আজকাল ওয়েবডেস্ক: লাগাতার ধর্ষণ। পুলিশ আধিকারিকের কাছে অভিযোগ জানিয়েও সুরাহা মিলল না নির্যাতিতার। বিজেপি শাসিত রাজ্যে বিজেপি কাউন্সিলরের স্বামীর কীর্তি এবার ছড়িয়ে পড়েছে সোশ্যাল মিডিয়ায়। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশের সাতনা জেলায়। রবিবার পুলিশ জানিয়েছে, বুকে ছুরি ঠেকিয়ে এক মহিলাকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে এক বিজেপি কাউন্সিলরের স্বামীর বিরুদ্ধে। মহিলাকে যৌন নির্যাতনের ভিডিও ক্যামেরাবন্দি করেছিলেন অভিযুক্ত। এরপর সেই ভিডিও ফাঁস করে দেওয়ার ভয় দেখিয়ে আরও একাধিকবার যৌনতায় লিপ্ত হওয়ার জন্য জোরজবরদস্তি করতেন। 

 

পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত ব্যক্তির নাম, অশোক সিং। রামপুর বাঘেলান নগর পরিষদের এক বিজেপি কাউন্সিলরের স্বামী তিনি। নির্যাতিতা অভিযুক্তের হুমকি দেওয়া কথোপকথনের ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার ভয় দেখিয়েছিলেন। এর পরেই অভিযুক্ত পাল্টা দাবি করেন, ভিডিও ছড়িয়ে পড়লেও তাঁর কিচ্ছু হবে না। একটি ভিডিওতে এক পুলিশের সঙ্গেও তর্কাতর্কিতে জড়াতে দেখা গেছে অভিযুক্তকে। 

 

একটি ভিডিওতে দেখা গেছে, অভিযুক্ত বলছেন, 'আমার কী হবে! কিছুই হবে না। যেখানে খুশি অভিযোগ দায়ের করো। কেউ আমার কিছু করতে পারবে না।' সেই ভিডিওতেই নির্যাতিতাতে কান্নায় ভেঙে পড়তে দেখা গেছে। এমনকী অভিযোগ দায়ের করার কথাও বলেন তিনি। গত সোমবার সাতনার পুলিশ আধিকারিকের কাছে লিখিত অভিযোগ জমা দেন নির্যাতিতা। 

তিনি জানিয়েছেন, ধর্ষণের ঘটনাটি ঘটেছে ছ'মাস আগে‌। প্রাণনাশের ভয়ে ও পরিবারের উপর হামলার আশঙ্কায় অভিযোগ দায়ের করেননি আগে। বাড়িতে ঢুকে, ছুরির কোপের ভয় দেখিয়ে ধর্ষণ করেছিলেন অশোক। গত ২০ ডিসেম্বর আবারও তাঁর শ্লীলতাহানি করেন। পাঁচদিন আগে পুলিশের কাছে অভিযোগ জানানোর পরেও, তারা কোনও কড়া পদক্ষেপ করেনি। অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, ভিডিওর সত্যতা যাচাই করে পদক্ষেপ করবে তারা। এখনও অভিযুক্তকে গ্রেপ্তার করা হয়নি। 

 

আরও এক বিজেপি নেতার কীর্তিতে তোলপাড় মধ্যপ্রদেশ। শীতের রাতে আগুন পোহাচ্ছিলেন অনেকে মিলে। আচমকাই বনফায়ারের সামনে বসে থাকা গ্রামবাসীদের পিষে দেয় বিজেপি যুব নেতার গাড়ি। একাধিক গ্রামবাসীর মৃত্যু হয়েছে এই দুর্ঘটনায়। আহত হয়েছেন আরও অনেকে। 

 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে মধ্যপ্রদেশে। পুলিশ জানিয়েছে, মোরেনা জেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। পোরসা-জোটাই রোড বাইপাসের ধারে বাড়ির বাইরে উঠোনে বনফায়ারের সামনে বসেছিলেন কয়েকজন। আচমকা একটি গাড়ি বেপরোয়া গতিতে এসে তাঁদের পিষে দেয়। দুর্ঘটনায় দু'জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতদের মধ্যে একজন নাবালক রয়েছে। আরও তিনজন আহত হয়েছেন। গাড়িটি চালাচ্ছিলেন এক বিজেপি যুব নেতা। 

 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, আহত পাঁচজনকে তড়িঘড়ি করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছিল। গোয়ালিয়রের হাসপাতালে ৫৬ বছরের এক ব্যক্তি ও তাঁর দশ বছরের ছেলের মৃত্যু হয়েছে। বিজেপি যুব নেতা, পোরসা এলাকার ভাইস প্রেসিডেন্ট দীপেন্দ্র ভাদুরিয়া গাড়িটি চালাচ্ছিলেন। বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালিয়ে বনফায়ারের সামনে বসে থাকা সকলকেই পিষে দেন। জানা গেছে, গাড়ির ধাক্কায় কয়েকজন ছিটকে দূরে গিয়ে পড়েছিলেন। 

 

প্রাথমিক তদন্তের পর পুলিশ জানিয়েছে, বিজেপি যুব নেতা মত্ত অবস্থায় বেপরোয়া গতিতে গাড়ি চালাচ্ছিলেন। তার জেরেই নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলেন। দুর্ঘটনার পরেই স্থানীয়রা অভিযুক্ত নেতাকে বেধড়ক মারধর করে পুলিশের হাতে তুলে দেন। এর কিছুক্ষণ পরেই পুলিশি হেফাজত থেকে পালিয়ে যান তিনি। 

 

অভিযুক্ত বিজেপি নেতা পালিয়ে যাওয়ার পর, আবারও নতুন করে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা। আহত এক ব্যক্তি চিকিৎসা পরিষেবা নিতেও অস্বীকার করেছেন। অভিযুক্তের গ্রেপ্তারির পরেই চিকিৎসা পরিষেবা নেবেন বলে জানিয়েছেন তিনি। অন্যদিকে পুলিশ জানিয়েছে, অভিযুক্ত যুব নেতার খোঁজে তল্লাশি অভিযান চলছে।