জয়েন্টে ব্যথা, আর্থ্রাইটিস, ফোলাভাব বা ইনফ্ল্যামেশন-এই সমস্যাগুলো এখন অনেকেরই নিত্যসঙ্গী। কয়েক বছর আগেও বয়স্কদের মধ্যেই প্রকোপ ছিল বেশি। কিন্তু আজকাল বয়স ৪০ পেরতে পেরতেই এই অসুখের ফাঁদে পড়ছেন অনেকে। দীর্ঘক্ষণ বসে থাকলে কিংবা নিয়মিত শরীরচর্চা না করলে অল্প বয়সেই গাঁটের ব্যথায় ভুগতে পারেন।  তাই জয়েন্টের ব্যথা নিয়ে সচেতন থাকার পরামর্শ দেন বিশেষজ্ঞরা। অনেকেই সায়মিক স্বস্তি খুঁজতে ব্যথানাশক জেল, ওষুধ কিংবা ঠান্ডা-গরম সেঁক ব্যবহার করেন।  কিন্তু জানেন কি একটি সবজি কামালেই স্বস্তি পেতে পারেন? তা হল বাঁধাকপি। জয়েন্টে ঠান্ডা বাঁধাকপির পাতা জড়িয়ে রাখা হল এক পুরনো ঘরোয়া পদ্ধতি। শুনতে অবিশ্বাস্য মনে হলেও, বহু বছর আগে থেকেই ব্যথা কমাতে বাঁধাকপির পাতা ব্যবহৃত হত। 

আধুনিক গবেষণাও বলছে, বাঁধাকপির পাতায় রয়েছে অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি যৌগ যা প্রদাহ কমিয়ে ব্যথা ও ফোলাভাব হ্রাস করতে সাহায্য করতে পারে। এই কারণেই প্রাকৃতিক চিকিৎসা পদ্ধতিতে আবারও এই উপায় সামনে আসছে। বিশেষজ্ঞদের মতে, ঠান্ডা বাঁধাকপির পাতা জয়েন্টে লাগালে তার ভেতরের প্রাকৃতিক যৌগ ও ঠান্ডা অনুভূতি একসঙ্গে কাজ করে। এতে আক্রান্ত স্থানে রক্তসঞ্চালন একটু বাড়ে এবং প্রদাহজনিত স্নায়ু উত্তেজনা কমে আসে। ফলে ব্যথা ধীরে ধীরে কমতে শুরু করে। কিছু গবেষণায় এমনও দেখা গেছে, নিয়মিত ব্যবহার করলে এই উপায়টি বাজারে পাওয়া কিছু ব্যথানাশক জেলের মতোই কার্যকর হতে পারে।

ব্যবহারের পদ্ধতি কী

১. প্রথমে কয়েকটি বড় বাঁধাকপির পাতা ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন।
২. এরপর পাতাগুলো ফ্রিজে রেখে ঠান্ডা করুন।
৩. ঠান্ডা হওয়ার পর বেলন বা হাত দিয়ে পাতাগুলোকে হালকা চেপে নরম করুন। এতে পাতার ভেতরের ‘হিলিং এনজাইম’ বের হয়।
৪. যেখানে ব্যথা বা ফোলাভাব রয়েছে, সেই অংশে পাতা জড়িয়ে দিন।
৫. গজ, কাপড় বা ব্যান্ডেজ দিয়ে ভালোভাবে বেধে ২০–৩০ মিনিট রেখে দিন।

চিকিৎসকেরা বলছেন, পদ্ধতিটি সাধারণত খুবই নিরাপদ। তবে যাদের ত্বকে বাঁধাকপি বা এই ধরনের সবজিতে অ্যালার্জি রয়েছে, তারা আগে সামান্য সময়ের জন্য পরীক্ষা করে নিতে পারেন।

কেন আবার ভাইরাল হল এই উপায়? আসলে সহজ, সস্তা এবং কোনও পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া নেই-এই তিন কারণেই উপায়টি দ্রুত জনপ্রিয় হচ্ছে। ব্যথা কমাতে রাসায়নিকযুক্ত জেলের বদলে প্রাকৃতিক উপায় ব্যবহার করতে চান এমন মানুষের সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। অনেকেই জানিয়েছেন, রাতে ঘুমানোর আগে এই কমপ্রেস ব্যবহার করলে পরের দিন ব্যথা অনেকটাই কম অনুভূত হয়।

বিশেষজ্ঞরা অবশ্য সতর্ক করে বলেন, এটি বড় কোনও অসুখের চিকিৎসার বিকল্প নয়। তবে হালকা ও মাঝারি ব্যথা, ফোলাভাব বা প্রাথমিক পর্যায়ের আর্থ্রাইটিসের ক্ষেত্রে এটি একটি কার্যকর সহায়ক চিকিৎসা হতে পারে।