আজকাল ওয়েবডেস্ক: জলমগ্ন মুম্বই। দুর্যোগে দুর্ভোগ। পরিস্থিতি ভয়াবহ দিল্লিরও। সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের প্রতিবেদন অনুযায়ী, টানা বর্ষণে ফুঁসছে যমুনা। জলমগ্ন রাজধানীর বহু এলাকা। একাধিক নিচু এলাকায় ঘরে জল ঢুকছে হু হু করে। কোথাও জল এক হাঁটু, কোথাও জল ছুঁয়েছে খাট-বিছানা।

তথ্য, গত কয়েকদিনের টানা বর্ষণের পর যমুনার জল বইছে বিপদসীমার উপরে। যমুনা বাজারের একাধিক জায়গা জলমগ্ন। কেন্দ্রীয় জল কমিশন (সিডব্লিউসি)-এর তথ্য, সোমবার বিকেলে যমুনার জলস্তর বিপদসীমা অতিক্রম করে। দুপুর ২টায় পুরনো রেলওয়ে সেতুতে জলস্তর ২০৫.৩৬ মিটার এবং সন্ধ্যা ৬টা নাগাদ আরও বেড়ে ২০৫.৫৫ মিটারে পৌঁছে গিয়েছিল।

?ref_src=twsrc%5Etfw">August 19, 2025

উল্লেখ্য, দিল্লিতে নদীর জলস্তর বৃদ্ধির সতর্কতা স্তর ২০৪.৫০ মিটার। জলস্তর ২০৬ মিটার স্পর্শ করলেই বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু করা হয়। প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত পাওয়া তথ্য, আরও জলস্তর বাড়তে পারে আশঙ্কায়, নদী তীরবর্তী এলাকাগুলি থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেওয়ার প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে ইতিমধ্যে। 

 

পরিস্থিতি বিচারে সোমবার দিল্লির মুখ্যমন্ত্রী রেখা গুপ্ত মন্ত্রী প্রবেশ বর্মার সঙ্গে একাধিক অঞ্চল পরিদর্শন করেন। দিল্লির জেলা ম্যাজিস্ট্রেটের কার্যালয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে সাক্ষাতের আগে তিনি অসিতা ঘাট, যমুনা ছট ঘাট, ১২ নম্বর রেগুলেটর সরেজমিনে ঘুরে দেখেন। যে কোনও মুহূর্ত পরিস্থিতি খারাপ হতে পারে ভেবে, আগাম সতর্কতা হিসেবে রাজ্য দুর্যোগ প্রতিক্রিয়া বাহিনী (SDRF), ন্যাশনাল ক্যাডেট কর্পস (NCC) এবং স্বেচ্ছাসেবকদের সতর্ক করা হয়েছে রাজ্য প্রশাসনের পক্ষ থেকে। যমুনার জলস্তর ক্রমাগত বাড়তে থাকায় ফরিদাবাদ প্রশাসনও পরিস্থিতি জোরদার করছে। 

প্রবল বৃষ্টিতে ভাসছে বাণিজ্য নগরী। টানা তিনদিনের তুমুল বৃষ্টির জেরে জলমগ্ন বিস্তীর্ণ এলাকা। দুর্যোগের কালো মেঘ মঙ্গলবারেও সরল না। এই পরিস্থিতিতে মিঠি নদীর জলস্তর প্রায় বিপদসীমার কাছাকাছি পৌঁছেছে। আজকে আরও বৃষ্টির জেরে নদীর জলস্তর বিপদসীমা পার করতে পারে। 

আরও পড়ুন: এই ছিল, এই নেই, গাড়ি চালানো শিখতে বেরিয়ে উধাও যুবক-যুবতী! মোবাইল ফোন উদ্ধার হতেই ঘনাচ্ছে রহস্য

মৌসম ভবনের তরফে আজ, মঙ্গলবারেও মুম্বই, রায়গড়, থানে জেলায় অতি প্রবল বৃষ্টির লাল সতর্কতা জারি করা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফড়নবীশ জানিয়েছেন, রাজ্যের সব জেলাতেই আজ অতি প্রবল বৃষ্টির লাল ও কমলা সতর্কতা জারি করা হয়েছে। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়া আরও তিনদিন থাকবে। ২১ আগস্ট পর্যন্ত মহারাষ্ট্রের অধিকাংশ এলাকাতেই প্রবল বৃষ্টির লাল ও হলুদ সর্তকতা থাকবে। 

 

মঙ্গলবারেও মুম্বই, থানে, রায়গড়, পালগড়, রত্নগিরিতে স্কুল, কলেজ সহ সমস্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান বন্ধ রাখার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রশাসনের তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল প্রাকৃতিক দুর্যোগের জেরে মহারাষ্ট্রে ১২ জনের মৃত্যু হয়েছে। সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে নান্দেদ। শুধুমাত্র এই জেলাতেই ৯ জনের মৃত্যু হয়েছে। মুম্বই বিমানবন্দর সূত্রে জানা গেছে, শুধুমাত্র মঙ্গলবারেই ২৫০-র বেশি বিমান চলাচল ব্যাহত হয়েছে। শতাধিক বিমান দেরিতে ওঠানামা করছে। 

 

প্রবল বর্ষণের জেরে মুম্বইয়ে সমস্ত স্কুল-কলেজ ইতিমধ্যেই বন্ধ রাখার নির্দেশিকা জারি করা হয়েছিল গতকাল। বিএমসির তরফে জানানো হয়েছে, প্রবল বর্ষণের জেরে মুম্বইয়ের সব স্কুলে ছুটি দেওয়া হচ্ছে। ভারতীয় মৌসম ভবন জানিয়েছে, মুম্বইয়ের জন্য আগে জারি করা কমলা সতর্কতা বদলে বর্তমানে লাল সতর্কতা জারি করা হচ্ছে। টানা বৃষ্টিপাতে শহরের বিভিন্ন এলাকায় জল জমে পরিস্থিতি ক্রমেই গুরুতর হয়ে উঠছে। গ্রেটার মুম্বই পুলিশের কমিশনার জানিয়েছেন, ‘অরেঞ্জ অ্যালার্ট জারির মধ্যেই প্রবল বৃষ্টিপাত অব্যাহত থাকায় একাধিক এলাকায় জলজট ও দৃশ্যমানতা হ্রাসের ঘটনা ঘটছে’। সাধারণ নাগরিকদের অপ্রয়োজনীয় যাতায়াত এড়িয়ে চলার পরামর্শ দেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি টুইট বার্তায় সতর্ক করে বলেন, ‘অত্যাবশ্যক না হলে বাইরে বেরোবেন না, যাতায়াত পরিকল্পনা করে করুন। কোনও জরুরি পরিস্থিতিতে ১০০ / ১১২ / ১০৩ নম্বরে যোগাযোগ করুন’।