বলিউডের চিরসবুজ নায়িকা রেখা আজ ৭১-এ পা দিলেন। বয়স যেন তাঁর কাছে কেবল একটি সংখ্যা, আজও যখন রূপোলি পর্দায় কিংবা কোনও পুরস্কার মঞ্চে তাঁকে দেখা যায়, চোখ ফেরানো দায়। তবে যতটা আলোচনায় তাঁর রূপ ও স্টাইল, ততটাই আলোচনায় থেকেছে তাঁর ব্যক্তিগত জীবন, বিশেষত তাঁর সিঁথিতে রাঙানো লাল সিঁদুর।

প্রতিবারই যখন রেখা প্রকাশ্যে আসেন, তাঁর কপালে ঝলমল করে গাঢ় লাল সিঁদুর,যা বহু বছর ধরে তাঁর একান্ত পরিচয়চিহ্ন হয়ে উঠেছে। কিন্তু এই সিঁদুরের গল্পটা শুরু আজকের দিনে নয়। ১৯৮০ সালে ঋষি কাপুর ও নীতু সিংয়ের বিয়েতে প্রথমবার দেখা যায় রেখাকে সিঁদুর পরা অবস্থায়। অবিবাহিত রেখার কপালে সেই সিঁদুর দেখে স্তম্ভিত হয়েছিলেন উপস্থিত অতিথিরা। তাঁদের মধ্যে ছিলেন অমিতাভ বচ্চন ও জয়া বচ্চনও। সংবাদমাধ্যমে তখন রটতে শুরু করে নানা জল্পনা। এ প্রসঙ্গে প্রশ্নের মুখে পড়লে রেখা হেসে বলেছিলেন, “একটা শুটিং করছিলাম, ভুলে সিঁদুরটা মুছে ফেলিনি।” কিন্তু তারপর? তারপর আর কখনও তিনি সেই সিঁদুর মুছে ফেলেননি।

১৯৮২ সালে 'উমরাও জান' ছবির জন্য জাতীয় পুরস্কার পান রেখা। রাষ্ট্রপতি নীলম সঞ্জীবা রেড্ডিও কৌতূহলী হয়ে জানতে চান, “আপনি তো অবিবাহিতা, তাহলে সিঁথিতে সিঁদুর কেন?” রেখার সেই উত্তর প্রায় প্রবাদবাক্যে পরিণত হয়ে গিয়েছে - “আমার শহরে এটা ফ্যাশন!”

১৯৯০ সালে দিল্লির শিল্পপতি মুখেশ আগরওয়ালকে বিয়ে করেন রেখা। কিন্তু বিয়ের কয়েক মাসের মধ্যেই মুকেশ আত্মহত্যা করেন,যা রেখার জীবনের সবচেয়ে বিতর্কিত অধ্যায় হয়ে ওঠে। তারপরও রেখা কখনও সিঁদুর পরা বন্ধ করেননি। কেউ বলেন, এ যেন তাঁর প্রয়াত স্বামীর প্রতি শ্রদ্ধা। কেউ আবার বলেন, এই সিঁদুর আসলে অমিতাভ বচ্চনের প্রতি তাঁর নীরব ভালবাসার প্রতীক, যা নিয়ে রটনা আজও থামেনি।

রেখা নিজে অবশ্য চুপ। হয়তো সেই নীরবতাই তাঁর আসল স্টাইল-রহস্য, রূপ, আর এক অনন্ত ভালবাসার ছায়া মিশে আছে তাতে।

 

প্রসঙ্গত, বলিউডের কিংবদন্তি অভিনেত্রী রেখার ঝকঝকে কেরিয়ারে যেমন সাফল্যের ঝলক, তেমনই আছে সম্পর্কের জটিলতা আর বিতর্কের অন্ধকার ছায়া। জয়া বচ্চন বা হেমা মালিনীর সঙ্গে রেখার সম্পর্ক নিয়ে বহু বছর ধরেই সরগরম ফিল্মপাড়া। তবে এবার আরও এক বর্ষীয়ান অভিনেত্রীর অরুণা ইরানির মুখে উঠল রাখঢাকহীন অভিযোগ। সম্প্রতি, দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে অরুণা ইরানি জানান, রেখা একসময় তাঁর ঘনিষ্ঠ বান্ধবী হলেও, পরে ইচ্ছাকৃতভাবে তাঁকে একটি ছবির কাজ থেকে বাদ দেওয়ান। এমনকী, একটি ছবির জন্য চুক্তি স্বাক্ষরের পর অগ্রিম পারিশ্রমিক পাওয়ার পরও, প্রযোজকের তরফে জানানো হয়, “রেখা চাইছেন না আপনি ছবিতে থাকুন।"ঘটনাটি ঘটেছিল 'মঙ্গলসূত্র' নামের একটি ছবিকে ঘিরে। অরুণা বলেন, “আমি যখন রেখাকে সরাসরি জিজ্ঞেস করেছিলাম, তখন ও স্বীকার করেছিল যে যদি আমি ওই আবেগঘন চরিত্রটা ভাল করে অভিনয় করি, তাহলে নাকি ওর চরিত্রটা নেতিবাচক মনে হতে পারত দর্শকের কাছে।”