আবু হায়াত বিশ্বাস, আহমেদাবাদ: দেশের সংবিধান ও গণতন্ত্রকে রক্ষার জন্য পুরদমে লড়াই করবে দল। আহমেদাবাদে মঙ্গলবার কংগ্রেস ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক থেকে স্পষ্ট বার্তা কংগ্রেসের। ওয়ার্কিং কমিটিতে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলের উত্তারাধিকার নিয়ে বিজেপিকে তোপ দেগেছে হাত শিবির। একইসঙ্গে সর্দার প্যাটেলকে নিয়ে প্রস্তাব পাশও করা হয়েছে। স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর অবদান এবং পন্ডিত জওহরলাল নেহরুর সঙ্গে হৃদ্যতার বিষয়টি তুলে ধরা হয়। দুই নেতার মধ্যে সম্পর্ক নিয়ে বিজেপির প্রচারণাকে মিথ্যা প্রমাণিত করতে উঠে পড়ে লেগেছে হাত শিবির। কংগ্রেস বলছে, সর্দার প্যাটেলের জীবনী অনুসরণ করে বিভাজনকারী শক্তিকে পরাজিত করতে হবে। পাশাপাশি এই নিয়ে বিজেপির ভুয়ো খবরের কারখানা উন্মোচিত করা হবে আগামী দিনে। উল্লেখ্য,কংগ্রেস নেতা প্যাটেলকে কার্যত বিজেপি ‘হাইজ্যাক’ করে নিয়েছে। গুজরাটে এইআইসিসির অধিবেশনে প্যাটেলের উত্তারাধিকার পুনরুদ্ধারের মরিয়া চেষ্টা করছে শতাব্দী প্রাচীন দলটি।
এদিকে বিজেপি নেতা তথা কেন্দ্রীয় মন্ত্রী অর্জুনরাম মেঘওয়াল দাবি করেছেন,‘স্বাধীনতার আগে ও পরে সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে অপমান করেছে কংগ্রেস। তারা সর্বদা পণ্ডিত জওহরলাল নেহরুর মতো একই মর্যাদার অধিকারী নেতাদের উত্তরাধিকারকে অবমূল্যায়ন করার চেষ্টা করেছে। এই দলে সবচেয়ে উঁচু ব্যক্তি ছিলেন সর্দার প্যাটেল এবং ডঃ বিআর আম্বেদকর।’ মেঘওয়াল বলেন, সর্দার প্যাটেলের প্রতি অসম্মান করা কংগ্রেসের সংস্কৃতি ছিল।’ যদিও কংগ্রেস নেতারা বিজেপি নেতাদের ওই দাবিকে মানতে রাজি নয়। ওয়ার্কিং কমিটির বৈঠক শেষে দলের নেতা কে সি বেণুগোপাল ও জয়রাম রমেশ জানান, সিডব্লুসির বৈঠকে ১৫৮ জন সদস্য উপস্থিত ছিলেন। সর্দার বল্লভভাই প্যাটেলকে নিয়ে একটি প্রস্তাব পাশ হয়েছে। বুধবার এআইসিসি বৈঠকে ২ টি প্রস্তাব পাশ হবে। জাতীয় ইস্যু এবং গুজরাটের রাজনৈতিক বিষয়ে প্রস্তাব পাশ হবে। সামাজিক, রাজনৈতিক ও অর্থনৈতিক ন্যায়ের বিষয়ে কথা হয়েছে। সাংগঠনিক আলোচনাও হয়েছে।
এদিকে,প্রদেশ কংগ্রেস সভাপতি শুভঙ্কর সরকার বৈঠকে প্রস্তাব দেন, ভারত জোড়ো যাত্রার মতো এবার দেশ বাঁচাও যাত্রা করুন রাহুল গান্ধী। বেকার যুবদের স্বার্থে রেলপথে ভারত বাঁচাও যাত্রা করার আবেদন জানিয়েছেন তিনি। দেশজুড়ে যেভাবে বেকারত্ব বাড়ছে, এই বিষয়কে হাতিয়ার করে রাহুল গান্ধীকে ফের ভারত জোড়ো যাত্রায় নামার প্রস্তাব দিয়েছেন বঙ্গ প্রদেশ সভাপতি। তাঁর প্রস্তাব, এবার রেলপথে বেকার যুবদের ইস্যু নিয়ে দেশভ্রমণে বার হোন প্রাক্তন কংগ্রেস সভাপতি। সরাসরি নাম না করা হলেও ওঠে প্রাক্তন বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায় প্রসঙ্গ। সাংবাদিক সম্মেলনে অন্যতম সাধারণ সম্পাদক জয়রাম রমেশ বলেন, 'বিজেপি নেতৃত্বকে জিজ্ঞেস করলে ওরা বলে যে, গান্ধী না গডসে কাকে সমর্থন করা উচিত তা নিয়ে ভাবতে হবে। তাদের হাত থেকে তো দেশকে রক্ষা করতেই হবে।'
এদিন কর্মসমিতির বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী। যদিও কংগ্রেসের বক্তব্য, অনেক আগে থেকেই বিদেশে তাঁর কিছু ব্যক্তিগত কাজ ছিল। সভাপতির কাছ থেকে অনুমতি নিয়েই দলীয় কর্মসূচিতে অনুপস্থিত আছেন তিনি। যদিও অনুপস্থিত ব্যক্তির নাম যখন প্রিয়াঙ্কা গান্ধী, তখন স্বাভাবিক নিয়মেই উঠছে প্রশ্ন। ঠিক যেমন প্রশ্ন উঠছে কেন সর্দার প্যাটেলকে পুনরুদ্ধারের লড়াইয়ে নামতে এত সময় লেগে গেল কংগ্রেসের?
