Female anaconda eat male anaconda after physical intimacy
মিলনের পরই ভয়ঙ্কর পরিণতি! গিলে খেয়ে নেয় পুরুষ সঙ্গীকে, গর্ভের সন্তানকে বাঁচাতে স্ত্রী-র এমন কাণ্ড শুনেছেন?
নিজস্ব সংবাদদাতা
৮ নভেম্বর ২০২৫ ১২ : ২৯
শেয়ার করুন
1
8
প্রকৃতির কিছু নিজস্ব নিয়ম মাঝে মাঝে ভয় ধরিয়ে দেয় মানুষকেও। কখনও কখনও এমনই নজিরবিহীন ঘটনা সামনে আসে যা আমাদের যুক্তিবোধকে যেন অবাক করে দেয়। দক্ষিণ আমেরিকার ঘন অরণ্যে বসবাসকারী সবুজ অ্যানাকোন্ডা তার অন্যতম উদাহরণ। এই সাপ বিশ্বের সবচেয়ে ভারী ও দীর্ঘ সাপগুলোর মধ্যে একটি। কিন্তু যা সবচেয়ে বেশি বিস্ময়কর, তা হল মিলনের পর স্ত্রী অ্যানাকোন্ডা প্রায়ই নিজের সঙ্গী, অর্থাৎ পুরুষ অ্যানাকোন্ডাকেই খেয়ে ফেলে!
2
8
বিজ্ঞানীদের ভাষায়, এই আচরণকে বলে ‘সেক্সুয়াল ক্যানিবালিজম’ অর্থাৎ সঙ্গমের পর সঙ্গীকে খেয়ে ফেলা। এমন প্রবণতা পৃথিবীর আরও কিছু প্রাণীর মধ্যেও দেখা যায়, যেমন প্রেয়িং ম্যান্টিস, কিছু মাকড়সা বা মাছের প্রজাতিতে। তবে অ্যানাকোন্ডার ক্ষেত্রে বিষয়টি বিশেষভাবে গুরুত্বপূর্ণ কারণ এটি সরাসরি তাদের বেঁচে থাকা ও প্রজননের সঙ্গে যুক্ত।
3
8
স্ত্রী অ্যানাকোন্ডা পুরুষদের তুলনায় অনেক বড় ও শক্তিশালী হয়। তাদের দৈর্ঘ্য প্রায় ২৫ থেকে ৩০ ফুট পর্যন্ত হতে পারে, ওজনও কয়েকশো কিলোগ্রাম পর্যন্ত পৌঁছায়। অন্যদিকে, পুরুষ অ্যানাকোন্ডা তুলনামূলক ছোট ও দুর্বল।
4
8
প্রজনন মরশুমে একাধিক পুরুষ একসঙ্গে একটি স্ত্রী সাপকে ঘিরে ফেলে, যাকে বিজ্ঞানীরা বলেন ‘ব্রিডিং বল’। এই সময় কয়েক ঘণ্টা বা কখনও কয়েক দিন ধরে চলতে পারে মিলনের প্রক্রিয়া।
5
8
কিন্তু মিলনের পরই দেখা যায় প্রকৃতির সেই নির্মম দৃশ্য। স্ত্রী সাপ এক বা একাধিক পুরুষ অ্যানাকোন্ডাকে গিলে ফেলে। বিজ্ঞানীদের মতে, এর কারণ সম্পূর্ণ জৈবিক।
6
8
স্ত্রী অ্যানাকোন্ডার গর্ভধারণের সময়কাল প্রায় সাত মাস, আর এই সময়ে তারা খুবই কম নড়াচড়া করে, প্রায় উপবাস অবস্থায় থাকে। শিকার করা বা চলাফেরা প্রায় অসম্ভব হয়ে পড়ে। তাই নিজের শরীরে পর্যাপ্ত পুষ্টি ও শক্তি সঞ্চয়ের জন্য মিলনের পর পুরুষ সাপকেই শিকার করে স্ত্রী অ্যানাকোন্ডা।
7
8
পুরুষ অ্যানাকোন্ডার দেহে থাকা প্রোটিন, চর্বি ও খনিজ উপাদানই স্ত্রী সাপের শক্তির প্রধান উৎস হয়ে ওঠে, যা তাকে গর্ভকালীন সাত মাস টিকে থাকতে সাহায্য করে এবং সুস্থ বাচ্চা জন্ম দিতে সক্ষম করে। এক অর্থে, এটি প্রকৃতির এমন এক কৌশল যেখানে বাঁচাতে আরেক জীবন উৎসর্গ হয়।
8
8
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই প্রক্রিয়াটি প্রকৃতির ভারসাম্য রক্ষারও অংশ। এতে পুরুষের সংখ্যা কিছুটা কমে গিয়ে প্রজাতির নিয়ন্ত্রণ থাকে, আবার স্ত্রী সাপ পর্যাপ্ত শক্তি পেয়ে নতুন প্রাণ সৃষ্টিতে সক্ষম হয়। সংক্ষেপে বলা ভাল, এটি নিষ্ঠুর হলেও প্রকৃতির বুদ্ধিদীপ্ত পরিকল্পনা, যেখানে জন্ম, মৃত্যু আর টিকে থাকার মধ্যে গড়ে ওঠে এক ভয়ঙ্কর অথচ নিখুঁত ভারসাম্য।