আজকাল ওয়েবডেস্ক: ভার্চুয়াল শুনানির সময় শৌচালয়ে বসে অংশগ্রহণ করায় এক ব্যক্তির বিরুদ্ধে আদালত অবমাননার মামলা দায়ের করল গুজরাট হাইকোর্ট। সোমবার হাইকোর্ট জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত থাকায় তাকে ১ লক্ষ টাকা আদালতের রেজিস্ট্রিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। ঘটনাটি ঘটে গত ২০ জুন। সেই সময় গুজরাট হাইকোর্টের বিচারপতি নিরজার এস দেশাই একটি মামলার ভার্চুয়াল শুনানি করছিলেন। সেই সময় অভিযুক্ত ব্যক্তি, সমাদ আবদুল রহমান শাহ, শৌচাগারে মলত্যাগ করতে করতেই শুনানিতে অংশগ্রহণ করেন। এই দৃশ্যের ভিডিও ভাইরাল হয়ে পড়ে, যার পরিপ্রেক্ষিতে আদালত স্বতঃপ্রণোদিতভাবে অবমাননার মামলা দায়ের করে।

সোমবার বিচারপতি এএস সুপেহিয়া ও আরটি ভাচ্ছানির ডিভিশন বেঞ্চ জানায়, অভিযুক্ত শাহ তার বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ স্বীকার করে নিয়েছেন। ঘটনায় তিনি নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে ইচ্ছুক। তাই তাঁকে আগামী শুনানির তারিখের আগে, অর্থাৎ ২২ জুলাইয়ের মধ্যে, ১ লক্ষ টাকা আদালতের রেজিস্ট্রিতে জমা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। আদালতের জমা দেওয়া রিপোর্ট অনুযায়ী, শাহ ২০ জুনের ভার্চুয়াল শুনানিতে মোট ৭৪ মিনিট অংশ নিয়েছিলেন। যার মধ্যে এক পর্যায়ে তাঁকে শৌচালয়ে বসে মলত্যাগ করতে দেখা যায়। সেই অবস্থা ভার্চুয়ালি আদালতের শুনানিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। শাহের আইনজীবী আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল এই আচরণের জন্য দুঃখপ্রকাশ করবেন।

আরও পড়ুন: যৌন হেনস্থার অভিযোগে কলেজেই গায়ে আগুন, ঝলসে গিয়েছিল গোটা শরীর, মৃত্যু ওড়িশার তরুণীর

আইনজীবী আরও বলেন, তিনি আগেই শাহকে ভার্চুয়াল শুনানির জন্য যথাযথভাবে উপস্থাপিত হওয়ার পরামর্শ দিয়েছিলেন। ভাইরাল হওয়া ভিডিওতে দেখা যায়, শাহ শৌচালয়ে বসে শুনানিতে অংশ নিচ্ছেন। এই দৃশ্য গোটা বিচার ব্যবস্থার ভাবমূর্তিতে আঘাত হানে। নিয়মকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে কেউ এভাবে ভার্চুয়াল শুনানি ব্যবস্থায় অংশ নেবে তাও কল্পনা করা যায়নি কস্মিনকালে। পরে আদালত ভিডিওটি অবিলম্বে মুছে ফেলার ও এর প্রচার নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেয়। উল্লেখ্য, করোনা অতিমারির সময় থেকে গুজরাট হাইকোর্ট ভার্চুয়াল শুনানির ব্যবস্থা চালু করেছিল। প্রায় প্রত্যেক শুনানিই আদালতের নিজস্বন ইউটিউব চ্যানেলের মাধ্যমে সরাসরি সম্প্রচারিত হয়।

আরও পড়ুন: আগামী ৩২ বছরেও খালি হাতে ফিরতে হবে, ক্লাব বিশ্বকাপের পর বার্সেলোনাকে নিয়ে বড় ভবিষ্যদ্বাণী করল এআই

ভিডিওতে দেখা যায়, শৌচাগারে মলত্যাগ করার পর শাহ মোবাইল হাতে নিয়ে বেরিয়ে যান এবং পরে আবার একটি ঘরে বসে ভার্চুয়াল শুনানিতে যোগ দেন। প্রায় ১০ মিনিট পর তিনি নিজের পরিচয় দেন। জানান, তিনি হলেন কিম গ্রামের বাসিন্দা আবদুল সমাদ শাহ এবং একজন মারধরের মামলার অভিযোগকারী। তাঁর আইনজীবীরা আদালতকে জানান, শাহ দুজন অভিযুক্তের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেছিলেন, কিন্তু পরে উভয় পক্ষের মধ্যে আপস হয়ে যায়। বিচারপতি দেশাই অভিযুক্তদের এফআইআর বাতিলের আবেদনের শুনানির সময় শাহকে জিজ্ঞাসা করেন, তিনি এতে সম্মত কিনা। অভিযুক্ত শাহ আপত্তি না জানানোয়, বিচারপতি আবেদন মঞ্জুর করেন।