আজকাল ওয়েবডেস্ক: বয়স ২৯। ইতিমধ্যেই একাধিকবার চেষ্টা করেছেন সন্তানধারণের। কিন্তু সাফল্য আসেনি। শেষ পর্যন্ত দু-দু’বার চেষ্টা করেছেন কৃত্রিম উপায়ে অর্থাৎ আইভিএফ পদ্ধতিতে মা হওয়ার। কিন্তু সফল হয়নি সেই চেষ্টাও। নেপথ্যে বিরল এক সমস্যা। অ্যালার্জি। তাও যে সে। জিনিসে নয়। সঙ্গীর বীর্যে। আর এই অ্যালার্জির কারণেই মা হতে পারছেন না তিনি।
আরও পড়ুন: ১২ কেজির বিশাল স্তন! ফিট হয় না কোনও জামা! কেন এমন হল? তরুণীর কষ্ট শুনলে চোখে জল আসবে
লিথুয়ানিয়ার বাসিন্দা এই মহিলার বিরল সমস্যার কথা প্রকাশিত হয়েছে একটি মেডিক্যাল জার্নালে। শুধু বীর্য নয়, বিভিন্ন জিনিসেই অ্যালার্জি রয়েছে তাঁর। প্রথমে তাঁর হাঁপানি ধরা পড়ে। বাড়ির ফাঙ্গাস, বিড়ালের লোম এবং ধুলোবালি নাকে গেলেই শ্বাসকষ্ট হত তাঁর। সেই থেকেই তাঁর সন্দেহ হয় যে এর নেপথ্যে কোনও গভীরতর সমস্যা থাকতে পারে। সেই মতো পরীক্ষা করে দেখা যায় তাঁর শরীরে উচ্চমাত্রায় ইয়োসিনোফিল নামের রক্তকণিকা রয়েছে। ইয়োসিনোফিল এক ধরনের শ্বেতকণিকা। এটি বাহ্যিক অ্যালার্জি সৃষ্টিকারী জীবাণু থেকে শরীরকে রক্ষা করে। কিন্তু শরীরে এটির পরিমাণ বেশি হয়ে গেলেই দেখা দেয় সমস্যা। অল্পেই শরীরে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এক্ষেত্রেও তেমনটাই হয়েছে। পরীক্ষায় দেখা যায় আগের জিনিসগুলির পাশাপাশি তুলোর পোকা, ফুলের রেণু, কুকুর এবং বিভিন্ন ধরনের কুকুরেও অ্যালার্জি রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: ১২ কেজির বিশাল স্তন! ফিট হয় না কোনও জামা! কেন এমন হল? তরুণীর কষ্ট শুনলে চোখে জল আসবে
কিন্তু এর পরেই যে তথ্যটি পাওয়া যায় তাতেই চোখ কপালে ওঠে চিকিৎসকদের। দেখা যায় তরুণীর দেহে ‘ক্যান এফ ৫’ নামের একটি বিশেষ প্রোটিনের প্রতি অ্যালার্জি রয়েছে। আর এই প্রোটিনের প্রতি অ্যালার্জির কারণেই মানুষের বীর্যে অ্যালার্জি রয়েছে তাঁর।
তরুণী জানান, সঙ্গীর সঙ্গে সঙ্গম করলেই নাক বন্ধ হয়ে যায় তাঁর। এরপর শুরু হয় হাঁচি। বিষয়টি জানতে পেরে তাঁর সঙ্গীর বীর্য পরীক্ষা করেন চিকিৎসকরা। তাতেই স্পষ্ট হয় যে সঙ্গীর বীর্যে অ্যালার্জি রয়েছে তাঁর।
আরও পড়ুন: ১২ কেজির বিশাল স্তন! ফিট হয় না কোনও জামা! কেন এমন হল? তরুণীর কষ্ট শুনলে চোখে জল আসবে
ক্লিভল্যান্ড ক্লিনিকের তথ্য অনুযায়ী, বীর্যে অ্যালার্জির বিষয়টিকে সেমিনাল প্লাজমা হাইপার সেনসিটিভিটি না এসপিএইচ বলা হয়। চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন এই অ্যালার্জি এতই মারাত্মক হতে পারে যে আক্রান্ত ব্যক্তির দেখে পুড়ে যাওয়ার মতো জ্বালা, চুলকানি, লাল ভাব, যোনি ফুলে যাওয়া, দম আটকে আসা এবং মাথা ঘোরার মতো সমস্যা দেখা দিতে পারে। ক্ষেত্র বিশেষে কনডোম ব্যবহারের ফলে কিছুটা আটকানো যেতে পারে প্রতিক্রিয়া। কিন্তু এক্ষেত্রে যেহেতু তাঁরা সন্তানলাভের চেষ্টা করছিলেন তাই সেটা সম্ভব হয়নি।
এই সমস্যায় সাধারণত বন্ধ্যাত্ব দেখা যায় না। তবে সমস্যা তৈরি হতেই পারে। অত্যাধুনিক পদ্ধতিতে চিকিৎসা করানো গেলে সন্তানধারণ সম্ভব কিন্তু লিথুয়ানিয়াতে সেই সুবিধা নেই। ফলে তিন বছর চেষ্টার পরেও মা হতে পারেননি মহিলা। চিকিৎসকরা জানিয়েছেন বিষয়টি এতই বিরল যে ১৯৬৭ সালে এই রোগটি আবিষ্কারের পর থেকে মাত্র ১০০ জন মহিলার দেহে এখনও পর্যন্ত এই রোগ দেখা গিয়েছে।