আজকাল ওয়েবডেস্ক: আজ, ২৮ সেপ্টেম্বর, বিশ্ব রেটিনা দিবস। দিনভর কম্পিউটার বা স্মার্টফোনের পর্দার দিকে তাকিয়ে থাকা আর অনিয়ন্ত্রিত জীবনযাপন- এই দুইয়ের যাঁতাকলে পড়ে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে আমাদের চোখ, বিশেষত রেটিনা। সহজ ভাষায়, রেটিনা হল চোখের সেই অংশ, যা বাইরের জগৎ থেকে আলো গ্রহণ করে মস্তিষ্কে সংকেত পাঠায় এবং আমাদের দেখতে সাহায্য করে। তাই এর সুস্থতা ছাড়া দৃষ্টিশক্তি ধরে রাখা অসম্ভব।

ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি থেকে শুরু করে ম্যাকুলার ডিজেনারেশন বা বয়সজনিত চোখের সমস্যা, সামান্য অবহেলার মাসুল হতে পারে চির অন্ধত্ব। তাই এই বিশেষ দিনে বিশেষজ্ঞরা রেটিনার যত্ন নেওয়ার জন্য কয়েকটি জরুরি পরামর্শ দিচ্ছেন, যা রোজকার জীবনে মেনে চলা উচিত।

কীভাবে নেবেন রেটিনার যত্ন?
বিশেষজ্ঞদের মতে, কয়েকটি সহজ অভ্যাসই পারে আপনার চোখকে সুরক্ষিত রাখতে।
১। স্বাস্থ্যকর খাদ্যাভ্যাস: রেটিনার স্বাস্থ্য রক্ষায় কিছু পুষ্টি উপাদান অপরিহার্য। ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড (তৈলাক্ত মাছ), লুটেইন ও জিয়াজ্যানথিন (পালং, ব্রকোলির মতো সবুজ শাকসব্জি), ভিটামিন সি (লেবু, পেয়ারা), ভিটামিন ই (বাদাম) এবং জিঙ্ক (বিনস, ডাল) রোজকার খাদ্যতালিকায় রাখুন। গাজর বা মিষ্টি আলুর মতো ভিটামিন এ সমৃদ্ধ খাবারও চোখের জন্য উপকারী।
২। স্ক্রিন ব্যবহারে সতর্কতা: দীর্ঘক্ষণ স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকলে ‘ডিজিটাল আই স্ট্রেন’ হয়, যা রেটিনার উপর চাপ সৃষ্টি করে। চিকিৎসকরা ‘২০-২০-২০’ নিয়ম মেনে চলার পরামর্শ দেন। অর্থাৎ, প্রতি ২০ মিনিট অন্তর স্ক্রিন থেকে চোখ সরিয়ে ২০ ফুট দূরের কোনও বস্তুর দিকে ২০ সেকেন্ড তাকিয়ে থাকুন। প্রয়োজনে অ্যান্টি-গ্লেয়ার বা ব্লু-কাট লেন্সযুক্ত চশমা ব্যবহার করুন।
৩। রোদচশমার ব্যবহার: সূর্যের ক্ষতিকর অতিবেগুনি রশ্মি রেটিনার কোষের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। তাই রোদে বেরোলে এমন রোদচশমা ব্যবহার করুন যা, অতিবেগুনি রশ্মিকে আটকাতে সক্ষম।
৪। ধূমপান ত্যাগ: ধূমপান সরাসরি রেটিনার রক্তনালীগুলিকে ক্ষতিগ্রস্ত করে এবং ম্যাকুলার ডিজেনারেশনের ঝুঁকি বহুগুণ বাড়িয়ে দেয়। সুস্থ দৃষ্টি চাইলে ধূমপানের অভ্যাস আজই ত্যাগ করা উচিত।
৫। রক্তচাপ ও শর্করার নিয়ন্ত্রণ: উচ্চ রক্তচাপ এবং ডায়াবেটিস রেটিনার দুই প্রধান শত্রু। ডায়াবেটিসের কারণে ‘ডায়াবেটিক রেটিনোপ্যাথি’ হতে পারে, যা অন্ধত্বের অন্যতম প্রধান কারণ। তাই নিয়মিত শরীরচর্চা, নিয়ন্ত্রিত খাদ্যাভ্যাস এবং চিকিৎসকের পরামর্শ মেনে রক্তচাপ ও রক্তে শর্করার মাত্রা নিয়ন্ত্রণে রাখা আবশ্যক।

আরও পড়ুন: স্ত্রীর পিঠ জিভ দিয়ে চেটে দেয় পুরুষ, স্ত্রী যদি পাল্টা লেহন করে, তবেই হয় মিলন! পৃথিবীর একমাত্র জীবিত ড্রাগন এরাই
সবশেষে মনে রাখা প্রয়োজন, চোখের যে কোনও সমস্যাকেই গুরুত্ব দিয়ে দেখা উচিত। শুধু সমস্যা হলেই নয়, বছরে অন্তত এক বার চক্ষু বিশেষজ্ঞের কাছে গিয়ে চোখ পরীক্ষা করানো অত্যন্ত জরুরি, বিশেষত যাঁদের বয়স চল্লিশের বেশি বা পরিবারে চোখের রোগের ইতিহাস রয়েছে।