আজকাল ওয়েবডেস্ক: সদ্য বিবাহিতা স্ত্রীকে খুনের পরেই প্রেমিকাকে বিশেষ বার্তা পাঠিয়েছিলেন অভিযুক্ত চিকিৎসক। ডার্মেটোলজিস্ট স্ত্রীকে খুন করার অভিযোগে গত মাসেই পেশায় চিকিৎসক স্বামীকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। খুনের রাতেই প্রেমিকাকে মেসেজে জানান, 'তোমার জন্যেই স্ত্রীকে খুন করেছি।' 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, খুনে অভিযুক্ত চিকিৎসক মহেন্দ্র রেড্ডি এক তরুণীর সঙ্গে বিবাহবহির্ভূত সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েছিলেন। এর জেরেই স্ত্রীকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ওষুধের ওভার ডোজ দিয়ে খুন করেছিলেন। এরপর প্রেমিকাকে খুনের কথা জানান। ফরেন্সিক টিম চিকিৎসকের ফোনের তথ্য খতিয়ে দেখার পর এটি জানিয়েছে। ঘাতক চিকিৎসকের প্রেমিকার পরিচয় এখনও পর্যন্ত প্রকাশ্যে আনা হয়নি। 

ইতিমধ্যেই অভিযুক্তের প্রেমিকাকে পুলিশ জিজ্ঞাসাবাদ করেছে। তাঁর বয়ান রেকর্ড করা হয়েছে। বিয়ের আগে না পরে এই প্রেমের সম্পর্ক গড়ে উঠেছিল, তাও খতিয়ে দেখছে তারা। চিকিৎসক খুনের ঘটনায় প্রেমিকার কী ভূমিকা ছিল, প্ররোচনা ছিল কিনা, তাও তদন্ত করছে পুলিশ। 

প্রসঙ্গত, মাত্র একবছর আগে বিয়ে। গত বছর মে মাসে বিয়ে হয়েছিল। অসুস্থ চিকিৎসক স্ত্রীকে বাড়িতেই নির্মমভাবে খুন করেন চিকিৎসক স্বামী। স্বামী ও স্ত্রী দুজনেই পেশায় চিকিৎসক। নিজের বাড়িতে স্ত্রীকে অ্যানেসথেসিয়ার ওভারডোজ দিয়ে খুন করেন তিনি। চিকিৎসক স্ত্রীর মৃত্যুর ছ'মাস পর গ্রেপ্তার করা হয়  চিকিৎসক স্বামীকে। 

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, খুনের ঘটনাটি ঘটেছে ২১ এপ্রিল। বেঙ্গালুরুর পূর্ব দিকের মুন্নেকোল্লাল এলাকায় ঘটনাটি ঘটে। জেনারেল সার্জন ড. মেহন্দ্র রেড্ডি নিজের বাড়িতেই চিকিৎসক স্ত্রীকে অ্যানেসথেটিক ড্রাগের ওভারডোজ দিয়ে খুন করেন। মহেন্দ্রর স্ত্রী ড. ক্রুথিকা রেড্ডি পেশায় একজন ডার্মেটোলজিস্ট ছিলেন। অ্যানেসথেসিয়া দেওয়ার পরেই তাঁর শারীরিক অবস্থার অবনতি হয়। তড়িঘড়ি করে স্বামীই স্ত্রীকে হাসপাতালে নিয়ে গিয়েছিলেন। হাসপাতালে যাওয়ার পর চিকিৎসকরা তাঁকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। 

এই ঘটনার পর মারাথাহল্লি থানায় চিকিৎসক তরুণীর রহস্যমৃত্যুর মামলা রুজু করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ। গত বছর ২৬ মে মহেন্দ্র ও ক্রুথিকা বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হয়েছিলেন। দু'জনেই পেশায় চিকিৎসক। বেঙ্গালুরুর ভিক্টোরিয়া হাসপাতালে কর্মরত ছিলেন। 

তদন্ত শুরুর পরেই ইনজেকশন টিউব, ক্যানুলা সেট, আরও কিছু মেডিক্যাল সামগ্রী উদ্ধার করে পুলিশ ফরেন্সিক টিমকে দিয়েছিল পরীক্ষার জন্য। এমনকী ময়নাতদন্তের জন্যেও তরুণীর দেহ পাঠানো হয়। কিছু নমুনা পাঠানো হয় ফরেন্সিক ল্যাবেও। পুলিশ জানিয়েছে, সেই পরীক্ষার পরেই জানা যায়, চিকিৎসক তরুণীর শরীরে প্রোফোফল নামের ক্ষতিকর অ্যানেসথেটিক ড্রাগ পাওয়া গিয়েছে। 

এরপরই ১৩ অক্টোবর তরুণীর বাবা থানায় অভিযোগ দায়ের করেন। পুলিশকে অভিযোগ করেন, অ্যানেসথেটিক ড্রাগ দিয়ে মেয়েকে জামাই খুন করেছিলেন ছয় মাস আগে। ১৪ অক্টোবর মণিপাল থেকে অভিযুক্ত চিকিৎসককে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। বর্তমানে তিনি পুলিশি হেফাজতে রয়েছেন। পুলিশ আরও জানিয়েছে, অভিযুক্ত জানান স্ত্রী আগে থেকেই অসুস্থ ছিলেন। হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পরেও চিকিৎসক স্বামী অ্যানেসথেসিয়ার বিষয়ে কিছুই জানাননি। দীর্ঘ জেরায় অবশেষে তাঁর বিবাহবহির্ভূত সম্পর্ক ফাঁস হয়‌।