আজকাল ওয়েবডেস্ক: প্রয়াত বর্ষীয়ান কংগ্রেস নেতা শিবরাজ পাটিল। শুক্রবার, মুম্বইয়ে, তাঁর নিজবাসভবনেই মৃত্যু হয়েছে। মৃত্যুকালে বয়স হয়েছিল ৯০। বর্ষীয়ান নেতার মৃত্যুতে শোকের ছায়া রাজনৈতিক মহলে।
শিবরাজ পাটিল। জন্ম ১৯৩৫ সালের ১২ অক্টোবর। মহারাষ্ট্রের লাতুর জেলার চাকুর গ্রামে। জাতীয় রাজনীতিতে প্রবেশ ১৯৮০ সালে। সেবার তিনি প্রথমবারের জন্য নির্বাচিত হয়েছিল, সপ্তম লোকসভায়। তার আগেই দীর্ঘদিন রাজনীতির ময়দানে লড়াই করেছেন। এলাকা চিনে ফেলেছিলেন হাতের তালুর মতো। বুঝে গিয়েছিলেন মানুষের দাবি, চাহিদা। মহারাষ্ট্র বিধানসভার দু'বারের সদস্য ছিলেন (১৯৭২-১৯৭৯)। এই সময়কালে তিনি পাবলিক আন্ডারটেকিং কমিটির চেয়ারম্যান, আইন ও বিচার বিভাগ, সেচ এবং প্রোটোকল উপমন্ত্রী এবং পরে মহারাষ্ট্র বিধানসভার ডেপুটি স্পিকার এবং স্পিকার সহ গুরুত্বপূর্ণ পদে বসেন। তাঁর কাজের জন্যই, বারেবারে গুরুদায়িত্ব দেওয়া হয়েছে নানা দপ্তরের। জাতিয় রাজনীতিতেও তার ব্যাতিক্রম ঘটেনি। রাজনীতির উত্তপ্ত ময়দানেও শিবরাজ পরিচিত ছিলেন তাঁর মিষ্টভাষী স্বভাব, শিষ্টাচারের জন্য।
১৯৮০-১৯৯০ সময়কালে তিনি সংসদ সদস্যদের বেতন ও ভাতা সংক্রান্ত যৌথ কমিটির সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন এবং পরে এর সভাপতি হন। নানা সময়ে শিবরাজ পাটিল প্রতিরক্ষা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি, পারমাণবিক শক্তি, ইলেকট্রনিক্স, মহাকাশ ও মহাসাগর উন্নয়ন, জৈব-প্রযুক্তি, কর্মী ও প্রশিক্ষণ, জনসাধারণের অভিযোগ ও পেনশন, প্রশাসনিক সংস্কার, প্রতিরক্ষা উৎপাদন, বেসামরিক বিমান চলাচল এবং পর্যটন-সহ বিভিন্ন বিভাগের প্রতিমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৯১ থেকে ১৯৯৬ সাল পর্যন্ত লোকসভার স্পিকার পদে ছিলেন শিবরাজ পাটিল।সাংসদ হিসেবে তাঁর ভূমিকার পাশাপাশি, তিনি কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী হন ২০০৪ থেকে ২০০৮ সাল পর্যন্ত। শিবরাজ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে থাকার সময়েই ঘটে গিয়েছিল ২৬/১১ মুম্বই হামলা। নিরাপত্তা ত্রুটির নৈতিক দায়িত্ব গ্রহণ করে ৩০ নভেম্বর, ২০০৮ তারিখে পদত্যাগ করেন।
তারপরেও রাজনীতির ময়দানে ছিলেন তিনি। ২০১০ থেকে ২০১৫ সাল সময়কালে, পাটিল পাঞ্জাবের রাজ্যপাল এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল চণ্ডীগড়ের প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি অসাধারণ সংসদ সদস্য পুরস্কার প্রবর্তনের কৃতিত্বও পান।
দীর্ঘদিন ভুগছিলেন বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায়। ২০১৫ সালের পর থেকে সক্রিয় রাজনীতিতে ছিলেন না।
পাটিলের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছেন দেশের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। দু'জনের একটি ছবি এক্স হ্যান্ডেলে শেয়ার করেছেন প্রধানমন্ত্রী। সঙ্গে লিখেছেন, 'তিনি একজন অভিজ্ঞ নেতা ছিলেন, দীর্ঘ জনজীবনে তিনি বিধায়ক, সাংসদ, কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, মহারাষ্ট্র বিধানসভার স্পিকার এবং লোকসভার সদস্য হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। সমাজের কল্যাণে অবদান রাখার জন্য তিনি ছিলেন অত্যন্ত উৎসাহী। গত কয়েক বছর ধরে তাঁর সঙ্গে আমার একাধিকবার আলাপচারিতা ঘটেছে। যার মধ্যে সবচেয়ে সাম্প্রতিকটি হল কয়েক মাস আগে, তিনি আমার বাসভবনে এসেছিলেন। এই দুঃখের মুহূর্তে তাঁর পরিবারের প্রতি আমার সমবেদনা।' শোকপ্রকাশ করেছেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধীও।
