আজকাল ওয়েবডেস্ক: অতিরিক্ত ঠান্ডা পানীয় পানের অভ্যাস যে কতটা ভয়াবহ হতে পারে, তার এক জলজ্যান্ত উদাহরণ মিলল ব্রাজিলে। সম্প্রতি ব্রাজিলের মিনাস জেরাইস রাজ্যের কাপিনোপোলিস হাসপাতালে এক ৬০ বছর বয়সি রোগীর মূত্রাশয় থেকে অস্ত্রোপচার করে বার করা হল ৩৫টি বিশালাকার পাথর। গোটা ঘটনায় রীতিমতো হতবাক চিকিৎসকরাও। তাঁদের দাবি, এর নেপথ্যে রয়েছে রোগীর একটি বদ-অভ্যাস। প্রতিদিন প্রায় তিন লিটার কোকাকোলা পান করতেন রোগী। আর তার থেকেই এই পাথরের উৎপত্তি।
ব্যতিক্রমী এই অস্ত্রোপচারের একটি ভিডিও ভাইরাল হয়েছে নেটমাধ্যমে। ভিডিওটি তুলেছিলেন ওই হাসপাতালেরই ইউরোলজিস্ট ডা. থালেস ফ্রাঙ্কো দি অ্যান্ড্রাদে। তিনি নিজের ইনস্টাগ্রামে ভিডিওটি পোস্ট করার পরেই সেটি সামাজিক মাধ্যমে আলোড়ন সৃষ্টি করে। ইতিমধ্যেই ভিডিওটি দেখেছেন ৮০ লক্ষেরও বেশি নেটিজেন।
হাসপাতাল সূত্রে খবর, গত ৩০ এপ্রিল প্রায় দু’ঘণ্টা ধরে এই জটিল অস্ত্রোপচার করেন শল্যচিকিৎসকদের একটি দল। রোগীর মূত্রাশয় থেকে প্রায় ৬০০ গ্রাম ওজনের ৩৫টি ক্যালসিয়াম অক্সালেট-ফসফেট পাথর বার করা হয়। সফল অস্ত্রোপচারের পর রোগী সম্পূর্ণ সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরে গেলেও ডা. অ্যান্ড্রাদে তাঁর পোস্টে স্পষ্টভাবে লিখেছেন, “জল কম খাওয়া, প্রস্রাবের অম্লতা বৃদ্ধি এবং মূত্রে ক্যালসিয়াম-অক্সালেটের পরিমাণ বেড়ে যাওয়া, এই তিনটি বিষয় মূত্রাশয়ে পাথর তৈরির ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে তোলে।”
একই কথা বলছে হার্ভার্ডের গবেষণাও। কোলা-জাতীয় পানীয়ের মধ্যে থাকে ফসফরিক অ্যাসিড। এটি প্রস্রাবকে অতিরিক্ত অম্ল করে তোলে, যা পাথর জমার আশঙ্কা বাড়ায়। পাশাপাশি ঠান্ডা পানীয়তে অতিরিক্ত চিনি থাকে। এই অতিরিক্ত চিনি শরীরের ক্যালসিয়াম বিপাক প্রক্রিয়াকে ব্যাহত করে এবং প্রস্রাবে খনিজের ঘনত্ব বাড়িয়ে দেয়। আর সবশেষে যে উপাদানটির উল্লেখ করতে হয়, সেটি হল ক্যাফেইন। অতিরিক্ত ক্যাফেইন শরীরে প্রবেশ করলে ডিহাইড্রেশন বা জলশূন্যতা দেখা দেয়। এই তিনের সম্মিলিত প্রভাবে মূত্রাশয় বা কিডনিতে সহজেই পাথর জমতে পারে।
