ভারতের অগণিত দর্শকের কাছে অমিতাভ বচ্চন শুধু এক অভিনেতা নন। তিনি একপ্রকার অনুভূতি। কিন্তু অভিনেতা জয়দীপ আহলাওয়াতের কাছে অমিতাভ ছিলেন আরও এক ধাপ ওপরে -শৈশবের এক সাংস্কৃতিক রীতি!  জয়দীপের গ্রামে কোনও শিশুর জন্ম হলে মিষ্টি বিলি বা পাড়াপড়শির ভিড়ে উৎসবের রং নয়, প্রথমে বাজত ‘দিওয়ার, জঞ্জীর আর ডন’। আর সেই স্মৃতি শুনেই কেবিসি-র মঞ্চে বিস্মিত হলেন খোদ অমিতাভ বচ্চন।

 

জয়দীপ বলেন, “আমাদের গ্রামে কোনও বাচ্চা জন্মালেই আপনার সিনেমা চালিয়ে উদযাপন করা হত। দিওয়ার, জঞ্জীর, ডন -সব! এই কারণে আমি এই প্রত্যেকটা ছবি  একশবারেরও বেশি দেখেছি।” শুধু সিনেমা নয়, গ্রামের উৎসবের তালিকাতেও চিরজীবী ছিল বিগ বি। শোলের অডিও ক্যাসেট ছিল গ্রামবাসীর ‘ফেস্টিভ্যাল সাউন্ডট্র্যাক’। “হোলি, দিওয়ালি, ঈদ...সব উৎসবে আমরা শোলে-র পুরো অডিও একসঙ্গে বসে শুনতাম,” বললেন অভিনেতা।

 

এদিন মঞ্চে ছিলেন মনোজ বাজপেয়ী এবং শরিব হাশমিও। 'ফ্যামিলি ম্যান ৩'-এর প্রচারে। আর মনোজ শোনালেন এমন এক গল্প, যার স্মৃতি তিনি আজও ভুলতে পারেন না। ১৯৯৮-এ ‘সাট্যা’ স্ক্রিনিংয়ের সময় এক সাংবাদিকের ‘মজা’ করার ফলে অমিতাভের মুখোমুখি হয়ে যান তিনি, যদিও তাঁর পরিকল্পনা ছিল ঠিক উল্টোটাই। “সাংবাদিক আমাকে গাড়ির বাইরে নামিয়ে ভেতর থেকে লক করে দিলেন। আমি তো ভয়ে সোজা বাথরুমে ঢুকে দরজা বন্ধ করে দিলাম,” হেসে বললেন মনোজ।

 

কিছুক্ষণ পর বাইরে বেরিয়ে দেখেন অভিষেক বচ্চন তাঁকে দেখে দাঁড়িয়ে আছেন। আর তারপরই ইতিহাস। “হঠাৎই সামনে এলেন উঁচু–লম্বা এক মানুষ...অমিতাভ বচ্চন। আমার চারপাশের শব্দ থেমে গেল। তখন আমার মাথা পুরো ফাঁকা।” মনোজ বললেন, “তিনি আমার হাত ধরলেন। আমি কাঁপছিলাম। তারপর সাহস জমিয়ে বললাম, স্যার, আপনাকে… আমি কি… জড়িয়ে ধরতে পারি?” অমিতাভ হাসলেন, ‘হ্যাঁ’। আর সেই আলিঙ্গন মনোজের জীবনের অন্যতম সেরা মুহূর্ত হয়ে রইল।

 

‘ফ্যামিলি ম্যান ৩’-এর নতুন সিজনে শ্রীকান্ত তিওয়ারির (মনোজ বাজপেয়ী) জীবন আরও জটিল। দেশের সংকট ও পরিবারের দায়িত্বের মাঝে দোলাচল। তাঁর সঙ্গী জেকে তলপাড়ে (শরিব হাশমি) আগের মতোই মিশ্রণে হাসি আর তাজা বুদ্ধি যোগ করবে। এই সিজনে নতুন ভিলেন রুকমার চরিত্রে দেখা যাবে জয়দীপ আহলাওয়াতকে।

'উত্তেজনা, রহস্য আর আবেগ নিয়ে ২১ নভেম্বর থেকে প্রাইম ভিডিও-তে শুরু হচ্ছে ‘ফ্যামিলি ম্যান ৩’।