আজকাল ওয়েবডেস্ক: পেটব্যথা থেকে শুরু হয়, ধীরে ধীরে সেই ব্যথাই ক্রমে অসহ্য হয়ে যায়। দেখা দেয় জন্ডিস, দ্রুত কমতে থাকে ওজন। চিকিৎসায় সামান্য ভুল হলেই মারাত্মক পরিণতি অপেক্ষা করে রোগীর জন্য। এমনই ভয়াবহ এক রোগ নিয়ে জনগণকে সতর্ক করলেন সুইজারল্যান্ডের একদল চিকিৎসক। 

রোগের নেপথ্যে রয়েছে এক পরজীবী। নাম - একাইনোকক্কাস মাল্টিলোকিউলারিস, চলতি ভাষায় একে বলে ফক্স টেপওয়ার্ম। এটি এক প্রকারের ছোট কৃমি। এই কৃমি মূলত শেয়াল এবং অন্যান্য কুকুর জাতীয় প্রাণীদের ক্ষুদ্রান্ত্রে বাস করে। শেয়াল বা অন্যান্য কুকুর জাতীয় প্রাণীদের অন্ত্রে পূর্ণাঙ্গ কৃমি ডিম পাড়ে। এই ডিম মলের মাধ্যমে পরিবেশে ছড়ায়। ছোট ইঁদুর বা ভোঁদড় জাতীয় প্রাণী যখন সেই মল মিশ্রিত দূষিত খাবার খায়, বা মাটি থেকে কৃমির ডিম কোনও ভাবে তাদের শরীরে প্রবেশ করে, তখন তাদের যকৃৎ, ফুসফুস বা অন্যান্য অঙ্গে লার্ভা তৈরি হয়। ঠিক একই ভাবে কৃমির ডিম মানুষের দেহে ঢুকে গেলে (দূষিত ফল, সবজি বা পোষা প্রাণীর লোম থেকে) মানুষের দেহেও লার্ভা তৈরি হতে পারে। 

মানুষের দেহে ফক্স টেপওয়ার্মের লার্ভা অ্যালভিওলার ইকিনোকোকোসিস নামক একটি রোগ সৃষ্টি করতে পারে। এই রোগে ধীরে ধীরে যকৃৎ বা লিভার ক্ষতিগ্রস্ত হয়। লিভারে টিউমারের মতো লার্ভার বাসা তৈরি হয়। সময়মতো চিকিৎসা না করালে এটি মারাত্মক হতে পারে।

আগে ফক্স টেপওয়ার্ম মূলত উত্তর গোলার্ধে সাইবেরিয়া এবং ইউরোপের কিছু প্রত্যন্ত এলাকায় দেখা যেত। কিন্তু এখন মধ্য ও উত্তর ইউরোপ, এশিয়া এবং উত্তর আমেরিকার কিছু অংশেও এই রোগ দেখা দেখা যাচ্ছে। আর তাতেই কপালে চিন্তার ভাঁজ চিকিৎসকদের। প্রসঙ্গত, ২০২১ সালে থাইল্যান্ডের এক ব্যক্তির পায়ু থেকে ৫৯ ফুট লম্বা একটি টেপ ওয়ার্ম বা ফিতাকৃমি বার করা হয়। তাই সময় মতো চিকিৎসা খুবই জরুরি।