আজকাল ওয়েবডেস্ক: আসামে ঘটে গেল এক বিস্ফোরক ঘটনা। শিবসাগর সিভিল হাসপাতালে এক ২২ বছরের অবিবাহিত যুবতী মা সদ্যোজাত সন্তানকে মাত্র ৫০,০০০ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে। এমনই চাঞ্চল্যকর অভিযোগ উঠেছে ওই মহিলার বিরুদ্ধে। ঘটনার জেরে পাঁচজনকে ইতিমধ্যে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গোটা বিষয়টি নিয়ে ইতিমধ্যেই তদন্ত শুরু হয়েছে। সূত্রের খবর, চাইল্ড ওয়েলফেয়ার কমিটি ও জেলা শিশু সুরক্ষা দপ্তরের কর্মীরা সদ্যোজাত বিক্রির খবর পেয়ে হাসপাতালে গিয়ে ওই শিশুটির মা ও তাঁর মাকে বোঝানোর চেষ্টা করেন। তাঁদের বারংবার বোঝানো হয় যাতে তাঁরা শিশুটিকে বিক্রি না করেন।

কিন্তু তাঁদের সমস্ত অনুরোধ অগ্রাহ্য করে শেষমেশ শিশুটিকে ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে বিক্রি করে দেওয়া হয়। জানা গিয়েছে, ৫০ হাজার টাকার বিনিময়ে চারাইদেউ জেলার সাপেখাতি এলাকার এক সন্তানহীন দম্পতির কাছে ওই সদ্যোজাতকে বিক্রি করে দেওয়া হয়েছিল। পুলিশ জানিয়েছে, ওই সন্তানহীন দম্পতির কাছ থেকে ইতিমধ্যেই শিশুটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। চারাইদেউ জেলার সাপেখাতি এলাকার বাসিন্দা হলেও তাঁরাও পুলিশের হাতে আটক হয়েছেন। এই ঘটনায় সাপেখাতি ও শিবসাগর—দুই জায়গা থেকেই গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৫ অভিযুক্তকে।

আরও পড়ুন: বাঁশবেড়িয়ার পর এবার কোন্নগর, কুমির আতঙ্কে গঙ্গায় স্নানই বন্ধ করে দিচ্ছেন স্থানীয় বাসিন্দারা

 

প্রাথমিক তদন্তে উঠে এসেছে, শিবসাগরের কিছু আশাকর্মীর একটি চক্র এই চোরাচালানে যুক্ত। সন্দেহ করা হচ্ছে, এই ধরণের শিশু বিক্রির ঘটনার সঙ্গে আগেও যুক্ত ছিল অভিযুক্তরা। পুলিশের এক সূত্র জানিয়েছে, ‘এই ঘটনার পেছনে একটি বড়সড় মানবপাচার চক্র কাজ করছে, যারা আগেও একাধিক শিশুকে বেআইনিভাবে বিক্রি করেছে বলে আমাদের কাছে প্রাথমিক প্রমাণ রয়েছে’। শিবসাগর জেলা শিশু সুরক্ষা দপ্তর ইতিমধ্যেই শিবসাগর থানায় একটি এফআইআর দায়ের করেছে। পুলিশ ঘটনার সঙ্গে জড়িত বাকিদের খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে এবং শিশু পাচার চক্রের মূল অভিযুক্তদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে। 

এই ঘটনার জেরে গোটা এলাকায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এবং আশাকর্মীদের ভূমিকা নিয়ে উঠছে বড় প্রশ্ন। স্থানীয় প্রশাসন ও সমাজকর্মীদের দাবি, এই ধরনের ঘটনা যেন আর না ঘটে, তার জন্য দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে প্রশাসনকে। উল্লেখ্য, গত জুন মাসে পশ্চিমবঙ্গের হুগলি জেলার চুঁচুড়া এলাকার লেনিন নগরে ইদের সকালে পরিত্যক্ত ডোবার পাশে প্লাস্টিক জড়ানো সদ্যোজাত শিশু উদ্ধারের ঘটনায় হইচই পড়ে গিয়েছিল গোটা এলাকায়। স্থানীয় বাসিন্দাদের উদ্যোগে সঙ্গে সঙ্গেই ওই শিশুকে উদ্ধার করে নিয়ে যাওয়া হয় চুঁচুড়া ইমামবাড়া সদর হাসপাতালে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে আসে চুঁচুড়া থানার পুলিশ।

ঘটনার তীব্র নিন্দা করেন হুগলির সাংসদ রচনা ব্যানার্জি। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, সোমবার ভোর রাতে পরিত্যক্ত ডোবা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দারা কান্নার আওয়াজ শুনতে পান। অনেকেই প্রথমে ভাবেন হয়ত বেড়ালের বাচ্চা ডাকছে। তবুও কৌতুহল হয়। ডোবার কাছে গিয়ে খোঁজাখুঁজি করতেই ঘাস পাতার আড়াল থেকে বেরিয়ে আসে প্লাস্টিকে মোড়া একটা কিছু। কান্নার শব্দ আসছিল ওই প্যাকেট থেকেই। প্লাস্টিক খুলতেই সদ্যোজাত কন্যা সন্তানের দেখা মেলে। স্থানীয়রা তড়িঘড়ি কন্যা সন্তানকে তুলে নিয়ে আসেন চুঁচুড়া ইমামবাড়া হাসপাতালে। ভর্তি করা হয় শিশু বিভাগে। শিশুর সুরক্ষা ও মানবিক মূল্যবোধের এই বিপর্যয়কর ঘটনা নিয়ে তদন্ত এখনও চলছে।