বলিউড ও ওটিটি দুনিয়ার পরিচিত মুখ রাধিকা আপ্তে। তাঁর বলিষ্ঠ অভিনয় এবং সোজাসাপ্টা কথা বলার ভঙ্গি অনুরাগীদের বরাবরই পছন্দের। তবে সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে নিজের কেরিয়ারের শুরুর দিনগুলোর এক তিক্ত অভিজ্ঞতার কথা ভাগ করে নিয়েছেন তিনি। দক্ষিণ ভারতীয় ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করার সময় তাঁকে যে ধরণের যৌন বৈষম্য এবং হেনস্থার শিকার হতে হয়েছিল, তা মনে করে আজও তিনি শিউরে ওঠেন। রাধিকা একে ‘ট্রমাটিক’ বা অত্যন্ত যন্ত্রণাদায়ক বলে অভিহিত করেছেন।

 


রাধিকা জানান, ২০০০ সালের শেষের দিকে যখন তিনি নিজের পায়ের তলার মাটি শক্ত করার চেষ্টা করছিলেন, তখন আর্থিক অনটনের কারণে বেশ কিছু দক্ষিণ ভারতীয় ছবিতে কাজ করতে রাজি হন। কিন্তু সেই সব সিনেমার সেটে কাজের পরিবেশ ছিল অত্যন্ত অস্বস্তিকর। একটি বিশেষ ঘটনার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, একবার একটি মফস্বল শহরে শুটিং চলছিল। পুরো ইউনিটে তিনিই ছিলেন একমাত্র মহিলা। তাঁর কোনও নিজস্ব ম্যানেজার বা সহকারী রাখার অনুমতি ছিল না। নির্মাতারা তাঁকে সরাসরি জানিয়েছিলেন যে তাঁকে পুরুষ টিমের সঙ্গেই কাজ করতে হবে।

 


সবচেয়ে লজ্জাজনক বিষয়টি ছিল রাধিকার শারীরিক গঠন নিয়ে সেটের লোকজনের কাটাছেঁড়া। রাধিকা স্মৃতিচারণ করে বলেন, "সেটের লোকজন আমাকে আমার নিতম্ব এবং স্তনে বাড়তি প্যাডিং ব্যবহার করতে বলত। তারা হাসাহাসি করে বলত— আম্মা, আরও প্যাডিং লাগাও! আমি অবাক হয়ে ভাবতাম আমার চেহারা কি যথেষ্ট সুন্দর নয়?" 

 

রাধিকা জানান, সেখানে পুরুষ কর্মীরা নিয়মিত মহিলাদের নিয়ে কুরুচিকর মন্তব্য করত এবং অভিনেত্রীদের কেবল ভোগ্যপণ্য হিসেবে দেখা হতো। বর্তমানে সফলতার শিখরে পৌঁছেও রাধিকা সেই দিনগুলো ভুলতে পারেন না। তিনি বলেন, "সেই পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ ছিল যে আজও ভাবলে আমার কান্না পায়। আমি চাই না কোনও মেয়েকে যেন এমন পরিস্থিতির মধ্য দিয়ে যেতে হয়।"  

 


তিনি আরও ক্ষোভ উগরে দিয়ে বলেন যে, বর্তমানে ইন্ডাস্ট্রিতে অনেক প্রভাবশালী মহিলারাও রয়েছেন যাঁরা চাইলে এই সংস্কৃতির বদল ঘটাতে পারতেন, কিন্তু তারা চুপ থাকতেই পছন্দ করেন। রাধিকার জানান, এই নীরবতা অত্যন্ত হতাশাজনক। অভিনেত্রী আরও জানান, নিজের শরীরের গঠন নিয়ে ছোটবেলা থেকেই হীনমন্যতায় ভুগতেন রাধিকা। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি বুঝতে পেরেছেন যে সৌন্দর্যের কোনও নির্দিষ্ট মাপকাঠি হয় না।