আজকাল ওয়েবডেস্ক: চালক সংকটে ইন্ডিগোর বিমান বাতিলে চরম বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে দেশজুড়ে। চরম হয়রানির শিকার যাত্রীরা। ভয়াবহ পরিস্থিতি দেখে অসন্তুষ্ট কেন্দ্র। সূত্রের খবর, কেন্দ্রীয় সরকার ইন্ডিগোর সিইও পিটার এলবার্সকে অপসারণের দাবি জানাতে পারে।
বিমান পরিবহন মন্ত্রক শনিবার সন্ধ্যায় ইন্ডিগো কর্তৃপক্ষকে তলব করেছে। পাশাপাশি ওই বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের ইঙ্গিত মিলেছে। সূত্রগুলি জানিয়েছে, দেশের অভ্যন্তরীণ বাজারের প্রায় দুই-তৃতীয়াংশ মালিকানাধীন ইন্ডিগো-র উপর আর্থিক জরিমানা চাপানো হচ্ছে।
দেশব্যাপী বিমান সংস্থার ব্যাপক বাতিলকরণের ফলে বিশৃঙ্খলা তৈরি হয়েছে। ফলে ইন্ডিগোর অনুমোদিত উড়ানের সংখ্যা হ্রাস করার কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে। এই পদক্ষেপ করা হলে তা হবে ভারতের বৃহত্তম বিমান সংস্থার বিরুদ্ধে এখনও পর্যন্ত নেওয়া সবচেয়ে কঠোর পদক্ষেপ।
ভারতের বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু গতকাল নিশ্চিত করেছিলেন যে, ইন্ডিগোর বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। যদিও তিনি বিস্তারিত কিছু বলেননি। এই সংকট খতিয়ে দেখতে ইতিমধ্যেই একটি উচ্চ পর্যায়ের তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নাইডু বলেন, তদন্তের পর ব্যবস্থা নেওয়া হবে। সংবাদ মাধ্যমকে বিমান পরিবহন মন্ত্রী রাম মোহন নাইডু বলেছেন, "এ ব্যাপারে অবশ্যই ব্যবস্থা নেওয়া হবে কারণ এটা এমন বিষয় যা ঘটুক আমরা চাইছি না। সরকারের অগ্রাধিকার যাত্রীরা।"
ইন্ডিগোর সিইও এলবার্স এর আগে স্বীকার করেছিলেন যে, তাঁর বিমান সংস্থা গ্রাহকদের ভাল অভিজ্ঞতা প্রদানের প্রতিশ্রুতি পূরণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। জনসমক্ষে ক্ষমা চেয়ে এলবার্স শুক্রবার বলেছিলেন, "আজ সবচেয়ে বেশি ক্ষতির দিন।" শুক্রবার দেশব্যাপী ইন্ডিগোর এক হাজারেরও বেশি বিমান বাতিল করা হয়েছে।
মন্ত্রী নাইডু বলেন, ইন্ডিগোর সিইও এলবার্সের স্বীকারোক্তিতেই স্পষ্ট যে, ওই বিমান সংস্থাটিই দোষী। তিনি উল্লেখ করেছেন যে, নতুন 'ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন' বাস্তবায়নের জন্য অন্য কোনও বিমান সংস্থার কোনও সমস্যা হয়নি।
বিমান সংস্থা পাইলটদের দীর্ঘ বিশ্রামের সময় নিশ্চিত করার জন্য 'ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন' নিয়মে সংশোধন করেছে। এরপরই ইন্ডিগো বিমান সংস্থা দেশের অভ্যন্তরীণ রুট পরিচালনায় প্রয়োজনীয় বিমান-চালক জোগান দিতে হিমশিম খাচ্ছে।
শুক্রবার এক হাজারেরও বেশি ফ্লাইট বাতিল করা হয়েছে। শনিবার সকাল থেকে আরও শত শত ফ্লাইট বাতিল করা হচ্ছে। যার ফলে বিমানবন্দরে যাত্রীরা আটকা পড়েছেন। শেষ মুহূর্তের জন্য অন্যান্য বিমান সংস্থায় বুকিংয়ের জন্য অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় করা ছাড়া যাত্রীদের কাছে আর কোনও উপায় থাকছে না। অনেককেই ভ্রমণ পরিকল্পনা বাতিল করছেন।
সরকার এখন 'ফ্লাইট ডিউটি টাইম লিমিটেশন' আদেশ স্থগিত রেখেছে। আশা করছে যে, তিন দিনের মধ্যে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে। বিমান পরিবহন মন্ত্রী বলেছেন যে, ইন্ডিগোর সংকট এখন সমাধানের পথে এবং বিমান সংস্থাটি পূর্ণ ক্ষমতায় কাজ শুরু করতে আরও কয়েক দিন সময় লাগতে পারে। ইন্ডিগোর সিইও এলবার্স শুক্রবারই জানিয়েছিলেন, অবস্থা স্বাভাবিক হতে ১৫ ডিসেম্বর হয়ে যাবে।
