আজকাল ওয়েবডেস্ক: স্বামী পারদ ইঞ্জেকশন দিয়ে মেরে ফেলার চেষ্টা করেছিলেন। মৃত্যুর আগে এমনটাই অভিযোগ জানিয়ে গেলেন বেঙ্গালুরুর মৃত বধূ বিদ্যা। তিনি পুলিশকে জানিয়েছিলেন, একটি ল্যাবের কর্মী, এক দম্পতি তাঁর স্বামীকে ক্লোরোফর্ম, সিরিঞ্জ এবং পারদ জোগাড় করে দিয়েছিল। গুরুতর অসুস্থ হওয়ার আগেই বিদ্যা সবিস্তার বয়ান রেকর্ড করিয়ে যান।

একটি ভিডিও বিবৃতিতে বিদ্যা বলেন, "এসএলএন ডায়াগনস্টিক সেন্টার নামে একটি ল্যাবে স্বামী-স্ত্রী দু'জনে টেকনিশিয়ান হিসেবে কাজ করত। স্ত্রীর নাম শ্বেতা, স্বামীর নাম মনে নেই। তারাই আমার স্বামীকে ক্লোরোফর্ম, সিরিঞ্জ এবং পারদ এনে দিয়েছিল।"

বিদ্যা তাঁর বিবৃতিতে আরও জানান, গত ২৬ ফেব্রুয়ারি রাতে তিনি যখন ঘুমিয়ে পড়েন, পরের দিন সন্ধ্যায় তাঁর জ্ঞান ফেরে। এরপরই ডান উরুতে অসহ্য যন্ত্রণা শুরু হয়, যেন কেউ সেখানে ইনজেকশন দিয়েছে। তাঁর পা ফুলে যায়, হাঁটতেও কষ্ট হচ্ছিল। অবস্থা খারাপ হওয়ায় ৭ মার্চ তিনি আত্তিবেলে সরকারি হাসপাতালে যান। সেখান থেকে তাঁকে পাঠানো হয় অক্সফোর্ড হাসপাতালে।

অক্সফোর্ড হাসপাতালের চিকিৎসকরা পরীক্ষা করে তাঁর শরীরে পারদ বিষক্রিয়া খুঁজে পান। অস্ত্রোপচার করে যে নমুনা পরীক্ষা করা হয়, তাতেও পারদের উপস্থিতি নিশ্চিত হয়। বিদ্যা বলেন, "ঘুম ভেঙে দেখি আমার পা ফুলে আছে, হাঁটতে পারছি না। সরকারি হাসপাতালে যাওয়ার পরই ধাতব পদার্থ ধরা পড়ে।"

পুলিশকে বিদ্যা জানান, তাঁর স্বামী বসবারাজ এবং শ্বশুর মারিস্বামাচারী দু’জনে মিলেই তাঁকে হত্যার উদ্দেশ্যে শরীরে পারদ ইনজেক্ট করেছিলেন। মারা যাওয়ার আগে পুলিশকে দেওয়া বয়ানে বিদ্যা অভিযোগ করেন, স্বামী ও শ্বশুরের কাছে তাঁকে দিনের পর দিন হেনস্থা, অপমান ও অবহেলা সহ্য করতে হয়েছে। স্বামী তাঁকে বারবার ‘পাগল’ বলে ডাকতেন, ঘরের মধ্যে আটকে রাখতেন। এমনকী আত্মীয়ের বাড়িতে যেতে দিতেন না এবং নিয়মিত নির্যাতন করতেন।

জানা গিয়েছে, এই দম্পতির একটি চার বছরের সন্তান রয়েছে। এক মাসেরও বেশি সময় ধরে চিকিৎসা চলার পর বিদ্যাকে ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে স্থানান্তরিত করা হয়। সেখানকার চিকিৎসকরা জানান, বিষ তাঁর সারা শরীরে ছড়িয়ে পড়েছে, কিডনি-সহ একাধিক অঙ্গ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। তাঁকে ডায়ালিসিসে রাখা হলেও অবস্থার উন্নতি হয়নি। নয় মাস ধরে জীবনের সঙ্গে লড়ে অবশেষে এই নভেম্বর মাসে মৃত্যু হয় বিদ্যার।