আজকাল ওয়েবডেস্ক: সোশ্যাল মিডিয়ায় নতুন এবং উদ্বেগজনক এক প্রবণতা দেখা যাচ্ছে—এআই ব্যবহার করে পণ্যের ক্ষতিগ্রস্ত ছবি জালিয়াতিভাবে তৈরি করে রিফান্ড দাবি করা। উদ্যোক্তাদের অভিযোগ, এই ট্রেন্ড ইতিমধ্যেই বিভিন্ন কোম্পানিকে আর্থিক ক্ষতির মুখে ফেলছে।

সম্প্রতি লিঙ্কডইনে একটি ঘটনা শেয়ার করেন উদ্যোক্তা এবং সিইও শ্রেয়াস নির্মল। তিনি জানান, একজন গ্রাহক Swiggy Instamart থেকে ডিমের একটি ট্রে অর্ডার করেছিলেন। বাস্তবে ট্রের মাত্র একটি ডিম ফেটে ছিল, কিন্তু গ্রাহক সেই ছবি না পাঠিয়ে Gemini Nano নামে একটি এআই টুল ব্যবহার করেন। মাত্র একটি নির্দেশে টুলটি ছবিতে এমনভাবে ফাটল তৈরি করে যে মনে হয় পুরো ট্রের ডিম নষ্ট হয়ে গেছে।

গ্রাহক সেই বদলে দেওয়া ছবিটি Instamart-এর সাপোর্ট টিমে পাঠান। যেহেতু বর্তমানে বেশিরভাগ প্ল্যাটফর্ম ছবি দেখে বিশ্বাস করে এবং এআই-এডিটেড ছবি শনাক্ত করার ব্যবস্থা নেই, তাই সাপোর্ট সিস্টেম বিষয়টি সত্যি ভেবে গ্রাহককে পুরো রিফান্ড দেয়। অর্থাৎ বাস্তবে যেখানে ক্ষতি ছিল মাত্র একটি ডিমের, সেখানে পুরো ট্রের জন্য কোম্পানিকে অর্থ ফেরত দিতে হয়।

নির্মল পোস্টে লিখেছেন, এ ধরনের ঘটনা ভবিষ্যতে বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়াতে পারে। তাঁর বক্তব্য, এআই টুলগুলো এখন এত বাস্তবসম্মতভাবে ছবি বদলাতে পারে যে বোঝা কঠিন হয়ে যাচ্ছে আসল আর নকলের পার্থক্য। এই কারণে ই-কমার্স এবং কুইক-কমার্স কোম্পানিগুলোতে প্রতারণা বাড়তে পারে, যা ব্যবসার লাভ এবং সিস্টেমের বিশ্বাসযোগ্যতা উভয়কেই ক্ষতিগ্রস্ত করবে।

তবে নির্মল মনে করেন, দোষ প্রযুক্তির নয়, ব্যবহারকারীর। তাঁর ভাষায়—এআই অত্যন্ত শক্তিশালী এবং উপকারী প্রযুক্তি, কিন্তু যখন তা জালিয়াতির উদ্দেশ্যে ব্যবহৃত হয়, তখনই সমস্যা তৈরি হয়।

এই পোস্টটি পরে X (টুইটার)-এ ভাইরাল হয়। অনেকে এই আচরণের সমালোচনা করেছেন এবং বলেছেন যে একদিকে মানুষ সস্তা রিফান্ড পেতে এ ধরনের পথ বেছে নিচ্ছে, অন্যদিকে সেই ক্ষতির ভার শেষ পর্যন্ত ব্যবসা এবং বাকি সৎ গ্রাহকদেরই বইতে হবে।

এই ঘটনার পর বিশেষজ্ঞদের মত, ভবিষ্যতে কোম্পানিগুলোকে এআই ব্যবহার করে ছবি যাচাই এবং প্রতারণা শনাক্ত করার নতুন প্রযুক্তি তৈরি করতে হবে, না হলে এই ধরনের ঘটনা আরও বাড়বে।