দিয়ে তৈরি। এ ছাড়া কাচ ও পাথরের ছোট ছোট কণাও রয়েছে। তাই আশঙ্কা থেকেই যাচ্ছিল।