আজকাল ওয়েবডেস্ক: ধর্ষণের পর গর্ভবতী ১৭ বছরের কিশোরী। মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানোর পাল্টা দাবি এক তরুণের। মানসিক চাপে শেষমেশ চরম পদক্ষেপ করলেন ওই তরুণ।‌ তিনদিন নিখোঁজ থাকার পর তাঁর দেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। পাশাপাশি শুরু হয়েছে ডিএনএ পরীক্ষার তোড়জোড়। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, রবিবার একটি ফ্ল্যাট থেকে ২৭ বছর বয়সি এক তরুণের মৃতদেহ উদ্ধার হয়েছে। ১৭ বছর বয়সি এক কিশোরীকে ধর্ষণ করার অভিযোগ উঠেছিল ওই তরুণের বিরুদ্ধে। এই ধর্ষণের পরেই অন্তঃসত্ত্বা হয়ে পড়ে ওই নির্যাতিতা কিশোরী। ধর্ষণের অভিযোগ দায়ের হতেই পলাতক ছিলেন ওই তরুণ। অবশেষে তাঁর মৃতদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। তাদের অনুমান, ধর্ষণে অভিযুক্ত তরুণ হয়তো আত্মঘাতী হয়েছেন। 

পুলিশ আরও জানিয়েছে, গত ৩১ অক্টোবর থেকে তরুণ নিখোঁজ ছিলেন। কিশোরীকে ধর্ষণের অভিযোগটি দায়ের হওয়ার পর, সেদিন সন্ধ্যায় সাড়ে সাতটা নাগাদ পরিবার, আত্মীয়স্বজন, বন্ধুবান্ধবদের একটি মেসেজ পাঠান তরুণ। সকলকেই তিনি জানান, ধর্ষণের অভিযোগটি সম্পূর্ণ মিথ্যে। তিনি কাউকে ধর্ষণ করেননি। তাঁকে পরিকল্পনামাফিক ফাঁসানো হচ্ছে। 

মেসেজে তরুণ জানান, 'কিশোরীর গর্ভবতী হওয়ার নেপথ্যে আমি দোষী নই। অভিযোগটি পুরোপুরি মিথ্যে। আমার কোনও যোগাযোগ নেই কিশোরীর সঙ্গে। আমাকে মিথ্যে অভিযোগে ফাঁসানো হচ্ছে।' তরুণের আরও অভিযোগ, 'স্কুল কর্তৃপক্ষ গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দিয়ে সুনাম অক্ষুন্ন রাখতে চাইছেন। ঘটনায় আসল দোষী ওই স্কুলের ফিজিক্যাল এডুকেশনের শিক্ষক।' কিশোরীকে ধর্ষণের ঘটনায় আসল দোষীকে পাকড়াও করার জন্য ডিএনএ পরীক্ষার আর্জিও জানিয়েছেন ওই তরুণ। 

এরপরই তরুণের মোটরবাইক, জুতো, জ্যাকেট, মোবাইল ফোন তুঙ্গা খালের পাশে থেকে উদ্ধার করে পুলিশ। দু'দিন পর সেই খাল থেকে তরুণের নিথর দেহ উদ্ধার করে উদ্ধারকারী দল। পুলিশ আধিকারিক গোপালা কৃষ্ণা জানিয়েছেন, ৩১ অক্টোবর নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়েছিল। ২ নভেম্বর তরুণের দেহ উদ্ধার করা হয়েছে। তাঁর মোবাইল ফোনটি পাওয়া গেছে। সমস্ত মেসেজ বার্তাও পুলিশের কাছে জমা আছে। দ্রুত ডিএনএ পরীক্ষা করিয়ে, প্রকৃত দোষীর পরিচয় প্রকাশ্যে আনা হবে। 

প্রসঙ্গত, দিন কয়েক আগেই বেঙ্গালুরুতে গণধর্ষণের শিকার বাংলার এক তরুণী। গণধর্ষণের পরেও শান্তি হয়নি। এরপর ওই তরুণীর বাড়ি থেকে সর্বস্ব লুটে নেওয়ার অভিযোগ উঠেছে পাঁচ অভিযুক্তের বিরুদ্ধে। তিনজনকে আটক করে জেরা শুরু করেছে পুলিশ। আরও দু'জনের খোঁজে চলছে তল্লাশি অভিযান। 

সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে কর্ণাটকের বেঙ্গালুরুতে। পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, ঘটনাটি ঘটেছে বেঙ্গালুরুর গঙ্গোন্দাহাল্লিতে। বাংলার এক তরুণীকে গণধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে পাঁচজনের বিরুদ্ধে। গণধর্ষণের পর তরুণীর বাড়ির সর্বস্ব লুটে নেওয়ার অভিযোগ রয়েছে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে। 

পুলিশ সূত্রে আরও জানা গেছে, মঙ্গলবার রাত ৯টা বেজে ১৫ মিনিট থেকে গভীর রাত পর্যন্ত গণধর্ষণ ও চুরির ঘটনাটি ঘটেছিল। ওই বাড়িতে ছ'জন বাসিন্দা ছিলেন। রাতে ওই পাঁচ যুবক দরজা ধাক্কাধাক্কি করে, তা খোলার জন্য হুমকি দেয়। এরপর রাত সাড়ে ১২টা নাগাদ নির্যাতিতার বড় ছেলে পুলিশে ফোন করে অভিযোগ জানায়। তড়িঘড়ি ঘটনাস্থলে পৌঁছয় উচ্চ পদস্থ পুলিশ কর্মকর্তারা। 

পুলিশ আধিকারিক সিকে বাবা জানিয়েছেন, গণধর্ষণের পর অভিযুক্তরা ওই বাড়ি থেকে দু'টি দামি মোবাইল ফোন এবং নগদ ২৫ হাজার টাকা চুরি করে নিয়ে গেছে। নির্যাতিতা তরুণী পশ্চিমবঙ্গের বাসিন্দা। এই এলাকায় তিনি আরও দু'জন মহিলা, দু'জন বয়স্ক ব্যক্তি ও দু'জন শিশুর সঙ্গে থাকতেন। 

পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, পাঁচ অভিযুক্ত ওই এলাকার বাসিন্দা। নির্যাতিতা তরুণী বর্তমানে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। তাঁর শারীরিক অবস্থা বর্তমানে স্থিতিশীল রয়েছে। অভিযুক্তদের সঙ্গে নির্যাতিতার পূর্ব পরিচিত ছিল কিনা, তা খতিয়ে দেখা হচ্ছে। কার্তিক, গ্লেন, সুয়োগ নামের তিন অভিযুক্তকে ইতিমধ্যেই আটক করে জিজ্ঞাসাবাদ শুরু করেছে পুলিশ। বাকি দুই অভিযুক্ত ঘটনার পর থেকে পলাতক। তাদের খোঁজে তল্লাশি অভিযান শুরু করেছে পুলিশ। গণধর্ষণ ও চুরির মামলা রুজু করে জোরকদমে তদন্ত চালাচ্ছে পুলিশ।