আজকাল ওয়েবডেস্ক: শ্রবাণ মাসে কানওয়ার যাত্রায় আবারও বিপত্তি। শিবের মাথায় জল ঢালতে গিয়ে, মন্দিরে যাওয়ার পথেই ভয়াবহ দুর্ঘটনার কবলে কানওয়ার যাত্রী বোঝাই বাস। দুর্ঘটনায় প্রাণ গেল একাধিক পুণ্যার্থীর। আহত হয়েছেন আরও একাধিক পুণ্যার্থী। তাঁদের মধ্যে কারও কারও শারীরিক অবস্থা আশঙ্কাজনক। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারার সম্ভাবনা রয়েছে।
জানা গেছে, নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পুণ্যার্থী বোঝাই বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সজোরে সংঘর্ষ হয়। এর জেরেই দুমড়ে মুচড়ে যায় যাত্রী বোঝাই বাসটি। ঘটনাস্থলেই ১৮ পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। আহত হয়েছেন আরও একাধিক পুণ্যার্থী। ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনাটি ঘিরে ব্যাপক শোরগোল ছড়িয়েছে এলাকায়। সাময়িকভাবে ওই এলাকায় যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সূত্রে জানা গেছে, মঙ্গলবার সকালে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে ঝাড়খণ্ডের দেওঘর জেলায়। পুলিশ জানিয়েছে, দুর্ঘটনাটি ঘটে মোহনপুর থানা এলাকার জামুনিয়া চক গ্রামে। শ্রাবণী মেলা উপলক্ষে প্রতি বছর বাবা বৈদ্যনাথ ধাম মন্দিরে হাজার হাজার পুণ্যার্থীর ভিড় জমে। শ্রাবণ মাসের প্রতি সোমবার শিবের মাথায় জল ঢালতে আসেন পুণ্যার্থীরা।
জানা গেছে, জামুনিয়া নদীর ধারেই শিব ও পার্বতীর মন্দির রয়েছে। সেই মন্দিরের কাছেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে পুণ্যার্থীদের বাসটি। বাবা বৈদ্যনাথ ধাম মন্দিরে পুজো দিতে যাচ্ছিলেন পুণ্যার্থীরা। সেই মন্দিরেই শিবের মাথায় জল ঢালতে যাচ্ছিলেন সকলে। মঙ্গলবার দেওঘরের ওই মন্দিরে যাওয়ার পরেই দুর্ঘটনার কবলে পড়ে তাঁদের বাসটি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, বাসটিতে ৩৫ জন পুণ্যার্থী ছিলেন। ট্রাকে এলপিজি সিলিন্ডার বোঝাই করা ছিল। নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে সেই বাস ও ট্রাকের মুখোমুখি সজোরে ধাক্কা লাগে। পুরোপুরি দুমড়ে মুচড়ে যায় বাসটি। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাসেই আটকে পড়েন পুণ্যার্থীরা। দুর্ঘটনার পর বিকট শব্দ শুনে স্থানীয়রা ছুটে আসেন তড়িঘড়ি। দ্রুত শুরু হয় উদ্ধারকাজ।
দুর্ঘটনার খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে তড়িঘড়ি ছুটে আসে বিশাল পুলিশ বাহিনী, অ্যাম্বুল্যান্স, রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর টিম। দ্রুত পুণ্যার্থীদের উদ্ধার করে প্রথমে স্থানীয় স্বাস্থ্য কেন্দ্রে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখান থেকে দেওঘর সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। ১৮ জন পুণ্যার্থীকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকরা। বাকি ১০ জন গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন। মৃতদেহগুলি ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে।
পুলিশ জানিয়েছে, প্রাথমিকভাবে তদন্ত শুরু হয়েছে। কীভাবে বাস ও ট্রাক চালকেরা একসঙ্গে নিয়ন্ত্রণ হারালেন, তাও খতিয়ে দেখা হবে। দুর্ঘটনাগ্রস্ত বাস ও ট্রাকের টুকরোগুলি সরানোর কাজ চলছে। দুর্ঘটনার জায়গাটি পরিদর্শন করে হাসপাতালে আহতদের দেখতে যান পুলিশ আধিকারিক, জেলা শাসক।
দুর্ঘটনার পরেই দেওঘরের সাংসদ নিশিকান্ত দুবে এক্স হ্যান্ডেলে পোস্ট করেন। তিনি লিখেছেন, 'দেওঘরে, আমার সাংসদীয় এলাকায়, শ্রাবণ মাসের কানওয়ার যাত্রায় ১৮ জন পুণ্যার্থীর মৃত্যু হয়েছে। বাস ও ট্রাকের সংঘর্ষে দুর্ঘটনাটি ঘটেছে। মৃতদের পরিবারের সদস্যদের এই শোক সহ্য করার ক্ষমতা দিক বাবা বৈদ্যনাথ জি।' দুর্ঘটনার মামলা রুজু করেছে পুলিশ। তদন্ত ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। শ্রাবণী মেলা চলাকালীন এই দুর্ঘটনা ঘিরে পুণ্যার্থীদের মধ্যেও চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে।
